খুলনায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আন্দোলনের সুনামিতে ফ্যাসিবাদের পতন হবে

0

 

স্টাফ রিপোর্টার,খুলনা॥ আগামী ২২ অক্টোবর খুলনা থেকে ফ্যাসিবাদের পতন ও গণতন্ত্র মুক্তির যুদ্ধ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। যেখানেই বাধা আসবে সেখান থেকেই আন্দোলনের সুনামি সৃষ্টির জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানান তিনি।
বিএনপি ঘোষিত খুলনা বিভাগীয় গণসমাবেশ কর্মসূচি সফল করতে শুক্রবার স্থানীয় প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে অনুষ্ঠিত সমন্বয়সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
গয়েশ্বর রায় বলেন, গাইবান্ধার নির্বাচন প্রমাণ করেছে দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। এ কারণে ফ্যাসিবাদী সরকারের বিদায় ঘটাতে হবে। তবে এরা স্বেচ্ছায় বিদায় নেবেনা। আন্দোলনের মাধ্যমে পতন নিশ্চিত করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। তারা নতুন নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করবে। যারা পরবর্তী নির্বাচনের আয়োজন করবে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও খুলনা বিভাগীয় গণ সমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক শামসুজ্জামান দুদুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমন্বয়সভায় কমিটির প্রধান উপদেষ্টা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আরও বলেন, যারা গাইবান্ধার একটি আসনে ভোটারদের নিরাপত্তা দিতে পারেনি, তারা ৩০০ আসনে পারবে না। এমনকি আমাকে নির্বাচন কমিশনের প্রধান বানানো হলেও আমি নিজের ভোটটি দিতে পারবো কিনা সন্দেহ।
আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক জ্বালানি তেল, চাল, ডাল তেল সহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যমূল্য বৃদ্ধি, ভোলায় নুরে আলম, আব্দুর রহিম, নারায়নগঞ্জে শাওন, মুন্সিগঞ্জে শহিদুল ইসলাম শাওনকে গুলি করে, যশোরে আব্দুল আলিমকে হত্যার প্রতিবাদে, বিএনপির চেয়ারপার্সন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং দেশব্যাপী দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর হামলা মামলার প্রতিবাদে আগামী ২২ অক্টোবর শনিবার খুলনায় বিভাগীয় গণসমাবেশ করবে বিএনপি। খুলনায় কর্মসূচি পালিত হবে ডাকবাংলা মোড় ও ফেরিঘাট মোড়ের মধ্যবর্তী সোনালী ব্যাংক চত্বরে।
গণ সমাবেশ সফল করতে গত ৮ অক্টোবর ঢাকায় প্রথম সমন্বয়সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর শুক্রবার খুলনায় দ্বিতীয় সভা অনুষ্ঠিত হলো।
সকাল পৌনে ১১ টায় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সভার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। সভা সঞ্চালনা করেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। সহযোগিতা করেন জেলা বিএনপির সভাপতি আমীর এজাজ খান, মহানগর সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন ও জেলা সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী। সভার শুরুতে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শাহাদাতবরণকারীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
গয়েশ্বর রায় বলেন, কারো বক্তৃতায় বা আদালতের রায়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি। দেশ স্বাধীন হয়েছিল জিয়াউর রহমানের ঘোষণা এবং যুদ্ধের মাধ্যমে। খুলনার কর্মসূচি বানচাল করতে সরকার নতুন নতুন কৌশল নেবে। যেখানেই বাধা আসবে সেখানেই দেশ বাঁচানো, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আর একটি যুদ্ধ শুরু করতে হবে।
তিনি বলেন, এই সরকার বিনা কারণে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অপমান করেছে। দুর্নীতি না করেও তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। তিনি সকল রাজনৈতিক মামলা এবং ফরমায়েশি রায় ও শাস্তি প্রত্যাহারের দাবি জানান। বলেন, কোন ফ্যাসিবাদ, লুটেরা, মুদ্রা পাচারকারী সরকার দেশে টিকবে না। তাদেরকে পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে। খুলনার শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি সফল করতে তিনি প্রশাসন ও পুলিশের সহযোগিতা কামণা করেন।
সভার সভাপতি শামসুজ্জামান দুদু বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ সহ দেশের সকল গণতান্ত্রিক সংগ্রামে খুলনা ইতিহাসের সাড়া জাগানো ভূমিকা পালন করেছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এই খুলনা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ২২ তারিখ আবারও খুলনায় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে নতুন ইতিহাস রচিত হবে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, শতাব্দীর নিকৃষ্ট ফ্যাসিবাদী শাসনের কারণে দেশের শ্রমজীবী মেহনতি মানুষ পথে বসেছে। শিল্প কারখানা বন্ধ হওয়ায় শ্রমিক ধুকে ধুকে মরছে। বিদ্যুৎ, ডিজেল সারের দাম বাড়িয়ে কৃষকের সর্বনাশ করেছে। এই সরকারের পতন ছাড়া মানুষের মুক্তি নেই।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেন, আন্দোলনের পালে বাতাস লেগেছে। সুনামির মতো গর্জে উঠতে হবে। হাসিনার পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাচ্ছে। ভারত, আমেরিকা তাকে লাল কার্ড দেখিয়েছে। সারা বিশ্ব থেকে হাসিনা আলাদা হয়ে গেছে। বিএনপির কর্মসচিতে জনগনের উপস্থিতি দেখে সরকারের থরকম্প শুরু হয়েছে।

