শিক্ষাঙ্গনের অস্থিরতা থামাতে হবে

0

 

অশান্ত হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান । ছাত্র সংগঠনগুলোর অস্থিরতা ও সংঘাত এখন ছাত্র শিক্ষকের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে। নানা ইস্যুতে ঘটছে অপ্রীতিকর ঘটনা। গত কয়েক দিনে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা থেকে এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে পর্যবেক্ষকমহলে। দেখা যাচ্ছে, নড়াইল ও রাবির ঘটনা রেশ কাটার আগেই নতুন করে অশান্ত হতে শুরু করেছে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংঘর্ষের পর ইবিতেও বেড়েছে উত্তেজনা। সর্বত্র প্রশাসনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। অস্থিরতা ক্রমেই বাড়ছে। সর্বশেষ ঘটনা ঘটেছে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কয়েক দফায় ধাওয়াধাওয়ি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের সময় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, প্রধানমন্ত্রীর ছবিসহ জাতীয় নেতাদের ছবি ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আহত কয়েকজন শিক্ষার্থীকে দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। একজনের পেটে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। এ ছাড়া ভাঙচুর থেকে হলে থাকা মোটরসাইকেল, সিসিটিভি, ক্যান্টিনের গ্লাস, ছাদের দরজা, ক্যান্টিনের দরজা, হলের সামনে পানি সরবরাহ ব্যবস্থা, ডাস্টবিন, পানি খাওয়ার কলসহ বাদ যায়নি কোনো কিছুই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ওদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের অবৈধ শিক্ষার্থীদের বের করে কয়েকজন আবাসিক ছাত্রকে হলে তুলে দেওয়া হলেও সেখানে এক ধরনের উত্তেজনা তৈরি হয়ে আছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে আসন নিয়ে গোলযোগ একেবারেই নতুন ঘটনা নয়। অনেক আগে থেকেই এ ধরনের ঘটনা ঘটে আসছে। আবাসিক হলের আসন বা সিট রাজনৈতিক দখলে যাওয়াও নতুন নয়। শুধু আবাসিক হলের আসন নয়, আরো অনেক ঘটনারই রাজনৈতিক মোড়ক দেওয়া হয়। স্বাধীনতার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নানা ধরনের রাজনীতি, ছাত্ররাজনীতি শিক্ষার পরিবেশে বিঘœ সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মুক্ত থাকার কোনো সুযোগ কখনই ছিল না। স্থানীয় রাজনীতি, আধিপত্য বিস্তার ইত্যাদি খুব সহজেই জায়গা করে নিয়েছে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবে, যখনি একদলীয় দখল দায়িত্ব হয়েছে তখনিই খুন খারাবি বেড়েছে। এখানেও ছাত্র শিক্ষক বিরোধ কাজ করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চ শিক্ষার প্রতিষ্ঠান। সেখানে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে যে ধরনের সম্পর্ক থাকা দরকার, তার অভাব রয়েছে বেড়েছে বলেই মনে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রতিক অস্থিরতা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ নিয়ে কোনো মহলের রাজনীতিও কাম্য নয়। সরকারের দায়িত্ব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা। আমরা আশা করবো, সব দরনের সংকট মিটিয়ে শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ ফেরাতে সংশ্লিষ্ট সবাই কাজ করবে।