ঢামেকে ১ বছরে টিকা নিয়েছে ৫ লাখ মানুষ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ এক বছরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ৫ লাখ মানুষ টিকা নিয়েছে। শনিবার দুপুরে হাসপাতালের সভাকক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের এমন তথ্য জানান পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক। বলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতাল হিসেবে ঢামেক হাসপাতাল অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ২০২১ সালের ২৮শে জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ২৮শে জানুয়ারি পর্যন্ত ৫ লাখের বেশি টিকা দেয়া হয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছাড়া এখন প্রতিদিন গড়ে পাঁচ হাজার মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে। করোনাকালীন সময়ে ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীরা জীবন বাজি রেখে রোগীদের সেবা দিয়েছেন। সেবা দিতে গিয়ে অনেকে মৃত্যুবরণ করেছেন।
মতবিনিময়ের সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. টিটো মিঞা, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ডা. দেবেশ চন্দ্র তালুকদার, হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক ডা. আশরাফুল আলম, মেডিসিন স্টোরের এসএলপিপি ডা. মশিউর রহমান, বহির্বিভাগের ওয়ার্ড মাস্টার আবুল বাশার শিকদার ও আনসারের প্লাটুন কমান্ডার মো. শাহ আলমসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বিদায়ী বছরের হাসপাতালটির চিকিৎসা সেবার পরিসংখ্যান তুলে ধরে নাজমুল হক বলেন, ২০২১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে শুরু করে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত জরুরি বিভাগে ২ লাখ ৬১ হাজার ৯৭৮ জন ও বহির্বিভাগে ৭ লাখ ৩০ হাজার ৮২৮ জন অধিক রোগীকে সেবা দেয়া হয়েছে।
এদের মধ্যে ৭৬ হাজার ৩২৪ জন বেশি রোগীকে ভর্তি দেয়া হয়। এ সময়ে হাসপাতালটিতে মৃত্যুবরণ করেছেন ৮ হাজার ৯৪১ জন রোগী। মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে আরও ১ হাজার ৯৭২ জনকে। পরিচালক বলেন, একই সময়ে মেজর অপারেশন করা হয়েছে প্রায় ১৮ হাজার ৮৪২টি, মাইনর অপারেশন হয়েছে ২৭ হাজার ৭২৩টি। করোনা আক্রান্ত রোগী ভর্তি করা হয়েছে ১৭ হাজার ৬৪১ জন। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেখে চিকিৎসা দেয়া হয় ১ হাজার ২০৮ জনকে। এইচডিইউতে চিকিৎসা দেয়া হয় ৯৭৭ জনকে, সিটি স্ক্যান করা হয়েছে ৩৭ হাজার ৯৪টি, ইসিজি করা হয়েছে ২৪ হাজার ২৪ জনকে, এমআরআই করা হয়েছে ৩ হাজার ৮৪৩টি। বাইসার্জারি ২০টি ও প্যাথলজি টেস্ট করা হয়েছে প্রায় ১৭ লাখ ৯ হাজার ৫৫৯টি।মো. নাজমুল হক বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সব রোগীকে জরুরি কমপ্লেক্সে রেখে পর্যবেক্ষণ করা হবে। পরে ভর্তি প্রয়োজন হলে তাদের ওয়ার্ডে রেফার করা হবে। সেখানে সব ধরনের রোগীদেরই রাখা হবে ও সব বিভাগের চিকিৎসকরাই রোগীদের চিকিৎসা দেবেন। এজন্য খুব দ্রুত একটি কমপ্লেক্স তৈরি হচ্ছে। বেসরকারি এম্বুলেন্সের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বেসরকারি এম্বুলেন্সগুলো জরুরি বিভাগে এলোমেলোভাবে থাকে। হাসপাতালের ভেতরে কোনো ধরনের এম্বুলেন্স না থাকে সে বিষয়ে একটি অ্যাপস তৈরি করা হচ্ছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. দেবেশ চন্দ্র তালুকদার বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এমন একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে কোভিডসহ সব ধরনের রোগীকে রেফার্ড করা হয়। কিন্তু এই হাসপাতাল থেকে কখনো রোগী রেফার্ড করা হয় না। ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. টিটো মিঞা বলেন, স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে ঢাকা মেডিকেল এজন্য খুব দ্রুত একটি কমপ্লেক্স তৈরি হচ্ছে। কলেজ হাসপাতাল এক বছরে অভূতপূর্ব অবদান রেখেছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ঢামেক যে অবদান রেখেছে তা অভাবনীয়।