ব্যয় বাড়লো বিআরটিএতে, ঝিনাইদহে যানবাহন মালিকদের অসন্তুষ্টি

0

আসিফ কাজল, ঝিনাইদহ॥ ঝিনাইদহের স্কুল শিক্ষক আনিছুর রহমান এসেছিলেন শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং (লার্নার) লাইসেন্স করতে। অফিসে এসে দেখেন শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি বৃদ্ধি হয়ে ৫২৫ টাকার স্থলে হয়েছে ৭৭৯ টাকা। বৃদ্ধি পেয়েছে ২৫৪ টাকা। ট্রাকের মালিক মিজানুর রহমান মালিকানা বদলির জন্য এসে দেখেন ১০ হাজার ২৩৫ টাকার বদলি ফি বৃদ্ধি হয়ে দাড়িয়েছে ২১ হাজার ৩৮৫ টাকায়। বৃদ্ধি পেয়েছে ১১ হাজার ১৫০ টাকা। শুধু স্কুল শিক্ষক আনিছ বা ট্রাক মালিক মিজান নয়, ঝিনাইদহের এমন শ’ শ’ মানুষের কাঁধে চেপে বসেছে বিআরটিএর ফি’র বোঝা। সকল ধরনের ফি বৃদ্ধির কারণে ঝিনাইদহ বিআরটিও অফিসে এসে মানুষ হা-হুতাশ করছেন। তবে ঝিনাইদহ বিআরটিএ’র কর্মকর্তারা বলছেন, ফি বৃদ্ধির কারণে রাজস্ব আয়ে কোন ঘাটতি হবে না। যানবাহন মালিকদের আর্থিক সচ্ছলতার বিষয়টি মাথায় রেখেই বিশেষজ্ঞ কমিটি এই ফি নির্ধারণ করেছেন।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) মানুষকে ৫৩ ধরণের সেবা দিয়ে থাকে। এর মধ্যে ৫১টি সেবার মূল্য বা ফি ব্যাপকহারে বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে ব্যক্তিগত যানবাহন মালিকদের যেমন ব্যয় বাড়বে তেমনি ভাড়ায় চালিত যানবাহনের খরচও বাড়বে। এমনিতেই গ্যাস, বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন খাতে ব্যায় বৃদ্ধি করা হয়েছে। এরমধ্যে ব্যায়ের বোঝা চাপলো যানবাহনেও। ফলে মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
এদিকে ঝিনাইদহের পরিবহন মালিকরা বলছেন, সরকার সড়ক মহাসড়কে অবৈধ যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। ফলে বাস ও ট্রাক ব্যবসায় ধস নেমেছে। ট্রাকের পরিবর্তে মানুষ নছিমন করিমন ও আলমসাধু গাড়ির দিকে ঝুকছে। বাসে না চড়ে যাত্রীরা ইজিবাইকে যাচ্ছে দূর দূরান্তে। শহরে ইজিবাইক, অটোরিক্সা ও থ্রি-হুইলার দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। সড়ক মহাসড়ক ছাড়াও শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ১০ ধরণের অবৈধ যানবাহন। ফলে বাস ও ট্রাক ভাড়ায় ভাটা পড়েছে। এর মধ্যে বিআরটিএ’র ফি যানবাহন মালিকদের কাছে “গোঁদের উপর বিষফোঁড়া” হয়ে দেখা দিয়েছে। অনলাইনে ঝিনাইদহ বিআরটিএতে কাজ করেন এমন ব্যক্তিরা জানান, আগে ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি ছিল ২ হাজার ৫৪২ টাকা বৃদ্ধি হয়ে দাড়িয়েছে ৪ হাজার ৪৯৭ টাকায়। পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি ছিল এক হাজার ৬৭৯ টাকা। হয়েছে দুই ৭৭২ টাকা। ফিটনেস ছিল ১৬০৫ টাকা হয়েছে ২৬৯৭ টাকা। মোটরসাইকেল মালিকানা ফি ছিল ২৯৬৪ টাকা বৃদ্ধি হয়ে দাড়িয়েছে ৪৮৮০ টাকা। ১০০ সিসি পর্যন্ত মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন ফি ছিল ৮ হাজার ৮২৯ করা হয়েছে ১০ হাজার ৪৪১ টাকা। ১০১ থেকে ১৫০ সিসি পর্যন্ত রেজিষ্ট্রেশন ফি ছিল ১০ হাজার ১৫২। বৃদ্ধি হয়ে দাড়িয়েছে ১১ হাজার ৯৯৬ টাকায়। শুধু মোটরসাইকেল ও অসমর্থ ব্যক্তির উপযোগী মোটরযানের নিবন্ধন ফি তেমন বাড়েনি। ঝিনাইদহ বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক আতিয়ার রহমান বিষয়টি নিয়ে জানান, সরকার প্রদত্ত ফি কেবল বিআরটিএ আদায় করে। মুল্য ঠিক করে দেয় অর্থ মন্ত্রনালয়। তিনি বলেন, যানবাহন মালিকদের আর্থিক বিষয়টি বিবেচনা করেই বিশেষজ্ঞ কমিটি এই ফি বা সেবার মুল্য নির্ধারণ করেছেন। আশা করা যায় ফি বৃদ্ধির কারণে কোন সমস্যা হবে না।