উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে অনশনে শাবি শিক্ষার্থীরা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিনের পদত্যাগ দাবিতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অনশনে বসেছেন। বুধবার বেলা ৩টার দিকে তারা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বসে অনশন কর্মসূচি শুরু করেন। অনশনে অংশ নিয়েছেন মোট ২৪ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ৯ জন ছাত্রী ও ১৫ জন ছাত্র। উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি ছাড়াও শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলো হল- শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ প্রক্টরিয়াল বডি ও ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগ, তাদের বিরুদ্ধে হওয়া হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার, ক্যাম্পাস অনির্দিষ্টকাল বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে অনশনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা সারা রাত ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। পরে গতকাল সকাল থেকেই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নিয়ে তারা আন্দোলন অব্যাহত রাখেন।
উল্লেখ্য, অসদাচরণের অভিযোগ এনে বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টা থেকে ৩টা পর্যন্ত উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হলেও দাবি পূরণ না হওয়ায় আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন তারা। এরই মধ্যে শনিবার সন্ধ্যায় আন্দোলনরতদের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য সকল বিভাগের ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। রবিবার বেলা আড়াইটার দিকে একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিং শেষে রেজিস্ট্রার ভবন থেকে বের হলে উপাচার্যের পিছু নেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় উপাচার্য ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনে আশ্রয় নিলে শিক্ষার্থীরা সেখানে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। বিকেল ৫টার দিকে উপাচার্যকে উদ্ধারে শিক্ষার্থীদের লাঠিচার্জের পাশাপাশি তাদের ছত্রভঙ্গ করতে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশের ক্রাইসিস রেসপন্স টিমের সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এ ছাড়া পুলিশের হামলায় ছত্রভঙ্গ শিক্ষার্থীরা আবারও জড়ো হলে পরে ছাত্রলীগ তাদের ধাওয়া করে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে উপাচার্যের পদত্যাগের একদফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। সোমবার রাতেই শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ৩০০ জন অজ্ঞাতনামাকে আসামি করে মামলা করে পুলিশ। মঙ্গলবার সারা দিন তারা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন। এ দিন স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতারা তাদের সঙ্গে দেখা করেন। পরে উপাচার্যের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতারা সাক্ষাৎ করে আলোচনার আহ্বান জানালে তারা সেই আহ্বান ফিরিয়ে দেন। তারা জানান, উপাচার্যের পদত্যাগ না হলে কোনো আলোচনায় তারা বসবেন না।