সন্তান বদলের অভিযোগে চিকিৎসকসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

0

 

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সন্তান বদলের অভিযোগ এনে যশোর আদ-দ্বীন সখিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. শীলা পোদ্দারসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে বুধবার আদালতে মামলা করেছেন শাহাজালাল সরদার নামে এক ব্যক্তি। তিনি সদর উপজেলার বাগডাঙ্গা গ্রামের আশরাফুল ইসলামের ছেলে। যশোরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মঞ্জুরুল ইসলাম তার অভিযোগের তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিআইডি পুলিশকে আদেশ দিয়েছেন।
অভিযুক্ত অপর দুজন হলেন শহরের রেল রোডের আদ-দ্বীন সখিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আয়া শহর বানু ও স্টাফ নার্স সুমি।
বাদি শাহজালাল সরদার মামলায় উল্লেখ করেছেন, তার স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার (২০) গর্ভধারণের পর থেকে ডা. হাবিবা সিদ্দিকী ফোয়ারার তত্ত্বাবধায়নে নিয়মিত চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন। সন্তান প্রসবের পূর্বে চার বার তার আল্ট্রাসনো করা হয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে। এছাড়া গর্ভধারণের পর থেকে চিকিৎসা গ্রহণকালে বাচ্চা ও তার মায়ের কোনো সমস্যা ছিলো না বলে নিশ্চিত করেন ডা. হাবিবা সিদ্দিকী ফোয়ারা। ৩৮ সপ্তাহ পর যন্ত্রণা শুরু হলে গত ৫ জানুয়ারি সুরাইয়া আক্তারকে আদ-দ্বীন সখিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ডা. শীলা পোদ্দারের তত্ত্বাবধায়নে তার চিকিৎসা শুরু করা হয়। এ সময় ডা. শীলা পোদ্দার সিজার করতে হবে বলে মতামত দিলে এতে সম্মত হন শাহজালাল সরদার ও তার স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার। এরপর একইদিন দুপুরের সিজারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করানোর জন্য জন্য সুরাইয়া আক্তারকে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে ঢোকানো হয়। প্রায় এক ঘন্টা পর হাসপাতালের স্টাফ নার্স সুমি অপারেশন থিয়েটার থেকে বেরিয়ে একটি বাচ্চা আয়া শহর বানুর হাতে তুলে দেন। সেই সাথে সুমি তাকে একথা বলেন যে,‘ তোমার কথামত কাজ সম্পন্ন হয়েছে’। পরে আয়া শহর বানু বাইরে অপেক্ষারত অন্য লোকজনের হাতে বাচ্চাটি তুলে দিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এ ঘটনার ২০ মিনিট পর নার্স সুমি আরেকটি বাচ্চা অপারেশন থিয়েটারের বাইরে এনে বাদি শাহজালাল সরদারের হাতে তুলে দেন। তখন তাকে শাহজালাল সরদারকে বলা হয়, বাচ্চাটি গুরুতর অসুস্থ। তাকে দ্রুত জরুরি বিভাগে নিয়ে চিকিৎসা দিতে হবে। এরপর শাহজালাল সরদার বাচ্চাটির চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে থাকেন। দুই দিন পর তার সন্দেহ হয়, অপারেশন থিয়েটার থেকেই তার বাচ্চা বদল করে দেয়া হয়েছে। শাহজালাল সরদার ও স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার সন্দেহ করছেন, নার্স সুমি ও আয়া শহর বানু পরস্পর যোগসাজসে বদল করে তার বাচ্চাকে ঝিকরগাছার গদখালীর শিল্পী নামে এক নারীর হাতে তুলে দিয়েছেন। আর অন্যের প্রতিবন্ধী বাচ্চা দেয়া হয়েছে শাহজালাল সরদারকে। এ কারণে বাচ্চার ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আদালতে আবেদন জানিয়েছেন শাহজালাল সরদার।
যোগাযোগ করা হলে শাহজালাল সরদারের অভিযোগ বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন ডা. শীলা পোদ্দার। তিনি বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। শিশুটি জন্ম গ্রহণের ১৫ দিন পর ওই দম্পতি চিকিৎসা নিতে তার কাছে এলে তিনি অর্থপেডিক চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। সেই সময়ও তার কাছে এ ধরনের কোনো অভিযোগ করেনি ওই দম্পতি।