রাজগঞ্জে জমে উঠেছে কুরবানির পশুর হাট

0

 

ওসমান গণি. রাজগঞ্জ (যশোর) সংবাদদাতা ॥ কুরবানি ঈদকে সামনে রেখে যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জে জমে উঠেছে পশুর হাট। বৃহস্পতিবার ও সোমবার সপ্তাহে দুদিন রাজগঞ্জের পশুহাট বসে। প্রতি হাটে শত শত দেশিয় গরু-ছাগল নিয়ে বিক্রেতারা ছুটে আসছেন এই হাটে। বিক্রেতারা বলছেন, এ বছর গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে পশু মোটাতাজা করায় তাদের অধিক টাকা খরচ হলেও প্রতিটি পশুর দাম অনেক কম চাওয়া হচ্ছে। এরপরও ক্রেতারা দাম শুনে চলে যাচ্ছেন। এতে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এ অঞ্চলের শত শত পশু ব্যবসায়ী ও খামারি মালিক।
তবে ক্রেতারা বলছেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর কুরবানির পশুর দাম সবচেয়ে বেশি। তাদের অভিযোগ, হাটে পশু বিক্রেতারা তাদের ইচ্ছামতো দাম হাঁকিয়ে বসে রয়েছেন। তাই সামর্থ অনুযায়ী গরু ও ছাগল কিনতে বেশ হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
গত সোমবার সরেজমিন রাজগঞ্জ হাটে গিয়ে দেখা যায়, এখানে বিপুল পরিমান গরু-ছাগল বিক্রির জন্য হাটে নিয়ে এসেছেন বিক্রেতারা। দাম একটু বেশি হলেও বেচাকেনা বেশ ভালো। তবে করোনাকালীন এই পশু হাটে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি মানছেন না ক্রেতা-বিক্রেতাসহ দর্শণার্থীরা। বড় বড় গরুর পাশাপাশি ছাগলও আসছে এ হাটে। হাট ইজারাদারদের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহবান জানানো হলেও তা মানছেন না কেউ। হাটে গরু বিক্রি করতে আসা গ্রামের আনোয়ার হোসেন শেখ বলেন, তিনি ৬ থেকে ৭ মণ ওজনের দুটি ষাঁড় হাটে নিয়ে এসেছেন। হাটে ক্রেতারা গরু দেখলেও উপযুক্ত দাম বলছেন না। উপযুক্ত দাম পেলে দেশিয় জাতের এই ষাঁড় দুটি তিনি বিক্রি করে দেবেন বলে জানান। হানুয়ার গ্রাম থেকে ৩১টি গরু নিয়ে রাজগঞ্জের হাটে এসেছেন ব্যাপারি নজরুল ইসলাম মাসুম, মান্নান ও তাহের। এর মধ্যে ১২টি গরু তারা বিক্রিও করেছেন। এতে তাদের সামান্য কিছু টাকা লাভ হয়েছে বলে জানান। রাজগঞ্জ কলেজপাড়া গ্রামের ক্রেতা নজরুল ইসলাম, রামনাথপুর গ্রামের ক্রেতা আব্দুল ওয়াদুদ, হয়াতপুর গ্রামের ক্রেতা ফিরোজ হোসেন, ইচানি গ্রামের ক্রেতা টুটুল হোসেন ও মোবারকপুর গ্রামের ক্রেতা আব্দুর রাজ্জাক জানান, কুরবানির পশু কেনার জন্য তারা রাজগঞ্জ পশুহাটে এসেছেন। কিন্তু পশু বিক্রেতারা গত বছরের চেয়ে এ বছর পশুর দাম অনেক বেশি চাচ্ছেন। ফলে সামর্থ অনুযায়ী পশু কিনতে তাদের অনেকটা হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে তারা জানান, আরও এক দুই হাট দেখবেন। যদি পশুর দাম কিছুটা কমে তাহলে ভালো। নইলে বেশি দামেই কোরবানির জন্য পশু কিনতে হবে তাদের।
রাজগঞ্জ পশুহাট ইজারাদার ইমরান খাঁন পান্না ও আতিয়ার রহমান জানান, ২৭ জুন সোমবার বেলা ১১ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত বৃহত্তর এই হাটে ৮০টি গরু ও ৫৫টি ছাগল বিক্রি হয়েছে। রাজগঞ্জ পশুহাটে খাজনা খুবই কম বলে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সমাগম অনেক বেশি এবং কেনাবেচাও বেশ ভালো। তবে ক্রেতা বিক্রেতাসহ সাধারণ দর্শণার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশুহাটে প্রবেশ করার জন্য বলা হচ্ছে। সেই সাথে ক্রেতা বিক্রেতাসহ সাধারণ দর্শনার্থীদের বিনামূল্যে মাস্ক দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি কেউ অবৈধ উপায়ে এই হাটে অসুস্থ গরু নিয়ে আসলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তারা।