যশোরে জমজমাট ঈদের বাজার

0

আকরামুজ্জামান ॥ শেষ সময়ে এসে জমে উঠেছে যশোরের ঈদের বাজার। শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন যশোরের বাজারগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় ছিলো। ব্যবসায়ীদের দাবি, সামনের বাকি ১০ দিন ঈদের বাজার এভাবেই জমে থাকবে। বিশেষ করে গতকাল যশোর কালেক্টরেট মার্কেটে বেচাকেনার ধুম পড়ে যায়।
ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, ঊর্ধ্বমুখী বাজারদরের কারণে নি¤œআয়ের মানুষের পাশাপাশি কিছু কিছু উচ্চবিত্তের কেনাকাটার ঠিকানা এখন যশোর কালেক্টরেট মার্কেটসহ অস্থায়ী দোকানগুলো। এসব মার্কেটের সারি সারি দোকানে এসি নেই, নেই কোনো ঝলমলে আালোকসজ্জা। তবে তুলনামূলক কম দাম হওয়ায় স্বল্পআয়ের মানুষ ঈদের কেনাকাটায় এখানে ভিড় জমাচ্ছেন।
যশোর শহরের দড়াটানা এলাকা থেকে শুরু করে কালেক্টরেরট মার্কেট সংলগ্ন রাস্তার পাশে এবং ঝালাইপট্টি এলাকার ফেন্সি মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। ক্রেতাদের বেশিরভাগই নিম্ন ও মধ্যআয়ের মানুষ। যাদের অভিজাত শপিংমলগুলোতে যাওয়ার সাধ্য নেই তারাই এখানে আসেন ঈদের কেনাকাটা করতে।
এসব দোকানের বিক্রেতারা জানালেন, ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে বেচাকেনা ততই বাড়ছে। ২০ রমজান পার হয়ে যাওয়ার কারণে বেচাকেনা আরো বেশি জমজমাট হয়ে উঠছে বলে জানান দোকানিরা। অপেক্ষাকৃত কম দামে ভালো জিনিস কিনতে অনেক চাকরিজীবীরাও ছুটে আসছেন এসব দোকানগুলোতে।
এদিকে জিলা পরিষদের ভবন সংলগ্ন অস্থায়ী মার্কেটে শোভা পাচ্ছে নারীদের জন্য দেশি সুতি কাপড়ের বিভিন্ন পোশাক। তাতে রয়েছে হাতের ও এমব্রয়ডারি করা রকমারি কারুকাজ। আছে বুটিক, বাটিকের ওপর বাহারি পোশাক। আরও আছে কাশ্মিরি ডিজাইনের শাড়ি ও থ্রি-পিস, জরি ও সুতার মিশেলে বাহারি নকশার শাড়ি, উজ্জ্বল রঙের জর্জেট শাড়ি ও থ্রি-পিস, টিস্যু কাপড়। অন্যদিকে ছেলেদের জন্য রয়েছে দেশি-বিদেশি নানা ডিজাইনের পাঞ্জাবি, শার্ট, সুতির প্যান্ট, টি-শার্ট, জিন্স প্যান্ট, ফতুয়া প্রভৃতি। রয়েছে শার্ট ও প্যান্টের থানকাপড়ও।
ওই মার্কেটের ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম জানান, এবছর ঈদের বাজার জমতে একটু দেরি হয়েছে। গত শুক্রবার ক্রেতার কোনো চাপ ছিলো না। আজ আল্লাহর রহমতে মুটামুটি ভালো। তিনি বলেন, এসব দোকানে শিশু ও মেয়েদের কাপড়ের বেশি সরবরাহ করা হয়েছে। এখানে পোশাক যে দামে বিক্রি হয় তা অন্যান্য বড় শপিং মলে বিক্রি হয় দ্বিগুণ দামে। তিনি বলেন, আমরা সরাসরি বিভিন্ন গার্মেন্টস থেকে মালামালের লট কিনে আনি। ফলে আমরা কম দামে কিনতে পারি। তাই বিক্রিও করি কম দামে।
কালেক্টরেট মার্কেটের সামনে রোজিনা বেগম নামে এক গৃহবধূ জানান, এবছর জিনিসপত্রের দাম বেশি। ঈদের বাজারে এসে তা বুঝা যাচ্ছে। তারপরও আমরা খুশি। কেননা এখানে অন্য বড় মার্কেটের চেয়ে দাম হাতের নাগালে রয়েছে। শামসুন্নাহার নামে এক মহিলা জানান, সংসারে আয় কম। তাই ব্যয় সাশ্রয়ের জন্য আমাদের একমাত্র ভরসা এই সব মার্কেট। তিনি বলেন, ছেলেমেয়েদের জন্য কাপড় কিনতে এসেছি। এখানে কম দামে অপেক্ষাকৃত ভালো কাপড় পাওয়া যাচ্ছে বলেই এখানে আসা।
কালেক্টরেট মার্কেটের কয়েকজন দোকানি জানান, এসব দোকানে ছেলেদের শার্ট বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকায়। জিন্স প্যান্ট ৩৫০ থেকে ৭০০ টাকা, টি-শার্ট ২৫০ থেকে ৪০০, মেয়েদের থ্রি-পিস ৪৫০ থেকে ১ হাজার ২০০, শাড়ি ৪৫০ থেকে ২ হাজার, বাচ্চাদের থ্রিকোয়ার্টার জিন্স প্যান্ট ৩০০, গেঞ্জি সেট ২০০ থেকে ৫০০, ফ্রক ও টপস ২৫০ থেকে ৫০০, শাড়ি ৫০০ থেকে ১৫০০ টাকা এবং ছেলে ও মেয়ে শিশুদের জন্য হাতাকাটা গেঞ্জি ২০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে গত বছরের চেয়ে এবার কাপড়ের দাম বেশি বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
এসব মার্কেটের পাশাপাশি শহরের এইচ এমএম রোড কাপুড়িয়াপট্টি, মুজিব সড়কের অভিজাত বিপনী বিতানগুলোতেও ছুটির দিনে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় দেখা যায়।