পিতা করেছিলেন নিখোঁজ জিডি,নতুন বউসহ উদ্ধার হলেন ছেলে!

0

 

মীর মঈন হোসেন মুসা ॥ বিশেষ বাহিনীতে কর্মরত ইসহাক জামান বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয়েছেন মর্মে যশোর কোতয়ালি থানায় জিডি করেছিলেন পিতা নুরুজ্জামান। ছেলের মোবাইল ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়ায় তিনি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন। শেষমেষ ওই জিডি’র সূত্র ধরে নিখোঁজ ইসহাক জামানের সন্ধানে নামে যশোরের ডিবি পুলিশ। এক পর্যায়ে তার সন্ধান পায় সংস্থাটি। তবে, তার সন্ধান মেলে নতুন শ্বশুরবাড়িতে। গোপনে নতুন বিয়ে করে সেখানে তিনি আনন্দময় জীবন উপভোগ করছিলেন। ডিবি পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে নতুন বউসহ তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।
ইসহাক জামানের নিখোঁজ হওয়ার রহস্য এবং কীভাবে তাকে নতুন বউসহ উদ্ধার হলো সেদিনকার সেই অভিযান সম্পর্কে ডিবি পুলিশের এসআই মফিজুল ইসলাম বলেন, ইসহাক জামানের বাড়ি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার হোমেরজান গ্রামে। যশোরে বিশেষ বাহিনীতে তিনি চাকরি করতেন। কর্মস্থল থেকে ১২ দিনের ছুটি নিয়ে ২০২০ সালের ২৩ জুলাই তিনি বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন। কিন্তু রওনা হওয়ার পর তার মোবাইল ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন পরিবারের লোকজন। ছেলের কোনো সন্ধান না পেয়ে তার পিতা নুরুজ্জামান যশোরে ছুটে আসেন। কর্মস্থলে যোগাযোগ করলেও সেখান থেকে কেউ নিখোঁজ ইসহাক জামানের কোনো সন্ধান দিতে পারেননি। এ ঘটনায় প্রথমে নুরুজ্জামান কমলগঞ্জ থানায় ৫ আগস্ট একটি জিডি করেন। এরপর ৬ আগস্ট যশোর কোতয়ালি থানায় ছেলে নিখোঁজ সংক্রান্ত আরেকটি জিডি করেন তিনি। পরে কোতয়ালি থানা থেকে জিডি তদন্তের দায়িত্ব দেয়া ডিবি পুলিশকে। এরপর ডিবি পুলিশ নিখোঁজ ইসহাক জামানের সন্ধানে অভিযানে নামে। এক পর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে ট্র্যাকিং করে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, বন্ধ হওয়ার আগে ইসহাক জামানের মোবাইল ফোন নম্বরের সর্বশেষ অবস্থান ছিলো সদর উপজেলার চাঁচড়া মধ্যপাড়ায়। এছাড়া বিভিন্নভাবে খোঁজ নিয়ে ইসহাক জামান ওই এলাকার তৎকালীন ইউপি সদস্য সেলিম আহমেদ শান্তির বাড়ির পাশের জনৈক আলাউদ্দিন মনুর বাড়িতে অবস্থান করছেন বলে তথ্য পাওয়া যায়। এরই প্রেক্ষিতে ৭ আগস্ট বিকেলে আলাউদ্দিন মনুর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে কথিত নিখোঁজ ইসহাক জামানকে উদ্ধার করা হয়। কিন্তু তাকে উদ্ধার করতে গিয়ে গোপনে বিয়ে করা তার বউয়ের খোঁজ পাওয়া যায়। পরিবারকে না জানিয়ে আলাউদ্দিন মনুর মেয়ে সাহারা পারভীন যুথীকে গোপনে বিয়ে করেছিলেন ইসহাক জামান। ফেসবুকের মাধ্যমে তার সাথে পরিচয় হয়েছিলো সাহারা পারভীন যুথীর। এরপর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২০ সালের ১৬ জানুয়ারি ইসহাক জামান নিজ পরিবারকে না জানিয়ে গোপনে সাহারা পারভীন যুথীকে বিয়ে করেন। এরপর ২৩ জুলাই ইসহাক জামান কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়ে মৌলভীবাজারে বাড়িতে না গিয়ে যশোরের চাঁচড়া মধ্যপাড়ায় শ্বশুরবাড়িতে যান। শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার পর তার মোবাইল ফোন বন্ধ রেখেছিলেন। এ কারণে তাকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না পরিবারের লোকজন। শেষমেষ কথিত নিখোঁজ ইসহাক জামানকে নতুন বউসহ উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়। এরপর ডিবি কার্যালয় থেকে তার পিতা নুরজ্জামানের কাছে দেয়া হয় তাদের দুজনকে।