চৌগাছায় পীর বলুহমেলায় উপচে পড়া ভিড়

0

 

মুকুরুল ইসলাম মিন্ট, চৌগাছা (যশোর) ॥ যশোরের চৌগাছার ঐতিহ্যবাহী পীরবলুহ মেলায় ফিরেছে প্রাণ চাঞ্চলতা। দীর্ঘ তিন বছর পর প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে অনুষ্ঠিত মেলার প্রথম দিনেই দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। মঙ্গলবার ভোর হতে শুরু হয় বৃষ্টি এই বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে মানুষের সরব উপস্থিতি জানান দিচ্ছে বলুহ মেলা কতটাই জনপ্রিয়। মেলায় যাতে কোন ধরনের অপ্রীতকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য থানা পুলিশের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবীরা রয়েছেন সদা সতর্ক।
চৌগাছার হাজরাখানা গ্রামে শায়িত আছেন এ অঞ্চলের প্রখ্যাত পীর বলুহ দেওয়ান (র.)। এই পীরের মাজারকে ঘিরে অনুষ্ঠিত হয় ওরশ, একই সাথে চলে মেলা। যুগযুগ ধরে চলে আসা এই মেলা মহামারি করোনার আগ পর্যন্ত চলে। এক পর্যায়ে পুতুল নাচের নামে বেহায়াপনা, যাদু খেলা, জুয়ার আসরসহ নানা অপকর্মের কারণে মেলার মূল আকর্ষণে ছেদ পড়ে। যার কারণে এ বছরের মেলা অনুষ্ঠানে অনেকেই দ্বিমত পোষণ করেন। তবে বর্তমান মেলা পরিচালনা কমিটি গ্রামীণ এই মেলায় কোন ধরনের অশ্লীলতা হবে না মর্মে প্রশাসনকে অবহিত করায় সোমবার সন্ধ্যার পর মেলে কাংখিত অনুমতি। মেলা বসার অনুমতির খবরে আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েন মেলায় আগত ব্যবসায়ীসহ সকলেই। সোমবার রাতে সকল ব্যবসায়ী অস্থায়ী দোকানের কাজ শেষ করেছেন, আবার অনেকে খবর পেয়ে ওই রাতে মেলা চত্বরে এসে হাজির হয়েছেন।
মঙ্গলবার বেলা ১১ টার দিকে মেলা ঘুরে দেখা গেছে, প্রশাসনে অনুমতির আগে ভাগেই ব্যবসায়ীরা তাদের দোকান তৈরি করেছেন, দোকানে তুলেছেন হরেক রকমের পণ্য সামগ্রী। তবে প্রতি বছরের মত এ বছরও মেলার প্রথম ও প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে কাঠের তৈরি নানা ধরনের আসবাবপত্র। মেলা উপলক্ষে স্থানীয় ফার্নিচার ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ঝিনাইদাহ, সাতক্ষীরা, নড়াইল, মাগুরা জেলার ফর্নিচার ব্যবসায়ীরা নানা ধরনের আসবাবপত্র তৈরি করে মেলাতে তুলেছেন। তবে মেলা শুরুর প্রথম দিনে সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টিপাতে কিছুটা হলেও ছন্দপতন ঘটে। বৃষ্টি কমে যাওয়ার সাথে সাথে গোটা মেলা চত্বর লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে।
মহেশপুরের ফতেপুর গ্রামের ফার্নিচার ব্যবসায়ী কাত্তিক বিশ্বাস, চৌগাছার নিমাই চন্দ্র বলেন, মেলার অনুমতি হবে কি হবে না এই নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় ছিলাম। অবশেষে অনুমতি মিলেছে আমরা হরেক রকমের ফর্নিচার আনতে শুরু করেছি। তবে প্রথম দিনের সকাল থেকেই বৃষ্টিপাত কিছুটা বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে। অনেক মালামাল বৃষ্টির পানিতে ভিজে গেছে। এ বছর আসবাবপত্রের মধ্যে পালং, বঙ্খাট, কাঠের আলমারি, সোকেস, সোফাসেট, চেয়ার, টেবিল, ডাইনিং টেবিল উল্লেযোগ্য। ঢাকার জুরাইন এলাকার প্রসাধনী ব্যবসায়ী আব্দুল মতিন বলেন, সোমবার রাতে ট্রাক ভর্তি করে মালামাল নিয়ে মঙ্গলবার সকালে এখানে পৌঁছান।

মেলা পরিচালনা কমিটির আহবায়ক ইউপি চেয়ারম্যান শাহিনুর রহমান শাহিন বলেন, বিগত দিনের মেলা পরিচালনা কমিটির কিছু ভুলের কারণে এবছর অনুমতি পেতে বেশ বেগ পেতে হয়। কিছু শর্তে মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।