বাইরের এক জন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে কেশবপুরে আ.লীগের প্রকৃত নেতা-কর্মীরা লাঞ্ছিত হচ্ছে

0

 

স্টাফ রিপোর্টার ॥ উপ-নির্বাচনে উপজেলার বাইরের একজন ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই কেশবপুর (যশোর-৬ আসন) আওয়ামী লীগের প্রকৃত নেতা-কর্মীদের লাঞ্ছিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের একাংশ ও মুক্তিযোদ্ধারা। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেশবপুর উপজেলা কমান্ডের ব্যানারে রবিবার দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করা হয়।
কেশবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী রফিকুল ইসলামকে প্রাণনাশের হুমকি ও মুক্তিযোদ্ধাদের মা-বোন তুলে গালিগালাজের প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, কেশবপুর সংসদীয় আসনে উপ-নির্বাচনের পরপরই একশ্রেণীর সন্ত্রাসী লুটেরাদের দ্বারা দলের নিবেদীত নেতা-কর্মী, আওয়ামী ঘরানার মানুষ, বয়স্ক মুক্তিযোদ্ধারা অপমানিত-লাঞ্ছিত হয়ে আসছেন। ইউনিয়ন বা ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠনের সময় মুক্তিযোদ্ধা বা তাদের পরিবারের সদস্যদের অবহেলা, কমিটিতে না রাখার প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। সর্বশেষ এসব সন্ত্রাসীদের টার্গেটে তিনি নিজেই পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ডিসেম্বরের এক তারিখ দুপুরে নিজ কার্যালয় থেকে বের হয়ে গাড়িতে উঠার সময় সন্ত্র্রাসী আলমগীর সিদ্দিকি টিটো ২০/২৫ জন সন্ত্রাসীসহ আমার উপর আক্রমণ করে এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মা-বোন তুলে গালিগালাজ ও অশালীন কথা বলে। আমার এবং আমার সন্তানদের প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। এসময় আমার আর্তচিৎকারে কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম এম আরাফাত হোসেন ঘটনাস্থলে এসে সন্ত্রাসীদেরকে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে বের করে দেন এবং আমার জীবন রক্ষা করেন।
ঘটনার দিন আমি কেশবপুর থানায় উপস্থিত হয়ে সন্ত্রাসী আলমগীর সিদ্দিকী টিটু, জামাল, মাসুদ, মাহবুবসহ কয়েক জনের নাম উল্লেখ করে একটি সাধারণ ডায়েরি করি। যার নম্বর-৩৬/০১.১২.২০২২। একই দিন সন্ধ্যার আগে ও পরে ৩০/৩৫ টি মোটরসাইকেল নিয়ে টিটো ও তার সন্ত্রাসী সহযোগীরা থানার গেটের সামনে ও কেশবপুর বাজারে অকথ্য ভাষায় মুক্তিযোদ্ধাদের এবং তার পরিবারের সদস্যদের হুমকি ধামকি দিয়ে মহড়া দেয় বলে প্রবীণ রাজনীতিক রফিকুল ইসলাম জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত কেশবপুর উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও মজিদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মাদ আলী বলেন, কেশবপুরে এখন প্রকৃত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উপেক্ষিত, অবহেলিত। বিগত উপনির্বাচনে উপজেলার বাইরের লোক এমপি হওয়ার পর থেকেই একের পর এক নেতাকর্মীরা হামলা-মামলার শিকার হচ্ছেন।
ওই নির্বাচনী বিজয়ী সংসদ সদস্যকে ইঙ্গিত করে এ আওয়ামী লীগ নেতা আরও বলেন, তার ছত্রছায়ায় থেকে কেশবপুর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম মোড়ল ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী প্রতিনিয়ত এসব অপকর্ম চালাচ্ছে। একশ্রেণীর সুবিধাভোগীদের দলে সুযোগ করে দিয়ে বয়স্ক, সম্মানীয় ব্যক্তিদের অপমানিত, লাঞ্ছিত করা হচ্ছে। সর্বশেষ যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী রফিকুল ইসলামকে গালিগালাজ করার ঘটনা তার নিকৃষ্ট উদাহরণ বলে তিনি দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মুজাহারুল ইসলাম মন্টু, জাসদের কেন্দ্রীয় কার্যকরী সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. রবিউল আলম, মো. গোলাম মোস্তফা, মো. গোলাম রসুল, ইজাহার আলী খোকন, শেখ আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুল খালেক, নূরুল ইসলাম খোকন প্রমুখ।