হামলার ঘটনায় যশোর জেলা বিএনপির সংবাদ সম্মেলন জনগণের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনকে নস্যাৎ করার কোনো ষড়যন্ত্রই বাস্তবায়ন হবে না

0

 

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরে বিএনপির শীর্ষ চার নেতার বাড়িতে ভাঙচুর ও নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নে কর্মী সমাবেশে হামলার ঘটনায় প্রেস ক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলন করে জেলা বিএনপি। শনিবার দুপুরে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতারা দাবি করেন, দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিভিন্ন এলাকায় বিএনপির প্রতিবাদ কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত ও নেতাকর্মীদের মধ্যে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টির জন্য এ হামলা করা হয়েছে। তবে কোনো ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, বিএনপির আন্দোলন চলছে,-চলবেই।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির নেতৃবৃন্দ বলেন, শুক্রবার দিবাগত রাত ২টা থেকে ৩টার মধ্যে অজ্ঞাত পরিচয়ের ২০-২৫ জন দুর্বৃত্ত মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারযোগে প্রথমে কেন্দ্রী বিএনপির খুলনা বিভাগীয় (ভারপ্রাপ্ত) সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের বাড়িতে হামলা চালায়। তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ভাঙচুর চালায়। এরপর পর্যায়ক্রমে উপশহরে বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, সদস্য মিজানুর রহমান খান ও যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকনের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এ সময় তারা অশ্রাব্য্য ভাষায় গালিগালাজ ও ইটপাটকেল ছুঁড়ে ঘরের জানালার কাঁচ ভাঙচুর করে। তাদের ছোঁড়া ইটের টুকরা ঘরের ভেতরে চলে যায়। এ সময় তাদের পরিবারের সদস্যরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। একটি প্রাইভেটকার ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতারা বলেন, গত প্রায় ১৪ বছরে আওয়ামী লীগের দুঃশাসনকালীন এভাবেই মোট ৫ বার একই স্টাইলে নেতাকর্মীদের বাড়ি হামলা-ভাঙচুর হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেয়ার পরও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বরং উল্টো আমাদের নামে মিথ্যা-কাল্পনিক মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে হামলার ঘটনায় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির খুলনা বিভাগীয় (ভারপ্রাপ্ত) সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক, যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন ও যশোর নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি মারুফুল ইসলাম।
এ সময় অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, বিএনপির চলমান আন্দোলন যখন চূড়ান্ত লক্ষ্যের দিকে এগুচ্ছে ঠিক তখনি আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা সন্ত্রাসের পথ বেছে নিচ্ছে। তারা আমাদের নেতাকর্মীদের ভয় দেখাতে গভীর রাতে নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি হামলা চালিয়েছে। তিনি বলেন, জনগণের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনকে নস্যাৎ করার কোনো ষড়যন্ত্রই বাস্তবায়ন হবে না। আমাদের আন্দোলন চলছে চলবে। প্রয়োজনে ভোলাসহ বিভিন্ন স্থানে নেতাকর্মীরা যেমন প্রাণ দিচ্ছেন, শহীদ হচ্ছেন তেমন আমরাও জীবন দিতে প্রস্তুত আছি। দেশের গণতন্ত্র, ভোটের অধিকার ও মানুষের ন্যায়সঙ্গত দাবি আদায়ে আমরা যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সদা জাগ্রত আছি থাকবো। সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম, দলের সাবেক কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য গোলাম রেজা দুলু, অ্যাড. মো. ইসহক, অ্যাড.জাফর সাদিক, আব্দুস সালাম আজাদ, আলহাজ মিজানুর রহমান খান,অ্যাড. হাজী আনিছুর রহমান মুকুল, মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, নগর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম চৌধুরী মুল্লুক চাঁদ,মণিরামপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাড. শহীদ ইকবাল হোসেন, আলহাজ খাইরুজ্জামান মধুসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
এদিকে বিএনপির এ সংবাদ সম্মেলনের পর বিকেলে প্রেস ক্লাব যশোরে পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনার জন্য বিএনপিকে দায়ী করে জেলা যুবলীগের একাংশ। সংবাদ সম্মেলনে জেলা যুবলীগের সহসভাপতি সৈয়দ মেহেদী হাসান বলেন, বিএনপির আন্দোলনকে বেগবান করতে নিজেরাই পরিকল্পিত এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এরসাথে আমাদের নেতাকর্মীরা কেউই জড়িত না। সংবাদ সম্মেলন থেকে আগামীতে যশোরে বিএনপিকে প্রতিহত করা হবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে যশোর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক যুবলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন বিপুল, জেলা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক কাউন্সিলর শেখ জাহিদ হোসেন মিলন, দপ্তর সম্পাদক হাফিজুর রহমান, কাউন্সিলর রাজিবুল আলম, সাহিদুর রহমান রিপন উপস্থিত ছিলেন।