ভাসমান সবজি চাষ স্বাবলম্বী করেছে কর্মহীন জেলেদের

0

জয়দেব চক্রবর্ত্তী, কেশবপুর (যশোর)॥ যশোরের কেশবপুর উপজেলার মধ্যকুল রাজবংশিপাড়া এলাকায় হরিহর নদের বুকে ভাসমান বেডে সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন কর্মহীন হয়ে পড়া মৎস্যজীবী কয়েক পরিবার। শেওলায় আবদ্ধ নদে মাছ ধরতে ব্যর্থ হয়ে এখন তারা সেখানেই ভাসমান সবজি চাষ করছেন।
উপজেলার মধ্যকুল উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা অনাথ বন্ধু দাস জানান, হরিহর নদ শেওলায় পরিপূর্ণ হয়ে রয়েছে। এ কারণে নদের তীরবর্তী মধ্যকুল রাজবংশিপাড়ার জেলেরা মাছ ধরতে না পেরে কর্মহীন হয়ে পড়েন। এ সময় হরিহর নদের শেওলাকে কাজে লাগিয়ে সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যে উপজেলা কৃষি বিভাগ একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। কৃষি বিভাগ ভাসমান বেডে সবজি চাষের ওপর মধ্যকুল রাজবংশিপাড়ার শতাধিক কৃষক-কৃষাণিকে প্রশিক্ষণ দেয়।
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কৃষকরা নদের শেওলা প্রথমে স্তুপ করে রাখেন। শেওলা পচে বেড তৈরি হলে তার উপর দেওয়া হয় ভার্মি কম্পোস্ট। এরপর সবজির বীজ বপণ করা হয়। প্রতিজন কৃষক ৩৬ টি ধাপ তৈরি করে তার ওপর সবজি চাষ করেছেন। পযার্য়ক্রমে আরো সবজি বেড তৈরি করার প্রস্তুতি চলছে।
শেওলা দিয়ে তৈরি ওই ধাপে চাষ করা হয়েছে লাল শাক, সবুজ শাক, পুইশাক, ডাটাশাক , পালংশাক, মিষ্টি কুমড়া, কচুশাক, পেঁয়াজ, রসুন এবং তার উপর মাচা করে লাউ ও চাল কুমড়ার চাষ করা হয়েছে। তাদের সবজি ক্ষেত পরিচর্যা করার করার জন্য ২টি ডোঙ্গা নৌকা দিয়েছে কৃষি বিভাগ।
কৃষক নীল রতন বিশ্বাস জানান, সংসারের প্রয়োজন মিটিয়েও অতিরিক্ত সবজি বাজারে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।
মধ্যকুল রাজবংশিপাড়ার পারুল বিশ্বাস জানান, তিনি ওই নদে তিনটি ভাসমান বেড করেছেন। যার ওপর লালশাক, সবুজশাক, পুইশাক, ডাটাশাক এবং ভাসমান বেডের ওপর মাচা করে লাউ ও চাল কুমড়ার চাষ করা হয়েছে। এতে তিনি সংসারের প্রয়োজন মিটিয়ে অতিরিক্ত সবজি বাজারে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার বলেন, যাদের কৃষি জমি নেই তারা এই পদ্ধতিতে সবজি আবাদ করলে লাভবান হবেন। কোন প্রকার কীটনাশক প্রয়োগ ছাড়াই তারা বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করছেন। মধ্যকুল রাজবংশিপাড়ায় হরিহর নদের বুকে সবজি আবাদের লক্ষ্যে উপজেলা কৃষি বিভাগ ভাসমান বেডে সবজি ও মশলা চাষ গবেষণা, সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয়করণ শীর্ষক একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।