কারামুক্ত মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাস

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ এক মাস পর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। সোমবার সন্ধ্যা ৫টা ৫০ মিনিটে কারাগার থেকে তারা বের হয়ে আসেন বলে নিশ্চিত করেছেন যুবদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক কামাল আনোয়ার আহমেদ। তিনি জানান, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসের মুক্তির অপেক্ষায় দুপুর থেকেই নেতাকর্মীরা কারাগারের গেইটে অপেক্ষা করছিলেন। সন্ধ্যায় যখন এই দুই শীর্ষ নেতা বের হয়ে আসেন তখন কারাগারের বাইরে অপেক্ষমান বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী তাদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন।
তাদের আইনজীবী জাকির হোসেন জুয়েল বলেন, হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আদেশ আজ ( সোমবার) সিএমএম আদালতের জুডিসিয়াল মুন্সিখানায় এলে আমরা জামিননামা দাখিল করি। এ জামিননামা কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার পৌঁছালে তা যাচাই-বাছাই করে তাদের কারামুক্তি দেওয়া হয়। গত ৮ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে ছয় মাসের জামিন দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ বহাল রাখেন।
একই সঙ্গে হাইকোর্টে জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল আগামী ৩০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের করা জামিন বাতিলের আবেদনটিও নিষ্পত্তি করেন আদালত। এর আগে গত ৩ জানুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। একই সঙ্গে কেন তাদের স্থায়ী জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে চার সপ্তাহের রুলও জারি করেন আদালত। এরপর আসামিদের জামিন স্থগিত চেয়ে গত বুধবার (৪ জানুয়ারি) সকালে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওইদিনই আবেদনের শুনানি নিয়ে চেম্বার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। আপিল বিভাগে শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসামিপক্ষকে নিম্ন আদালতে জামিননামা দাখিল না করতে বলা হয়।
গত ৮ ডিসেম্বর দিনগত রাতে নিজ বাসা থেকে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে আটক করে ডিবি পুলিশ। পরদিন ৯ ডিসেম্বর পুলিশের ওপর হামলার পরিকল্পনা ও উসকানি দেওয়ার অভিযোগে পল্টন থানায় করা মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে তোলা হয়। এসময় মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জামিন আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে ফখরুল-আব্বাসকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। সেদিন থেকে কারাগারে ছিলেন তারা। গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের স্থান নির্ধারণ নিয়ে উৎকণ্ঠা-উত্তেজনার মধ্যে ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে জমায়েত হওয়া দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে একজনের মৃত্যু ও শতাধিক লোক আহত হন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতরে অভিযান চালায় পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতাসহ কয়েকশ নেতাকর্মীকে। পরদিন অর্থাৎ ৮ ডিসেম্বর রাতে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। ৯ ডিসেম্বর পুলিশের ওপর হামলা ও উসকানি দেওয়ার মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। তাদের পক্ষে জামিন আবেদন করা হলেও নিম্ন আদালত কয়েক দফায় তা নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।