নতুনভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখি

0

মামুন হোসাইন, রাবি॥ করোনাময় বছরে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির স্মৃতি পেছনে ফেলে নতুন বছরে নতুন আশায় বুক বাঁধছেন বিশ্ববাসী। পিছিয়ে নেই বাংলাদেশের তরুণরাও। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নতুন বছরের ভাবনা ও প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ক্যাম্পাস সাংবাদিক মামুন হোসাইন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সোহেল বলেন, অতীতের ব্যর্থতার গ্লানি মুছে নতুনভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখি। নতুর বছর একজন ব্যক্তির কাছে যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি একটা জাতির জন্যেও তাৎপর্যপূর্ণ। পূর্বে আমরা যে সমৃদ্ধি অর্জন করেছি, নতুন বছরে তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। পাশাপাশি আমাদের তরুণ সমাজে নতুন বছর শুরু হোক সমৃদ্ধি আর উদ্ভাবনীমূলক কর্মপরিকল্পনা নিয়ে। তাতে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন হবে।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী সুমন আহমেদ বলেন, দেশ ও জাতি যেন একে-অপরের দুঃখ-কষ্টে পাশে থাকতে পারে, কারো যেন বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু না হয়। শিশুদের যাতে টাকার অভাবে স্কুলব্যাগ ফেলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে না হয়, কোনো মানুষ যেন অনাহারে দিন পার না করে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী ফরহাদ হোসাইন বলেন, নতুন বছর মানেই নতুন দিন, নতুন উপলক্ষ, নতুন উদ্দীপনা ও নতুন গতিতে এগিয়ে চলা। বয়স ও ভিন্ন শ্রেণিপেশা ভেদে নতুন বছরকে সবাই সাঁজিয়ে নেয় নতুন উৎসাহ ও পরিকল্পনায়। নতুন বছরে আমাদের পরিকল্পনা হতে হবে নিজেদের আরেকটু এগিয়ে নেবার এবং নতুন কিছু শেখার। তথ্যপ্রযুক্তির যুগে চাকরির বাজারে নিজেকে মেলে ধরতে হলে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেকে এগিয়ে রাখতে হবে। জানার আগ্রহ এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার কথা ভেবে বিভিন্ন ভাষায় দক্ষতা অর্জন করতে হবে। সর্বোপরি শিখতে, জানতে এবং নতুনত্বের চাঁদরে মুড়িয়ে নেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকতে হবে।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী তানিয়া আক্তার বলেন, নতুন বছর। কথাটি শুনেই বোঝা যায় আগামীর পথে একধাপ এগিয়ে যাওয়া। আরেকটি বছর অতিক্রম করা। প্রভাতের রবির স্নিগ্ধ আভায় শুরু হয়, আবার শেষ হয় রাতের আঁধারে। এভাবেই একেক বছর করে আমরা দাঁড়িয়েছি ২০২২ এর চৌকাঠে। এ নতুন বছর হোক দ্বন্দ্ব-লড়াই, বিদ্বেষ, নিপীড়নমুক্ত। বিশেষ করে, অন্যসব পরিচয়কে প্রাধান্য না দিয়ে আমরা সবাই মানুষ, এ পরিচয়কে যেন মননে গাথি ও ধারণ করি। এতে বন্ধ হবে ধর্মীয়, জাতিগত, শ্রেণি ও বর্ণবৈষম্য। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান বলেন, ২০২১ সালটি ভয় এবং উৎকণ্ঠার মধ্যে দিয়ে পার করেছি। প্রধান কারণ, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস। আমরা এই মহামারিতে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু, সহপাঠীসহ অনেক প্রিয় পরিচিত মুখগুলো হারিয়েছি। নতুন বছরে সবচেয়ে বেশি যেটা চাই, তা হলো একটা সুস্থ, সুন্দর পৃথিবী। করোনা মহামারির ভয়াবহতা দেখার পর এইটাই আমার প্রথম চাওয়া। আর যেহেতু শিক্ষার্থী হিসেবে একাডেমিক দিক দিয়ে অনেকটা ক্ষতি হয়েছে তাই নতুন বছরে সেই ক্ষতি যেন কিছুটা হলেও পূরণ করা যায়, সেই প্রত্যাশা। এই বছর আমরা সবাই অনেক মানুষিক চাপের মধ্য দিয়ে গিয়েছি। নতুন বছরে আমরা যেন শারীরিক এবং মানুষিকভাবে সুস্থ থাকি। ২০২২ এ আমরা যেন একটি সুন্দর, মানবিক পৃথিবী দেখতে পাই, সেই কামনা করি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী স্বপ্নীল চাকমা বলেন, ২০২১ এ প্রকৃতির চলমান ধারায় আমরা অনেক কিছুই হারিয়েছি এবং অনেক কিছুই অর্জন করেছি। বৈশ্বিক মহামারিতে চরম পর্যায়ে পৌঁছে যায় বিগত বছর। আমরা অনেক হতাশাগ্রস্ত থেকেও কীভাবে বাঁচতে হয়, তার নতুন এক অভিজ্ঞতা লাভ করেছি। নতুন বছরের প্রথম দিন, সাধারণ ভাষায় নববর্ষ হলো জর্জিয়ান ক্যালেন্ডার বা জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী জানুয়ারি মাসের ১ তারিখ। এই দিনটি জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী পূর্ব রোমের দেবতা জেনাসকে উৎসর্গ করা হয়। তিনি শুরুর দেবতা, তাকে জানুয়ারি নামেও ডাকা হয়। ২০২২ এ প্রযুক্তির দিকে বাংলাদেশ আরও অনেক অগ্রসর হোক। তরুণদের মধ্যে আত্মনির্ভরশীলতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির উন্নয়ন হোক। উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যহত থাকুক। সরকারের রূপকল্প বাস্তবায়ন করতে সব নাগরিক অংশগ্রহণ করবে বলে প্রত্যাশা।