যশোরে দু যুবককে অপহরণ করে মারধর ও চাঁদাদাবি

0

 

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরে দুই যুবককে অপহরণের পর আটকে রেখে মারধর ও চাঁদাদাবির অভিযোগে ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় অপহৃত দু যুবককেও উদ্ধার করা হয়। গত সোমবার বিকেলে উপশহরস্থ শিশু হাসপাতালের সামনে থেকে ওই দু যুবককে অপহরণ করা হয়েছিলো।
আটককৃতরা হলেন-সদর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর বটতলার মোড় এলাকার হারেজ আলী মোল্যার ছেলে ইন্তাজ আলী (৫৫), শহরের বারান্দীপাড়া ২ নম্বর কলোনির মৃত জনাব আলীর মোল্যার ছেলে সেলিম মোল্যা (৫৮), বারান্দী মোল্যাপাড়া বউবাজার এলাকার নুর ইসলামের ছেলে সুজন হোসেন (২০) ও বারান্দী মোল্যাপাড়ার মৃত লুৎফর রহমানের ছেলে মাসুদুর রহমান নান্নু (৩৮)। অপরদিকে উদ্ধারকৃত দুই যুবক হলেন-সদর উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের সৈয়দ আলী বিশ্বাসের ছেলে মাহাবুর রহমান ওহাব (৩৩) ও তার মামাতো ভাইয়ের ছেলে রহমত আলী (২৫)।
পুলিশ জানায়, ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী মাহাবুর রহমান ওহাব আটক ৪ জনসহ ৬ জনকে আসামি করে কোতয়ালি থানায় মামলা করেছেন। অপর দুই আসামি হলেন-সদর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর বটতলার মোড় এলাকার ইন্তাজ আলীর ছেলে মামুন হোসেন (৩০) ও তাইজুলের ছেলে তালাত মাহমুদ ওরফে শাবু হোসেন (২৮)।
ভুক্তভোগী মাহাবুর রহমান ওহাবের অভিযোগ, গত আড়াই মাস আগে তার আত্মীয় মিন্টুর মাধ্যমে আসামি মামুন সৌদি আরবে যান। এ সংক্রান্ত দুপক্ষের টাকা লেনদেন ওহাবের সামনে হয়। এরপর গত ২ আগস্ট মামুন সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরে আসেন। পরবর্তীতে উল্লিখিত আসামিরা টাকার জন্য ওহাবকে চাপ সৃষ্টি করেন এবং টাকা গ্রহণকারী মিন্টুকে হাজির করতে বলেন। এ সময় ওহাব বিষয়টি সমাধান করে নেওয়ার জন্য মিন্টুকে বলেন। এরপরও আসামিরা ওহাবকে প্রায়ই হুমকিসহ ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং টাকা দাবি করেন। এর প্রেক্ষিতে ওহাব আত্মীয় মন্টু এবং ৬ জন আসামির মধ্যে ৫ জনের বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় একটি জিডি করেন। এ ঘটনার পর গত সোমবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ওহাব তার মামাতো ভাইয়ের ছেলে রহমত আলীকে সাথে নিয়ে রিকশায় করে যশোর শহর থেকে উপশহর এলাকায় যাচ্ছিলেন। পথে উপশহরস্থ শিশু হাসপাতালের সামনে পৌঁছালে উল্লিখিত আসামিরা রিকশা থামিয়ে তাদের অপহরণ করেন। তারা তাদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে দুটি ইজিবাইকে তুলে শহরের বারান্দীপাড়া ২ নম্বর কলোনিতে আসামি সেলিম মোল্যার বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে তাদের মারধর করে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন আসামিরা। প্রাণ বাঁচাতে ওহাব তার শ্যালক ইমরানকে ফোন করে ৫০ হাজার টাকা পাঠাতে বলেন। পরে ইমরান ৫০ হাজার টাকা ওহাবের বিকাশ নম্বরে পাঠালে আসামিরা ওই টাকা উত্তোলন করে নেন। এরই মধ্যে আসামিরা ওহাবের কাছ থেকে দুটি ব্লাঙ্ক স্ট্যাম্পে এবং তার কাছে থাকা ওয়ান ব্যাংকের কয়েকটি চেকের পাতায় জোরপূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে নেন। এরপরও আসামিরা ওহাবের কাছে আরও টাকা দাবি করলে তিনি শ্যালক ইমরানকে আটকে রাখার স্থান জানিয়ে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে আসতে বলেন। তখন শ্যালক ইমরান বিষয়টি পুলিশকে জানান। এ খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে আসামি ইন্তাজ আলী, সেলিম মোল্যা, সুজন হোসেন ও মাসুদুর রহমান নান্নুকে আটক করে। তাদের কাছ থেকে এ সময় ৫০ হাজার টাকা এবং স্বাক্ষর করিয়ে নেয়া ব্যাংকের চেকের পাতা ও স্ট্যাম্প উদ্ধার করে পুলিশ। এছাড়া পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওহাব ও রহমত আলীকে উদ্ধার করে।