চেক ডিজঅনার মামলায় মনিরামপুরে প্রধান শিক্ষকের কারাদণ্ড

0

 

স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর)॥ আট লাখ টাকার চেক ডিজঅনার মামলায় যশোরের মনিরামপুরের চাঁদপুর-মাঝিয়ালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিনকে এক বছরের সাজা দিয়েছেন আদালত। প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিন উপজেলার খেদাপাড়া ইউনিয়নের মাঝিয়ালী গ্রামের মৃত সুজাউদ্দিনের ছেলে। মাতৃভাষা কলেজের অধ্যক্ষ হাসানুল কবিরের স্ত্রীকে চাকুরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আটলাখ টাকা ঘুষ গ্রহন করেন প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিন। চাকুরি দিতে ব্যর্থ হওয়ায় অধ্যক্ষ হাসানুলকে আট লাখ টাকার চেক প্রদান করেন জামাল। কিন্তু তার একাউন্টে টাকা না থাকায় হাসানুল এ ব্যাপারে আদালতে মামলা করেন।
গত ৩১ জুলাই যশোরের যুগ্ম দায়রা জজ শিমুল কুমার বিশ্বাস প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিন কে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেন। ১০ আগস্ট রায়ের কপি প্রকাশ পায়। বিষয়টি গোপন থাকার পর  বৃহস্পতিবার রায়ের বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়।
রায়ের বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়, কয়েক বছর আগে মনিরামপুরের রোহিতা ইউনিয়নে গাঙ্গুলিয়া প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন চাঁদপুর-মাঝিয়ালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিন মুন্না। অভিযোগ রয়েছে মাতৃভাষা কলেজের অধ্যক্ষ হাসানুল কবিরের স্ত্রীকে প্রতিবন্ধী স্কুলে চাকুরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জামাল উদ্দিন আট লাখ টাকা ঘুষ গ্রহন করেন। চাকুরি দিতে ব্যর্থ হয়ে আট লাখ টাকার বিপরীতে জামাল উদ্দিন গত বছরের ১ ও ২৫ জুন আল আরাফাহ ব্যাংকের মনিরামপুর শাখার দুইটি চেক দেন অধ্যক্ষ হাসানুল কবিরকে। তবে তার একাউন্টে কোন টাকা জমা না থাকায় ওই চেক দুটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ডিজঅনার করেন। গত বছরের ৪ অক্টোবর অধ্যক্ষ হাসানুল কবির বাদি হয়ে প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে যশোর দায়রা জজ আদালতে মামলা করেন। পরবর্তীতে আদালত থেকে জামিন নেন জামাল উদ্দিন। কিন্তু জামিনের মেয়াদ শেষ হলেও তিনি আদালতে হাজির হননি। ফলে আদালত তার অনুপস্থিতিতে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্য প্রমান শেষে গত ৩১ জুলাই যুগ্ম দায়রা জজ শিমুল কুমার বিশ্বাস সংশ্লিষ্ট ধারায় জামাল উদ্দিনকে অভিযুক্ত করে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।
তবে প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিন জানান, চাকুরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি নয়, সুসম্পর্কের কারণে অধ্যক্ষ হাসানুল কবিরের কাছ থেকে তিনি লাভের (সুদ) বিনিময়ে এক লাখ ২০ হাজার টাকা গ্রহন করেন। এ সময় অধ্যক্ষকে তিনি দুটি অলেখা চেক প্রদানের দাবি করেন। জামাল উদ্দিন বলেন, ওই ব্ল্যাংক চেকে হাসানুল কবির টাকার অংক আটলাখ বসিয়ে নিয়েছেন।
জামাল উদ্দিনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অধ্যক্ষ হাসানুল কবির।
এদিকে আদালতে সাজা হওয়ার খবর প্রচার হলে চাঁদপুর-মাঝিয়ালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মামুনুর রশীদ জুয়েল জানান, আদালতের রায়ের কপি হাতে পেলে প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিনের ব্যাপারে কমিটির সভা ডেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মনিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূর-ই-আলম সিদ্দিকী জানান, আদালতের ওয়ারেন্ট হাতে পেলে তাকে গ্রেফতার করা হবে।