স্বাধীনতার ৫১ বছরে এসে মুক্তিযুদ্ধের স্বীকৃতি চান ভ্যান চালক মোতাহার মাতুব্বর

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্বাধীনতার ৫১ বছর পর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি চান যশোর শহরের চোরমারা দিঘীরপাড় এলাকার বাসিন্দা ভ্যান চালক মোতাহার মাতুব্বর। বুধবার প্রেসক্লাব যশোরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে আমি মুক্তিযুদ্ধের ৭ নং সেক্টরে বাবুর্চির দায়িত্বপালন করা সত্ত্বেও আজও পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারিনি। যাচাই-বাছাই কমিটির ২৯ নং তালিকায় থাকার পরও অজ্ঞাত কারণে আমাকে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে না।
সংবাদ সম্মেলনে মোতাহার মাতুব্বর বলেন, জন্মগতভাবে তিনি দিনাজপুর জেলার চাউলিয়া পট্টি এলাকার সন্তান। পরবর্তীতে চৌগাছা পুড়াপাড়া এলাকায় বসবাস করেন। তার পিতা মৃত শফি মাতুব্বর ও মাতা মালেকা বেগম। ১৯৭৭ সাল থেকে তিনি যশোর শহরের চোরমারা দিঘীরপাড়ে ভাড়া বাসায় থেকে শহরে ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার যুদ্ধের সময় মুক্তিযুদ্ধের ৭ নং সেক্টরে বাবুর্চি হিসেবে মুক্তিযোদ্ধাদের রান্না করে খাওয়াতাম। এসময় দিনাজপুর জেলার চকেরহাট, খানপুর, রামসাগর, শিকারহাট, পুলের হাট এলাকায় রান্নার কাজের ফাকে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে যুদ্ধে অংশও নেন। এসময় মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বার, মোহাম্মাদ আলী, মোহাম্মাদ মোখলেছুর রহমানসহ আরও অনেকের সাথে আমি যুদ্ধে অংশ নিই। কিন্তু আজও পর্যন্ত আমি মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় আমার নাম উঠাতে পারিনি।
তিনি বলেন, সরকার মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করার পর আমি আমার দালিলিক প্রমাণ নিয়ে আবেদন করলে দীর্ঘ তদন্ত শেষে আমাকে দিনাজপুর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটি আমাকে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে চিহ্নিত করে। সেই হিসেবে তালিকায় ২৯ নং-এ আমার নামও রাখা হয়। অথচ এখনো পর্যন্ত আমাকে তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি। বর্তমান আমি একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হওয়া সত্ত্বেও এই যশোর শহরে ভ্যান চালিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, দেশের অনেক স্বচ্ছল, বিত্তবান মুক্তিযোদ্ধারা যদি সরকারের সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন। তাহলে আমার মতো হতদরিদ্র , অসহায় লেখাপড়া নাজানা ভ্যানচালক সে সুবিধা থেকে কেনো বঞ্চিত হবো। তাই জীবনের এই শেষ সময়ে এসে আমি আমার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি চাই। এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।