যশোরের হামিদপুরে আ’লীগ সভাপতির উপস্থিতিতে পিতা-পুত্রের ওপর হামলা

0

 

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর সদর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের হামিদপুরে নিলামে ক্রয় করা জমির মালিক দাবিদার পিতা পুত্রের ওপর হামলা হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির উপস্থিতিতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় গ্রামবাসী ছুটে আসলে তিনি লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। হামলায় আহত এবিএম জাফরিকে (৩৮) বিকেলে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামিদপুর গ্রামের মো. আসাদুজ্জামানের পুত্র এবিএম জাফরি। আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, সোমবার  দুপুর ১২টার দিকে পুত্রকে নিয়ে তিনি নিলামে ক্রয় করা জমিতে কলাগাছ রোপণ করছিলেন। এ সময় যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন ঘটনাস্থলে আসেন। ৩টি মোটরসাইকেল ও তার জীপে ১০/১২ জন অপরিচিত লোক ছিল। সাথে ছিল একটি শর্টগান।
আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে পৌঁছে শহিদুল ইসলাম মিলনের উপস্থিতিতে তারা ওই কলাগাছ কেটে দেয় এবং আসাদুজ্জামান (৬৮) ও পুত্র এবিএম। জাফরিকে মারধর করে। শর্টগান দিয়ে এবিএম জাফরির কপালে আঘাত করলে তিনি আহত হন। এ সংবাদ শুনে হামিদপুর গ্রামের নারী ও পুরুষ ছুটে আসেন। তারা আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুল ইসলাম মিলনকে ঘিরে ধরেন। অবস্থা বেগতিক দেখে শহিদুল ইসলাম লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরে যশোর কোতয়ালী থানায় সংবাদ পৌঁছুলে ওসি মো. তাজুল ইসলাম ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং আহত এবিএম জাফরিকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এবিএম জাফরির স্বজনরা জানিয়েছেন, স্থানীয় নারীরা নাকি শহিদুল ইসলাম মিলনের পাঞ্জাবি ছিঁড়ে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে ওসি তাজুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জামা ছিঁড়ে দেয়ার কথা না বললেও ঘটনাস্থলে শহিদুল ইসলামের উপস্থিতির কথা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, সভাপতি সাহেবের হামিদপুরে জমি দেখতে যান তখন লোকজনের সাথে তার তর্ক-বিতর্ক হয়। ক্রয় সূত্রে জমির মালিক দাবিদার আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, নুরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি তার ১০ বিঘা জমি শিল্প ব্যাংকে বন্ধক রেখে লোন নেন। ওই লোন পরিশোধ করতে না পারায় জমি নিলামে বিক্রি করে দেয় শিল্প ব্যাংক। ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে আসাদুজ্জামান নিলামের আইন মেনে ওই জমি ক্রয় করেন। ১৯৯১-৯২ সালে জমি ক্রয় করার পর থেকে তিনি ভোগদখল করে আসছেন। এখন নিলাম ডাকে অংশগ্রহণকারী ২য় ব্যক্তি আব্দুস সবুর ওই জমির জন্যে আদালতে মামলা দায়ের করেন। শহিদুল ইসলাম মিলন তার আত্মীয় পরিচয়ে আব্দুস সবুরের পক্ষ নিয়ে জমি দখলে বাঁধা দেয়ার জন্য ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছুলে তার উপস্থিতিতে লোকজন আসাদুজ্জামান ও এবিএম জাফরিকে মারপিট করে। তবে, শহিদুল ইসলাম মিলনের পক্ষের লোকজন জানিয়েছেন, তার জামা কেউ ছিঁড়ে দেয়নি।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। সেখানে কী হয়েছে তাও জানি না।