মোবাইলফোন জব্দ, তদন্ত কমিটি গঠিত: কনডেম সেলে বসে নির্বাচনী প্রচারণা নূর হোসেনের

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥একের পর এক অপরাধমূলক কার্যক্রম চলছে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারের ভেতরে। এবার কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর কনডেম সেলে বসে মোবাইলফোন চালানোর চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নূর হোসেনের বিরুদ্ধে। কনডেম সেল থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচনে ভাই ও ভাতিজার পক্ষে মোবাইলফোনে নির্বাচনী তৎপরতা চালাচ্ছেন নূর হোসেন- এমন অভিযোগ উঠে আসছে।
এমন বাস্তবতায় গত ৫ই জানুয়ারি কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর কনডেম সেল থেকে তার ব্যবহৃত একটি মোবাইলফোন জব্দ করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই তদন্ত কমিটির প্রধান কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর উপ-তত্ত্বাবধায়ক ও জেলার উম্মে সালমা, সদস্য সচিব ডেপুটি জেলার নুরুল মবিন ও সদস্য প্রধান কারারক্ষী মো. আসাদুজ্জামান। এই তদন্ত কমিটিকে ১১ই জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর জেল সুপার আবদুল জলিল জানান, এই কারাগারের কনডেম সেলে নূর হোসেনসহ তিনজন বন্দি আছেন। নূর হোসেন নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ও সেখানকার সাবেক কাউন্সিলর। কারা কর্তৃপক্ষ জানতে পারে নূর হোসেন কনডেম সেলে বসে গোপনে মোবাইলফোন ব্যবহার করছেন। পরে ওই কনডেম সেলে ৫ই জানুয়ারি অভিযান চালানো হয়। এ সময় ওই কনডেম সেল থেকে একটি মিনি বাটন মোবাইলফোন উদ্ধার করা হয়। কারাগারে মোবাইলফোন ব্যবহারের অপরাধে তার বিরুদ্ধে কারাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। ২০১৪ সালের এপ্রিলে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ সাতজনকে অপহরণের ঘটনা ঘটে। এর তিনদিন পর তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলামবাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় একটি এবং সিনিয়র আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিম হত্যার ঘটনায় জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে আরেকটি মামলা করেন।
নারায়ণগঞ্জের সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর বহুল আলোচিত সাত খুনের মামলার ফাঁসির দণ্ড নিয়ে এখন কারাগারে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগে আরও মামলা বিচারাধীন।
এর আগে কাশিমপুর কারাগারে বন্দি হলমার্কের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) তুষার আহমদ বিধি লঙ্ঘন করে এক নারীর সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন। এতে কারাগারেরই দুই কর্মকর্তা সহযোগিতা করেছেন বলে অভিযোগ উঠে। কারাগারের ক্লোজ সার্কিট টেলিভিশনের (সিসিটিভি) ক্যামেরায় ওই চিত্র ধরা পড়েছে। ওই ঘটনার তদন্তে জেলা প্রশাসন তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। তিন সদস্যের আরেকটি তদন্ত কমিটি করে কারা কর্তৃপক্ষ। তদন্তে ঘটনার সত্যতাও পাওয়া যায় ওই ঘটনার। একের পর এক অবাক করা এসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চলছে কাশিমপুর কারাগারের ভেতরে।