ট্রিপল মার্ডার এর আসামিদের ফঁসির দাবিতে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ মিছিল

0

ফুলবাড়ীগে (খুলনা) নগরীর মশিয়ালীতে আলোচিত ট্রিপল মার্ডার এর সাথে জড়িত আটককৃত আসামী বহিস্কৃত খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগের সহ প্রচার সম্পাদক শেখ জাকারিয়া ও তার ভাই মিলটন এবং জাফরিনসহ সকল আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে এলাকায় এসে মশিয়ালী এলাকার সাধারণ মানুষদের ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকী ধামকী দিয়ে এলাকা ত্যাগ করে। এঘটনায় উক্ত আসামীদের পূণরায় গ্রেফতার পূর্বক দ্রুত বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবিতে শুক্রবার (৭ জানুয়ারী) বিকাল ৪ টায় এলাকাবাসির উদ্যোগে এক বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি মশিয়ালী আলিয়া মাদ্রাসার সামনে হতে শুরু করে কুলসুম বিবি সড়ক, সিএনবি মাঠ, শহীদ শাহাদাত সড়ক, মিনা বাজার হয়ে আলিয়া মাদ্রাসার সামনে এসে এক পথসভার মাধ্যমে শেষ হয়। পথসভায় সভাপতিত্ব করেন মশিয়ালী গ্রামের সন্ত্রাস নির্মূল কমিটির যুগ্ন আহ্বায়ক মোঃ আমিরুল সরদার। হাফেজ মোঃ মাসুম বিল্লাহ এর পরিচালনায় বক্তৃতা করেন আঃ সাত্তার মোল্লা, তবিবুর রহমান, হামিদ আকুজ্ঞি, ওলিয়ার রহমান, মুজিবর রহমান, ১নং আটরা গিলাতলা ১,২,৩ নং সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য রাজিয়া বেগম, ইউপি সদস্য মোঃ বক্তিয়ার পারভেজ,মোঃ মিটুল শেখ, মোঃ রবি, মো: সালাউদ্দিন গাজী, আঃ রব মোল্যা, মো: সাইদুল শেখ, সাজ্জাদ হোসেন, মকবুল শেখ, জুয়েল শেখ, মুমিন শেখ, কামরুল শেখ প্রমুখ। পথসভায় বক্তারা বলেন, ট্রিপল মার্ডার এর সাথে জড়িত আসামীরা এলাকায় এসে মশিয়ালী এলাকার সাধারণ মানুষদের ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকী দিয়ে যশোরের কোন এক অজ্ঞাত স্থানে গাঢাকা দিয়ে রয়েছে। তাদেরকে পূনরায় গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানান। অন্যথায় এলাকাবাসী রাজপথ, রেলপথ অবরোধসহ কঠিন কর্মসূচী ঘোষনা করা হবে বলে হুসিয়ারী উচ্চারণ করেন।
উল্লেখ্য, মশিয়ালী গ্রামের একটি মসজিদ কমিটির মেয়াদ শেষ হলে সভাপতির পদ থেকে শেখ জাকরিয়াকে পদত্যাগ করতে বলে মিল শ্রমিক মুজিবরসহ মসজিদের মুসল্লিগন। সকলের দাবীর মুখে বাধ্য হয়ে পদ থেকে সরে দাড়াতে সম্মত হয়ে ২০২০ সালের ১৭ জুলাই শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু এর আগে ১৬ জুলাই বৃহস্পতিবার বিকালে জাকারিয়া ও তার ভাইয়েরা অস্ত্র দিয়ে মিল শ্রমিক মুজিবরকে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদী এলাকাবাসীর উপর জাকারিয়া-জাফরিন-মিল্টন বাহিনী নির্বিচারে গুলি বর্ষণ করে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় মশিয়ালী গ্রামের মৃত বারিক শেখের ছেলে মো. নজরুল ইসলাম (৬০) একই এলাকার মো. ইউনুছ আলীর ছেলে গোলাম রসুল (৩০) এবং পরে গুলিবিদ্ধ এলাকার সাইদুল ইসলামের ছেলে আটরা মেট্রো টেকনিক্যাল এন্ড বিএম কলেজের দ্বাদশ শ্রেনীর ছাত্র সাইফুল ইসলাম (২২) খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় এবং গুলিবিদ্ধ হয়ে আফসার শেখ, শামিম, রবি, খলিলুর রহমান, মশিয়ার রহমানসহ বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গুলি বর্ষণে হতাহতের ঘটনায় নিহত কলেজ ছাত্র সাইফুল ইসলামের পিতা সাইদুল ইসলাম বাদী হয়ে ২০২০ সালের ১৮ জুলাই শনিবার খানজাহান আলী থানায় মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-১২, তাং ১৮/৭/২০)। মামলায় খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সহ-প্রচার সম্পাদক শেখ জাকারিয়া হোসেন জাকার, তার ভাই মহানগর ছাত্রলীগের বহিস্কৃত সহ-সভাপতি শেখ জাফরিন, অস্ত্র মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামী মিল্টনসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ এবং ১৫/১৬ জন অজ্ঞাতনামাকে আসামী করা হয়।