মণিরামপুরে বিসিআইসি ডিলারের ভারতে পাড়ি

0

স্টাফ রিপোর্টার,মণিরামপুর(যশোর)॥ যশোরের মণিরামপুর পৌরশহরের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী রতন কুমার পাল পরিবারসহ গতবছর ভারতে পাড়ি জমিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। অভিযোগ রয়েছে বাংলাদেশে তার নামে থাকা বিসিআইসির লাইসেন্সের বিপরীতে প্রতিমাসে বরাদ্দকৃত সারসহ কৃষিপণ্য উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে। কৃষি বিভাগের উপসহকারী কৃষি অফিসার সঞ্জয় কুমার দাস ও রতন পালের প্রতিনিধি হাবিবুর রহমান জোগসাজসে প্রতিমাসে রতনপালের নামে বরাদ্দকৃত লাখ লাখ টাকার সারসহ কৃষিপণ্য উত্তোলন করছেন। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে জেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। ফলে বিষয়টি তদন্তের জন্য বৃহস্পতিবার উপজেলা কৃষি অফিসারের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানা যায়, পৌরশহরের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী রতন কুমার পাল স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে পরিবার পরিজন নিয়ে গত বছরের ৮ নভেম্বর ভারতে পাড়ি জমিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছেন। তার নামে ছিল বিসিআইসির ডিলারশিপের লাইসেন্স(মেসার্স রতন কুমার পাল) । সরকারের নিয়ম রয়েছে কোন লাইসেন্সধারী স্থায়ীভাবে দেশ ত্যাগ করলে তার নামের লাইসেন্স বাতিল বলে গণ্য হবে। এছাড়া সার ডিলার নিয়োগ ও বিতরণ সম্বলিত নীতিমালা-২০০৯ এর ধারা ৮ মোতাবেক ওই লাইন্সেসের বিপরীতে মালামাল উত্তোলন করা আইন বহির্ভূত। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে গত বছর নভেম্বর মাসে মেসার্স রতন পালের স্বত্বাধিকারী রতন পাল পরিবার পরিজন নিয়ে ভারতে পাড়ি জমালেও ডিসেম্বর মাস থেকে তার নামে উপসহকারী কৃষি অফিসার সঞ্জয় কুমার দাস ও হাবিবুর রহমান জোগসাজসে নিয়মিতভাবে বরাদ্দকৃত সারসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য উত্তোলনের পর বিক্রি করে আসছেন ।
মণিরামপুর পৌরশহরের জুড়ানপুর এলাকায় উপসহকারী কৃষি অফিসার সঞ্জয় কুমার দাসের শ্বশুর বাড়ি হওয়ার সুবাদে এলাকায় রয়েছে তার বেশ প্রভাব। ফলে হাবিবের সাথে জোগসাজসে সঞ্জয় এ ধরনের অপকর্মে সহযোগিতা করে আসছিলেন। অভিযোগ রয়েছে জানুয়ারি মাসেও ৯৫ মে.টন সার উত্তোলন করা হয়েছে। এমনকি চলতি ফেব্রুয়ারি মাসেও বরাদ্দ করা হয়েছে ৩১ মে.টন সার। এ বিষয়টি নিয়ে অন্যান্য ডিলারদের মধ্যে কানাঘুষা শুরু হলে নিজেকে রক্ষা করতে উপসহকারী কৃষি অফিসার সঞ্জয় কুমার দাস তড়িঘড়ি করে উচ্চ পর্যায়ে তদ্বির করিয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি বাঘারপাড়া উপজেলায় বদলি হন। তবে রতন পালের নামে বরাদ্দকৃত সার উত্তোলনের ঘটনায় জড়িত থাকার দায় অস্বীকার করে উপসহকারী কৃষি অফিসার সঞ্জয় কুমার দাস জানান, মেসার্স রতন পালের প্রতিনিধি হাবিবুর রহমান রতন কুমার পালের স্বাক্ষরিত কাগজপত্র জমা দিয়ে মালামাল উত্তোলন করে থকেন। অন্যদিকে হাবিবুর রহমান জানান, তিনি বৈধভাবে রতন পালের প্রতিনিধি হিসেবে প্রায় সাতবছর ধরে সার উত্তোলন করে আসছেন। তিনি এ ব্যাপারে কোনপ্রকার অনিয়ম করেন নি বলে দাবি করেন। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে এলাকার আবুল কাশেম নামে একব্যক্তি জেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন।উপজেলা কৃষি অফিসার শাহীন ইসলাম জানান, তিনি মণিরামপুরে সদ্য যোগদান(আড়াইমাস) করায় বিষয়টি জানতে পারেন নি।লিখিত অভিযোগ পেয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভায় উপজেলা কৃষি অফিসার শাহীন ইসলামকে প্রধান করে ছয় সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে।