রামপালে শতবর্ষী শেখের পুকুর এর মালিকানা নিয়ে বিরোধ

0

বাগেরহাট সংবাদদাতা ॥ বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার বৃ-চাকশ্রী এলাকার শত বছরের শেখের পুকুরের মালিকানা নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (২০ এপ্রিল) বিকেলে রামপাল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ওকাকফ স্টেটের মোতায়াল্লি ও মূল জমির মালিকের উত্তরাধিকারদের মধ্যে এমন রিবোধে এলাকাবাসীর মধ্যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, রামপাল উপজেলার বৃ-চাকশ্রী এলাকার দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যবাহী ‘শেখের পুকুর’ ভোগ দখল এবং পুকুরের আয়ের টাকা দিয়ে হাজী নাছির উদ্দিন জামে মসজিদের উন্নয়ন করে আসছেন মরহুম হাজী নাছির উদ্দিনের উত্তরাধিকারীরা। বর্তমানে হাজী নাছির উদ্দিন জামে মসজিদের সভাপতি শেখ আলী আহম্মেদ ওই পুকুর ভোগ দখল করছেন। তারা পুকুরে মাছের পোনা ছেড়েছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে হাজী নাছির উদ্দিন ওয়াকফ স্টেটের মোতায়াল্লি এখলাছুর রহমান এই পুকুরের মালিকানা দাবি করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে আবেদন করেন। অবৈধভাবে পুকুর স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছে ইজারা প্রদান করেন ওয়াকফ স্টেটের মোতায়ল্লি এখলাছুর রহমান। তখন হাজী নাছির উদ্দিনের উত্তরাধিকার ও ওয়াকফ স্টেটের মোতায়াল্লিদের মাঝে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পুকুর যেভাবে হাজী নেছার উদ্দিনের উত্তরাধিকারীরা ভোগ দখল করে আসছিলেন সেভাবেই রাখার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী ।
অন্যদিকে হাজী নাছির উদ্দিন জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি শেখ আলী আহম্মেদ পুকুরের মাছ রক্ষার জন্য বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৪ ধারার আবেদন করেন। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) দখলস্বত্ব নির্ধারণের জন্য সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন।
হাজী নাছির উদ্দিন জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি শেখ আলী আহম্মেদ বলেন, হাজী নেছার উদ্দিনের উত্তরাধিকার ও ওয়াকফ স্টেটের মোতায়াল্লিদের সম্মতিক্রমে প্রায় ২০ বছর ধরে আমি পুকুরটি ভোগ দখল করে আসছি। এই পুকুর থেকে আয়ের সিংহভাগ হাজী নেছার উদ্দিন জামে মসজিদের উন্নয়ন কাজে ব্যয় করেছি। এরপরেও হাজী নাছির উদ্দিন ওয়াকফ স্টেটের মোতায়াল্লি এখলাছুর রহমান পুকুরটি অবৈধভাবে ইজারা দেন। এটা আমাদের ওপর এক ধররের অন্যায়।
হাজী নাছির উদ্দিন জামে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান বলেন, এই পুকুরের আয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে হাজী নেছার উদ্দিন জামে মসজিদের উন্নয়নে ব্যয় হত। এসএ এবং বিআরএস রেকর্ড অনুযায়ী পুকুরের মালিক হাজী নেছার উদ্দিনের উত্তরাধিকারী ৬জন। কিন্তু মোতায়াল্লিরা এই পুকুর নিয়ে বেশ ঝামেলা শুরু করছেন। মোতায়াল্লিরা যেমন এই জমির ওয়ারিশ তেমনি আমরাও এই জমির ওয়ারিশ। সেক্ষেত্রে আমরা সবাই চাই এই জমিটি যেভাবে ভোগ দখল করছেন আলী আহমেদ সেভাবেই ভোগ দখল করবে।
একাধিক মুসল্লি বলেন, পুকুরের আয়ের বেশিরভাগই মসজিদের উন্নয়নে ব্যয় হয়। কিন্তু হাজী নেছার উদ্দিন ওয়াকফ স্টেটের প্রায় ২৫ একর জমি মোতায়াল্লি এখলাছুর রহমান ইচ্ছেমত ভোগদখল করছেন। ওই জমির কোন আয় মসজিদের কোন উপকারে আসে না। এখন পুকুরটিকে কুক্ষিগত করার জন্য চেষ্টা করছেন তারা।
ওয়াকফ স্টেটের মোতায়াল্লি এখলাছুর রহমান বলেন, পুকুরের জমিটি ওয়াকফ স্টেটের। তাই আমরা পুকুর ইজারা প্রদান করেছি। মসজিদ কমিটির সভাপতি অবৈধভাবে এই ইজারা বানচালের চেষ্টা করছেন।
রামপাল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ সালাউদ্দিন দিপু বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। দুই পক্ষের কথা শুনেছি। এসএ ও বিআরএস রেকর্ড পর্যালোচনা করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।