ঝিনাইদহে ব্যাংক ম্যানেজারসহ তিনজনের বিরুদ্ধে বেআইনি নিলামের অভিযোগ

0

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ॥ ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ঝিনাইদহ শাখার ব্যবস্থাপকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজসে প্রতারণা জালিয়াতি, ঘুষ গ্রহণ, দুর্নীতি ও বেআইনিভাবে নিলামের মাধ্যমে সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে সদর উপজেলার সাগান্না গ্রামের ইটভাটা মালিক তাজুল ইসলাম এই অভিযোগ করেন। লিখিত বক্তব্যে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ঝিনাইদহ শাখার ব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান বাবু, শহরের আরাপপুর এলাকার মোয়াজ্জেম হোসেনের স্ত্রী জহুরা খাতুন ও আরাপপুর জামতলা এলাকার মঞ্জুর হোসেন স্বপনের স্ত্রী লুৎফুন্নাহারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়।
তাজুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ২০১১ সালে তিনি মঞ্জুর হোসেন স্বপনের সাথে যৌথভাবে ইটভাটার ব্যবসা শুরু করেন। ইটভাটার লাইসেন্স প্রাপ্তি এবং পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রাপ্তির জন্যে আমার মা মোছা. আকলিমা খাতুন ৭০১৫/২০১১ নং কবলা দলিলে ৮১ শতক জমি মঞ্জুর হোসেন স্বপনের নামে ২০১১ সালের ১৭ আগস্ট রেজিস্ট্রি করে দেন। ব্যবসা পরিচালনার প্রয়োজন হলে মঞ্জুর হোসেন স্বপন ইউসিবি থেকে লোন নেন। মূল ঋণগ্রহিতা মৃত মঞ্জুর হোসেন স্বপন তৎকালীন ব্যাংক ম্যানেজারের যোগসাজসে আমার চাচার ১৩২ শতক জমি ভাটা ম্যানেজার কালু মিয়ার ছবি বসিয়ে সই নকল করে বন্ধক রেজিস্ট্রি করিয়ে নেন। ২০১৪ সালে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক থেকে লিগ্যাল নোটিশ গেলে আমার চাচা এবং আমি জানতে পারি চাচার অনুপস্থিতিতে এই বন্ধক দলিলে রেজিস্ট্রি হয়ে গেছে। এ নিয়ে আমার চাচা ব্যাংককে বিবাদী করে দেওয়ানী মামলা করেন। যার নং-৮৬৭/২০। মামলাটি বর্তমান চলমান রয়েছে। এদিকে মঞ্জুর হোসেন স্বপন মারা যাওয়ার পর তার স্ত্রী লুৎফুন্নাহার বেগম একমাত্র ওয়ারেশ উল্লেখ করে আমাদের অংশসহ মোট ৪ একর জমি এবং আনুসাঙ্গিক জিনিসপত্র পাগলাকানাই সড়কের আবুল কাশেমের কাছে সম্পূর্ণ বেঅআইনিভাবে বিক্রি করে দেন। ২০১৭ পত্রিকায় একটি নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সম্পত্তি নিলামে তোলা হয়। আমি জানতে পেরে দুই বারে ৪৫ লাখ টাকা প্রদান করি। ২০২২ সালে পত্রিকায় মর্টগেজকৃত সম্পত্তি এবং মঞ্জুর হোসেন স্বপনের নিজ নামীয় সকল সম্পত্তি তফশীলভুক্ত করে বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে। যে বিষয়টি তৃতীয় পক্ষ হিসেবে আমাকে অবগত করা হয়নি। ২০২২ সালের ২৫ মে এই সম্পত্তি দুই কোটি ১৮ লাখ টাকায় নিলাম করা হয়। যা সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে জহুরা বেগম কিনে নেন। মূলঋণ গ্রহীতা মঞ্জুর হোসেন স্বপনের ঝিনাইদহ পৌরসভার অন্তর্গত এস এ ২৭৩, ২৭৪, ২৭৫ আরএস ২৪৮১ দাগের ওপরের তিনতলা আলিশান বসতবাড়ি থাকার পরও তথ্য গোপন করে আমার জমি নিলামে তোলা হয়। ২০০৩ সালের অর্থ ঋণ আইনের ১২ এর ৩ ধারা মোতাবেক মূল ঋণ গ্রহীতার সম্পত্তি দিয়ে যদি ব্যাংকের টাকা পরিশোধ হয়ে যায় তাহলে ব্যাংক তৃতীয় পক্ষের সম্পত্তিতে হাত দিতে পারবে না। কিন্তু ব্যাংক সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে আমাদের সম্পত্তিসহ মৃত মুঞ্জুর হোসেন স্বপনের নামের সকল সম্পত্তি একবারে নিলামের মাধ্যমে মৌজা রেটে বিক্রি করে দেয়।
তাজুল ইসলাম বলেন, প্রায় ৪০ কোটি টাকার সম্পদ মাত্র দুই কোটি ১৮ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ঝিনাইদহ শাখার ব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান বাবু বলেন, যথাযথ পক্রিয়া অনুসরণ করে নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। ফলে তাজুল ইসলাম যে তথ্য দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তিনি বলেন, ২০১৬ সাল থেকে নিলাম প্রক্রিয়া শুরু হয়। আমার আগে দুই ম্যানেজার এই প্রক্রিয়া করে গেছেন। আমি এসে শুধুমাত্র নিলাম করে জনগণের টাকা উদ্ধার করেছি।