অবশেষে জানা গেল দামুড়হুদার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কারাগারে!

0

রিফাত রহমান,চুয়াডাঙ্গা ॥ দেরিতে হলেও জানা গেলো দুর্নীতির অভিযোগে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আশরাফ হোসেনসহ দুজন কারাগারে রয়েছেন। কারাগারে যাওয়ার বিষয়টি বেশ গোপনীয়তা অবলম্বন করা হলেও অবশেষে তা ফাঁস হয়ে যায়। গত ২৭ মার্চ আদালতের আদেশে তাকে এবং তার অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক সাইফুর রহমান মালিককে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। তার অবর্তমানে ৩০ মার্চ থেকে জীবননগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিজানুর রহমানকে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের দায়িত্ব দেওয়া হলে বিষয়টি ধীরে ধীরে প্রকাশ পায়।
চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালত সূত্রে জানা যায়, ঢাকা দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (মানি লন্ডারিং) আব্দুল মাজেদ বাদী হয়ে ২০২২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির মামলাটি করেন। যার নম্বর দুদক কুষ্টিয়া জিআর ০১/২২। ২‘শটি ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে ২ কোটি ১৮ লাখ ১ হাজার ৩‘শ টাকা মূল্যের ৬‘শ মেট্রিকটন চাল আত্মসাত করার অভিযোগে এ মামলাটি করা হয়। দন্ডবিধি ৪০৯/৪৬৬/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারা মোতাবেক দায়ের করা এ মামলা হয়। আসামিরা হলেন রাজবাড়ী জেলার সদর উপজেলার সজ্জনকান্দা (বড়পুল) গ্রামের মরহুম আমজাদ হোসেনের ছেলে তৎকালীন জীবননগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আশরাফ হোসেন এবং জীবননগর উপজেলার ধোপাখালী গ্রামের মরহুম আমির হোসেন মালিকের ছেলে বর্তমানে জীবননগর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক সাইফুর রহমান মালিক।
এই মামলার আসামিরা চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির না হয়ে উচ্চ আদালতে জামিনে ছিলেন। গত ২০২২ সালের ২৭ মার্চ বিশেষ আদালতের বিচারক জিয়া হায়দারের আদালতে জামিন আবেদন করলে তা না মঞ্জুর হয়। তাদেরকে চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। আগামী ১০ মে মামলার পরবর্তী শুনানীর দিন রয়েছে।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে কুষ্টিয়া দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি হতে ৩১ ডিসেম্বর তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পান। এরপর ২০২২ সালের ২৬ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক (অনু: ও তদন্ত) ফারজানা ইয়াসমিন অভিযুক্তদ্বয়ের বিরুদ্ধে এজাহার করার অনুমোদন দেন।
এদিকে, দামুড়হুদা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আশরাফ হোসেন দুর্নীতির মামলায় কারাগারে গেলেও বিষয়টির ক্ষেত্রে গোপনীয়তা অবলম্বন করা হয়। কিন্তু তার অনুপস্থিতিতে ওই কাজে জীবননগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিজানুর রহমানকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়। কাজ করতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে থাকায় দাপ্তরিক কাজে বিঘœ ঘটতে থাকে। এরই ফলে ক্রমান্বয়ে প্রকল্প কর্মকর্তা আশরাফ হোসেনের কারাগারে যাওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়।
চুয়াডাঙ্গা জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা সহকারী কমিশনার সাদাত হোসেন জানান, প্রকল্প কর্মকর্তা আশরাফ হোসেন কারাগারে যাওয়ার পর ২০২২ সালের ২৮ মার্চ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক বরাবর চিঠির মাধ্যমে সেটা জানানো হয়। এরপর ৩০ মার্চ এক চিঠিতে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে ওই স্থানে জীবননগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিজানুর রহমানকে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের জন্য বলা হয়। এ ক্ষেত্রে গোপনীয়তা অবলম্বন করা হয়নি। প্রথাগত ভাবেই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।