শৃংখলা কমিটি ও সিন্ডিকেটের জরুরী সভায় আজ কুয়েট শিক্ষক সেলিমের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত

0

শেখ বদরউদ্দিন, ফুলবাড়ীগেট॥ খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানসহ ৪৪ শিক্ষার্থী শোকজের জবাব এবং ৪৪ পৃষ্ঠার তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রদানের কুয়েট ছাত্রশৃংখলা কমিটির সভা ৪ জানুয়ারী সকাল ১০ টায় কুয়েট সভা কক্ষে কমিটির সভাপতি ও কুয়েট ভাইস চ্যান্সেলার প্রফেসর ডা. সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন কমিটির সাধারন সম্পাদক পরিচালক (ছাত্রকল্যান) প্রফেসর ড. মোঃ ইসমাইল সাইফুল্লাহ। ইই অনুষাদের ডিন প্রফেসর ড, আজাহারুল হাসান, এমই বিভাগের ডীন প্রফেসর মোঃ গোলাম কাদের, পরিচালক আইইপিটি সদস্য প্রফেসর ড. এ এম মিজানুর রহমান, আরকিটেক্সার এর বিভাগীয় প্রধান প্রফেসার ডাঃ কাজী হামিদুল বারি, এম এসই বিভাগীয় প্রফেসার ডা. পল্লব কুমার চৌধুরী, খানজাহান আলী হলের প্রভোষ্ট প্রফেসার ড. সুলতান মাহমুদ, এম এ রশিদ হলের প্রভোষ্ট প্রফেসর ড. সজল কুমার অধিকারী, মানবিক বিভাগের প্রফেসর ডাঃ রাজিয়া খাতুন , খুলনা ফরেষ্টি এ্যানাউট টেকনোলজি ডিপাটমেন্টের প্রফেসর ডা. শরিফ হাসান লিমন, উক্ত ১১ সদস্য কমিটি দীর্ঘ সাড়ে ৭ ঘন্টা বৈঠকের পর বিকাল সাড়ে ৫ টায় পরিচালক (ছাত্রকল্যান ) প্রফেসার ডা. মোঃ ইসমাইল সাইফুল্লাহ বলেন কমিটির মিটিংএ এখনো কোন চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি সভা মুলতবি ঘোষনা করা হয়েছে আজ ৫ জানুয়ারি সকাল ৯ টায় পুনরায় সভা শুরু হবে পরবর্তিতে বেলা ১১ টায় জরুরী সিন্ডিকেট সভায় চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়ার সিদ্ধান্তগুলি জানানো হবে। গত বছরের ৩০ নভেম্বর বিকেলে কুয়েটের ইইই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেন মারা যান। তার মৃত্যুর পর সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ ওঠে এই মৃত্যুর জন্য বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানসহ তার অনুগত ছাত্ররা দায়ী। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ^বিদ্যালয়ের লালনশাহ হলের ডিসেম্বর মাসের খাদ্য ব্যবস্থাপক (ডাইনিং ম্যানেজার) নির্বাচন নিয়ে ড. সেলিমকে চাপ দিয়ে আসছিলেন ফজলুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান। এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনার দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বাধীন কয়েকজন শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের রাস্তায় ড. সেলিমকে জেরা শুরু করেন। পরে তারা শিক্ষককে অনুসরণ করে তার ব্যক্তিগত কক্ষে (তড়িৎ প্রকৌশল ভবন) প্রবেশ করেন। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তারা আনুমানিক আধা ঘণ্টা শিক্ষকের রুমে অবস্থান করেন। পরে কক্ষ থেকে বেরিয়ে ড. সেলিম দুপুরের খাবার খেতে ক্যাম্পাস থেকে নিজ বাসায় যান। দুপুর আড়াইটার দিকে তার স্ত্রী লক্ষ্য করেন তিনি বাথরুম থেকে বের হচ্ছেন না। দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।অভিযোগ ওঠে, দাফতরিক কক্ষে কুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বে কতিপয় ছাত্রের জেরা, অপমান, অবরুদ্ধ করে রাখা ও মানসিক নির্যাতনে ড. সেলিমের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনা তদন্তে দুই দফায় কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অপরদিকে, ড. সেলিমের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবিসহ পাঁচ দফা দাবিতে গত ২ ডিসেম্বর দুপুরে একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করে শিক্ষক সমিতি। প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধসহ দায়ী ছাত্রদের শাস্তির দাবি জানান শিক্ষকরা।