মূল্য কমানোর ঘোষণা কার্যকরের ব্যবস্থা চাই

0

 

গতকাল প্রকাশিত দৈনিক লোকসমাজের শীর্ষ সংবাদের শিরোনাম ছিল “এলপিজির দাম কমে শুধু ঘোষণা”। আরেকটি খবরের শিরোনাম ছিল “দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়া সেপ্টেম্বরে বাগে এসেছে- পরিকল্পনামন্ত্রী”। এই খবরের খুব কাছাকাছি আরেকটি খবরের শিরোনাম ছিল “চিনির দাম আবার বাড়ানোর প্রস্তাব ব্যবসায়ীদের”। এই দুই খবরের মাঝের রিপোর্টের শিরোনাম ছিল “সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৪ টাকা কমলো”। খবরগুলো সবই বাজার পরিস্থিতির খন্ডচিত্র। খবরের সাথে জনস্বার্থই সবচেয়ে বেশি জড়িত। কোনোটিতে জনগণ প্রতারিত, কোনোটিতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, আর মন্ত্রীর কথায় হচ্ছে বিভ্রান্ত ক্ষুব্ধ। তিনি নিজে কখনও বাজারে যান কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কারণ, কোনো পণ্যই ক্রেতার নাগালে নেই। নতুন করে বাড়ছে চিনির দাম।
এলপিজির দাম কমানোর ঘোষণার পর জনগণ যে তার কোনো সুফল পাননি তার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছেন প্রতিবেদক আকরামুজ্জামান। তিনি ডিলারের বক্তব্যে স্পষ্ট করেছেন কোম্পানি ও সরকারি দামের সমন্বয়হীনতায় গ্রাহক মূল্য হ্রাসের সুবিধা পাচ্ছে না। এখানে উল্লেখ্য করা যায়, অতীতেও গ্রাহক মূল্য কমানোর সুফল পায়নি। তবে, প্রতিবারই জণগণকে তাৎক্ষণিকভাবে মূল্যবৃদ্ধির খেসারত দিতে হয়েছে। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য করা যায়, সয়াবিন তেলের দাম ১৪ টাকা কমানোর কথা বলা হলেও গতকাল রাত পর্যন্ত ১ টাকাও কমার খবর মেলেনি। অতীতেও এমন ঘটনা ঘটেছে। সরকার কার্য ঘোষণা দিয়ে দায়িত্ব শেষ করার কারণে বিক্রেতা সরকারকে মিথ্যাচারী বানিয়ে দেয়। আমরা জানি, সরকারের মূল্যবৃদ্ধি ও কমানোর সব ঘোষণাতেই জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত এবং ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছে। মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা তাৎক্ষণিক কার্যকরে লাভ সরকারের না হলেও ব্যবসায়ীদের হচ্ছে। সম্প্রতি জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে ব্যবসায়ীদের লাভ ব্যবসার ইতিহাসে নজিরবিহীন হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আপামর জনগণ। এতে রাষ্ট্রের কোনো আর্থিক লাভ হয়েছে বলে এ পর্যন্ত জানা সম্ভব হয়নি।
আমরা মনে করি, সরকারের মূল্যবৃদ্ধি ও হ্রাসের ক্ষেত্রে একটি বিবেচনাপ্রসূত মূল্যায়ন থাকা প্রয়োজন। একই সাথে মূল্যহ্রাসের ঘোষণা কার্যকরী সরকারের কঠোর অবস্থান থাকা অত্যন্ত জরুরি। কেউ ঘোষণা না মানলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত থাকতে হবে। অপরদিকে, মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা দিন তারিখ ঠিক করে ৭ দিন আগে দেয়া যুক্তিযুক্ত হবে। এক্ষেত্রে মজুদদারদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানও রাখতে হবে। এতে সাধারণ ক্রেতা অনেকটা উপকৃতই হবে। ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। আমরা আশা করব, সরকার বৃহত্তর জনস্বার্থে মূল্য বৃদ্ধি বা হ্রাসের ক্ষেত্রে সুবিবেচনা প্রসূত পদক্ষেপ নেবে।