সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ ঝিনাইদহে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলায় আহত ১২০

0

 

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ॥ ঝিনাইদহে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর দেশীয় অস্ত্র, লাঠি, রামদা, হকিস্টিক ও হাতুড়ি দিয়ে বর্বোরোচিতভাবে হামলা করা হয়েছে। ভাংচুর ও লুট করা হয়েছে বিএনপি নেতাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং বাড়ি ঘর। হামলায় ১২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এরমধ্যে ২৭ জন গুরুতর আহত হয়ে ঝিনাইদহ, কালীগঞ্জ, শৈলকুপা, ঢাকা ও যশোর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
মঙ্গলবার বিএনপির সমাবেশে আসা যাওয়ার পথে আওয়ামী লীগ এই হামলা চালায়। বুধবার দুপুরে এইচএসএস সড়কের ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির কার্যালয়ে জনাকীর্ণ এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করে বিএনপি। জেলা বিএনপির সভাপতি এম এ মজিদ লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এ সময় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনা, বিএনপি নেতা মুন্সি কামাল আজাদ পাননু, সাজেদুর রহমান পাপপু, আব্দুল মজিদ বিশ্বাস, আলামগীর হোসেন আলম, শাহজাহান আলী, আবু বক্কার সিদ্দিক, মহিলাদল নেত্রী অধ্যক্ষ কামরুজ্জামান লিজি, তহুরা বেগম, আশরাফুল ইসলাম পিন্টু, মিজানুর রহমান সুজন, প্রভাষক কামাল হোসেন, মাহফুজুর রহমান ইপিআরসহ জেলা, উপজেলা ও পৌর বিএনপির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার ঝিনাইদহ শহরের উজির আলী হাইস্কুল মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এই সমাবেশে যোগদানের উদ্দেশ্যে সদর উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন ও জেলার ৬টি উপজেলা থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করে। তৃনমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা যাতে এই সমাবেশে অংশগ্রহণ করতে না পারে সে জন্য এই ফ্যাসিস্ট সরকারের সন্ত্রাসীরা পুলিশের সামনেই বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে নিরীহ নেতাকমীদের ওপর বর্বোরোচিতভাবে হামলা চালায়। হামলায় বিএনপির প্রায় ১২০জন নেতাকর্মী আহত হন। আহতদের মধ্যে ঘোড়শাল ইউনিয়নের নেতা আশিক, রুবেল, আলামীন, পলাশ, রিয়াজ হাসান, এনামুল, রিয়াজ, রাকিব, শুভ ও পারভেজ আহত হন। মধুহাটি ইউনিয়নের কৃষকদল নেতা ইমরান ও নাজির, সাগান্না ইউনিয়নের বিএনপি নেতা মকলেচুর রহমান বকুল, মহারাজপুর ইউয়িনের বিএনপি নেতা সঞ্জের আলী, গান্না ইউনিয়নের ছাত্রদল নেতা শামীম ও নিশাদ, বিএনপি নেতা আনিচ, শাহাজান, যুবদল নেতা জুবায়ের ও কাওসার, নলডাঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক গেলাম রসুল, বিএনপি নেতা সবজেল, মনিরুল, আলীম, পদ্মাকর ইউনিয়ন কৃষকদলের সভাপতি ওলিয়ার রহমান, শৈলকুপা উপজেলার যুবনেতা আনারুল, জুয়েল, বাবু, মাজেদ, আসাদুল, তারেক, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সাইফুল ইসলাম, কোটচাঁদপুর উপজেলা যুবদল নেতা সিরু, আশরাফ, কোটচাঁদপুর ছাত্রদলের সদ্য সচিব হীরা, কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার ইউনিয়ন বিএনপি নেতা সফর আলী, যুবদল নেতা লোকমান, কাষ্টভাংগা ইউনিয়নের বিএনপি নেতা আতিয়ার ও যুবদল নেতা পিয়ারকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা পিটিয়ে আহত করে। হামলা করেই সন্ত্রাসীরা ক্ষ্যান্ত হয়নি, তারা বিএনপির নেতাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর ও লূটপাট করেছে। বিএনপি নেতা কামাল আজাদ পাননুর মালিকানাধীন ঝিনাইদহ শহরের প্রিন্স হাসপাতাল এন্ড ক্লিনিকে হামলা চালিয়ে দাতের এক্সরে মেশিন (ওজিটি), অফিস ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। এতে প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ২৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। হামদহ অঞ্চলের সদর শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক ঠান্ডুর প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে প্রায় দুই লাখ টাকার মালঅমাল লুট করেছে। জেলা শ্রমিক দল নেতা শিবলুর ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর ও নগদ অর্থ লুট করেছে। যুবদলের থানায় আহ্বায়ক আশরাফ হোসেনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। আর এই হামলা হয়েছে পুলিশ প্রশাসনের ছত্রছায়ায় ঝিনাইদহ সদর আসনের বিনা ভোটের এমপির ইন্ধনে। এছাড়া সাগান্না ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে নিজেরা আগুন দিয়ে বিএনপির ১২ নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা করেছে। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ফ্যাসিবাদি আওয়ামী সরকার ক্ষমতা হারানোর ভয়ে দেওলিয়া হয়ে গেছে। সংবাদ সম্মেলনে হুসিয়ার উচ্চারণ করে বলা হয়, এভাবে যদি একের পর এক হামলা, বাড়িঘর ভাংচুর লুটপাট ও নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা করা হয় তাহলে প্রতিবাদ স্বরুপ বিএনপি ঝিনাইদহ জেলায় অবরোধ ও হরতালের মত কঠোর কর্মসূচী দিতে বাধ্য হবে।