সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ, চৌগাছা থেকে দুই কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছে ইউনিক ওয়ার্ল্ড

0

চৌগাছা (যশোর) সংবাদদাতা ॥ চৌগাছা থেকে ইউনিক ওয়ার্ল্ড লিমিটেড নামে একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের প্রায় ২ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়েছে। তারা অ্যাপসের মাধ্যমে আইডি খুলে, সুপারশপ ইউনিক মার্ট ও ইউনিক রেস্টুরেন্ট খুলে উপজেলার প্রায় অর্ধশত গ্রাহকের কাছ থেকে এ টাকা নিয়ে পালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে প্রেস ক্লাব চৌগাছায় এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলার বাড়ীয়ালী গ্রামের বাসিন্দা ও চৌগাছা বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ রাজু।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ইউনিক ওয়ার্ল্ড লিমিটেড নামের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান যার প্রধান কার্যালয় ঢাকার মালিবাগ রেলগেট আয়েশা কমপ্লেক্স-এর ৩য় তলায়। দেশে ৬৪ জেলায় সুপারশপ, রেস্টুরেন্ট, কোমল পানীয় প্রতিষ্ঠান, জুতার কারখানা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ সব প্রতিষ্ঠান থেকে আমাদের লভ্যাংশ দেয়া হবে। এ কথা বলে আমরা যারা গ্রাহক আছি তাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে গেছে। তারা চৌগাছা পৌর শহরের মেইন বাসস্ট্যান্ডে পুরাতন সোনালী ব্যাংক ভবনের দ্বিতীয় তলায় ইউনিক মার্ট ও ইউনিক রেস্টুরেন্ট নামে দুইটি প্রতিষ্ঠান খুলে বসে। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ চৌগাছা উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষ ও চৌগাছার ডিভাইন কফি শপে ইউনিক মার্ট সুপারশপের বিভিন্ন কনফারেন্সের মাধ্যমে আমাদের উদ্বুদ্ধ করে। তারা মূলত চৌগাছার স্থানীয় কিছু মানুষের দ্বারা তাদের এই কার্যক্রম পরিচালনা করতো। আমরা চৌগাছার মাড়–য়া গ্রামের রাজু আহাম্মেদ ওরফে সোহাগ (কো¤পানির ডেপুটি ডিরেক্টর), আন্দারকোটা গ্রামের আক্তারুল ইসলাম (সুপারশপ তত্ত্বাবধায়ক ও উপজেলা কর্মকর্তা), শহরের সিদ্দিক টেইলার্সের সিদ্দিকের ছেলে শাহারিয়া নাফিস (মার্কেটিং কর্মকর্তা), পৌরসভার কারিগরপাড়ার বাসিন্দা ও চৌগাছা বাজারের ব্যবসায়ী মিন্টু মিয়া (মার্কেটিং কর্মকর্তা), তার ছেলে আল মাসুদ (মার্কেটিং কর্মকর্তা), মিন্টুর মেয়ে জুলেখা জামান (মার্কেটিং কর্মকর্তা) এবং মিন্টুর মেয়ের জামাই ও বরিশালের কুয়াকাটার বাসিন্দা মনিরুজ্জামানদের (কো-অর্ডিনেটর) বিশ্বাস করেই সবাই কো¤পানির সাথে যুক্ত হই। তারাই আমাদের টাকা মেরে দিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, তাদের এই কার্যক্রম অনলাইন ইউনিক ওয়ার্ল্ড লিমিটেড অ্যাপস এর মাধ্যমে ১২শ টাকা প্রতিটা আইডি খুলে বিজ্ঞাপন দেখার মাধ্যমে ১০ টাকা করে ইউনিক ওয়ার্ল্ডের অ্যাপসের আইডিতে জমা হতো।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রহমত আলী সেতু, ফয়সাল আহমেদ, হাসিবুল হাসান শান্ত, নাজমুল কবীর,জিাহদ হোসেন, আমীর হামজা, রেজওয়ান ইসালমসহ ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগীরা জানান, এসব টাকার বিপরীতে তাদের কারও কাছে বিভিন্ন অংকের টাকার চেক দিয়েছিলো কো¤পানিটির কর্মকর্তারা। সে সব হিসাবে টাকা না থাকায় ইতোমধ্যেই চেক ডিজ-অনারের প্রস্তুতি নিয়েছেন কয়েকজন। এরই মধ্যে উকিল নোটিশ পাঠানো হলেও তাদের স্থায়ী ঠিকানায়ও কাউকে পাওয়া যায়নি।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ কো¤পানির চৌগাছার ইউনিক মার্ট (সুপারশপ) ও ইউনিক রেস্টুরেন্টের মাধ্যমে চৌগাছা পৌরসভার বাকপাড়া গ্রামের হাসিবুল হাসান শান্তর ১০ লাখ ৫০ হাজার, নাজমুল কবীরের ৭ লাখ ৫০ হাজার, রেহেনা পারভীনের ৩ লাখ, রুমা আক্তারের ২ লাখ, জাহিদ হাসানের ৪ লাখ, উপজেলার বাড়িয়ালী গ্রামের আব্দুর রশিদ রাজুর ৪ লাখ, ফুলসারা গ্রামের ফয়সাল আহমেদের ২ লাখ ৬০ হাজার ছাড়াও রহমাত আলী সেতুর ১৬ লাখ, মুনজুরুল সোহাগের ১২ লাখ ১৫ হাজার, মারুফ হোসেনের ১ লাখ ৩২ হাজার, ইকরামুলের ২ লাখ, রেজওয়ানের ১ লাখ ৩৫ হাজারসহ বিভিন্ন গ্রামের আরও অনেকের প্রায় দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে তারা অভিযোগ করেন, চৌগাছায় যারা কো¤পানিটির সাথে জড়িত ছিলেন তারা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন এবং মোবাইল ফোন বন্ধ রেখেছেন। এছাড়া কো¤পানিটির ঢাকা কার্যালয়ে কো¤পানির চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান হীরা, ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুস সালাম, অ্যাডমিন ডিরেক্টর মাসুদ রানা, চৌগাছা উপজেলা কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদের সাথে যোগাযোগ করলেও তারা সাড়া দিচ্ছেন না।