সমন্বয় সভায় বক্তব্য রাখেন,বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু,জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, আলহাজ রকিবুল ইসলাম বকুল, মহানগর বিএনপির আহবায়ক শফিকুল আলম মনা, যশোর জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপিকা নার্গিস বেগম, বাগেরহাট বিএনপির আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার আকরাম হোসেন তালিম, সাতক্ষীরা বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ ইফতেখার আলী, যশোরের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, নড়াইলের সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, মাগুরার সভাপতি আক্তার হোসেন, ঝিনাইদহের এম এ মজিদ, কুষ্টিয়ার সাবেক এমপি অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন, চুয়াডাঙ্গার সদস্য সচিব শরীফুজ্জামান, মেহেরপুর সভাপতি সাবেক এমপি মাসুদ অরুণ।
খুলনা মহানগর ও জেলা এবং ওয়ার্ড/ইউনিয়ন বিএনপি নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন খান জুলফিকার আলী জুলু, জাহিদ হোসেন, হাফিজুর রহমান মনি, মোল্লা মোশারফ হোসেন মফিজ, আবু সাঈদ হাওলাদার আব্বাস, আব্দুল মান্নান খান, মুরশিদ কামাল, ডা. আব্দুল মজিদ, হাসানউল্লাহ বুলবুল, অ্যাডভোকেট মোমরেজুল ইসলাম, কে এম হুমায়ূন কবির, খায়রুল ইসলাম খান জনি, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী বাবু, আব্দুল মালেক, মোল্লা ফরিদ আহমেদ, আব্দুর রব আকুঞ্জি।
অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুবদলের মাহবুব হাসান পিয়ারু, শামীম কবির, স্বেচ্ছাসেবক দলের শেখ তৈয়েবুর রহমান, একরামুল হক হেলাল, শ্রমিক দলের মুজিবর রহমান, উজ্জল কুমার সাহা, কৃষক দলের মোল্লা কবির হোসেন, আখতারুজ্জামান তালুকদার সজীব, মহিলা দলের আজিজা খানম এলিজা, অ্যাডভোকেট তছলিমা খাতুন ছন্দা, ছাত্রদলের আব্দুল মান্নান মিস্ত্রি, মোঃ তাজিম বিশ্বাস, জাসাসের ইঞ্জিনিয়ার নুর ইসলাম বাচ্চু প্রমূখ।