বালি উত্তোলনের প্রতিবাদ করায় ২০ লাখ টাকার ফল বাগান ধ্বংস!

0

 

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ ॥ ঝিনাইদহের মহেশপুরে কপোতাক্ষ নদ থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের প্রতিবাদ করে বিপাকে পড়েছেন মহেশপুর পৌর বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নজীবউদ্দৌলা নাসের। ফল বাগান ধ্বংসের পর তাকেও এলাকা ছাড়া করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পুলিশি হয়রানির ভয়ে তিনি এলাকায় যেতে পারছেন না।
ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের দপ্তরে লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মহেশপুর উপজেলার বৈচিতলা বেড়ের মাঠ এলাকায় কপোতাক্ষ নদ থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করছিলেন মনিরুল ইসলাম ওরফে মিন্টু খান। বিষয়টি নজীবউদ্দৌলা নাসের জেলা প্রশাসক মনিরা বেগমকে জানালে প্রশাসন বালি তোলা বন্ধ করে দেয়। মিন্টু খান স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় তিনি নাসেরের প্রতি ক্ষিপ্ত হন। এরপর দিনে দুপুরে মিন্টু খানের ইন্ধনে নজীবউদ্দৌলা নাসেরের মালিকানাধীন সিএস ১৬৯ খতিয়ানের ১৫৫৮, এসএ ১৮৩ খতিয়ানের ১৫৫৮, আরএস ৬৪৭ খতিয়ানের ২৫২৪ ও ২৫২৭ এবং ৪৯৩ খতিয়ানের ২৫২৫ ও ২৫২৭ দাগের জমির ওপর গড়ে ওঠা কলা, পেয়ারা ও মেহগনি বাগান মেশিন দিয়ে ধ্বংস করে দেয়। সরেজমিন দেখা গেছে, বৈচিতলা গ্রামে কপোতাক্ষ নদের ধারে নজীবউদ্দৌলা নাসের ১৩৪ শতক জমির ওপর গড়ে তোলেন বিভিন্ন প্রজাতির ফলদ ও বনজ বাগান। এর মধ্যে দুইশ কলাগাছে কলা ধরেছিল। তিনশ পেয়ারা গাছে পেয়ারা ছিল। কলাগাছের মধ্যে দুইশ মেহগনি গাছ লাগানো ছিল। কিন্তু নদী খননে ব্যবহৃত গাড়ি দিয়ে মিন্টু খানের ইন্ধনে নাসেরের বাগানে খননকৃত মাটির স্তুপ করে। এক পর্যায়ে ১৩৪ শতকের মধ্যে ৬৭ শতক জমির ফল বাগান মাটি দিয়ে ঢেকে ফেলা হয়। এতে প্রায় ২০ লাখ টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়। ফলের গাছগুলো মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হয়। এ বিষয়ে নজীবউদ্দৌলা নাসের জানান, ফল বাগান হারিয়ে একদিকে যেমন তিনি মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছেন, অন্যদিকে প্রভাবশালী মিন্টু খান হয়রানি করার জন্য তার পেছনে পুলিশকে ব্যবহার করছেন। তিনি এলাকায় যেতে পারছেন না। নাসের জানান, নদ থেকে বালি উত্তোলনের বিষয়ে প্রশাসন ভূমিকা নিলেও বালি ও ড্রেজিংয়ে নিয়োজিত মেশিন রহস্যজনক কারণে জব্দ করেনি। ফলে উত্তেলিত বালি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। মহেশপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) কাজী আনিছুর রহমান জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এখন আর বালি উত্তোলন করা হচ্ছে না। আর যাতে বালি না তোলা হয় সে বিষয়টি নজরে রাখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে মনিরুল ইসলাম ওরফে মিন্টু খানের বক্তব্য নিতে তার ফোনে একাধিকবার যোগোযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।