সংলাপ সংলাপ খেলা করে কোনো লাভ হবে না : মির্জা ফখরুল

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এখন আবার সংলাপ সংলাপ খেলা শুরু হয়ে গেছে। নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক দলগুলোকে ডেকে ডেকে সংলাপ করছেন। আরে নির্বাচন কমিশন করে কী হবে? যে সরকার আছে সেই সরকারই তো নির্বাচনকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এই আওয়ামী লীগ যতক্ষণ ক্ষমতায় থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন গঠন করে কোনো লাভ হবে না। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই যে নির্বাচন নির্বাচন খেলা করে কোনো লাভ হবে না। সংলাপ সংলাপ করে কোনো লাভ হবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে টাঙ্গাইল জেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। বুধবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইল জেলা সদর মাঠে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, পুরোনো জিনিস নতুন বোতলের মধ্যে দেখিয়ে কোনো কাজ হবে না। এটা প্রমাণীত হয়ে গেছে যে নির্বাচনকালীন সময়ে যদি নিরপেক্ষ সরকার না থাকে তাহলে নির্বাচন কোনোদিন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হতে পারে না। সমাধান একটাই, তা হচ্ছে নির্বাচনের সময়ে একটা নিরপেক্ষ সরকার দিতে হবে। যেটাকে আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার বলি। আর এই সরকারকে পদত্যাগ করে কেয়ারটেকার গভর্নমেন্টকে দিয়ে তার অধীনে নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে এবং জনগণের দ্বারা সেই নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি আরো বলেন, ‘এই সরকার একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আটক করে রেখেছে। তিনি আজ জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। ডাক্তাররা বারবার বলছেন, যদি তার জীবন রক্ষা করতে হয় তাহলে তাকে এই মুহূর্তে বিদেশে পাঠানো দরকার। কিন্তু তারা শুনছেন না। আমরা সারাদেশে গণঅনশন করেছি, সমাবেশ করেছি, মিছিল করেছি, আমরা একটাই দাবি জানিয়ে আসছি- দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে তাকে চিকিৎসার সুযোগ দিন। তারা সেটা দিচ্ছেন না। আইন দেখান আইনমন্ত্রী। আরে আপনারা নিজেরাই তো বেআইনীভাবে বসে আছেন। আগের রাতে নির্বাচন করে বেআইনীভাবে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে জোর করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছেন। গত ১৪ বছর ধরে সমস্ত বেআইনী কাজ করে এই দেশকে আপনারা আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করেছেন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার গত ১৪ বছর ধরে অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়ে আমাদের পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীকে গুম করে হত্যা করেছে। ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে আজকে জোর করে নির্যাতন দমননীতি চালিয়ে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে এই সরকার।’ তিনি বলেন, ‘আজকে এই সরকার অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। মানুষকে নির্যাতন করার জন্য, হত্যা করার জন্য তারা র‌্যাবকে ব্যবহার করেছে, পুলিশকে ব্যবহার করেছে, আইন শৃঙ্খলাবাহিনীকে ব্যবহার করেছে। এভাবেই তারা টিকে আছে। বাংলাদেশ বর্তমানে একটি ফ্যাসিবাদী সরকার হিসেবে চিহ্নিত হয়ে গেছে গোটা পৃথিবীতে।’ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই দেশ, এই মাটি, এই সংবিধান এবং দেশনেত্রীকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের। আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলি। সেই দুর্বার গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই দানবীয় সরকারের পতন ঘটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি।’ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান। অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান, বদরুল হক মিলন, গৌতম চক্রবর্তী, আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, অ্যাডভোকেট আব্দুস ছালাম আজাদ, ফকির মাহবুব আনাম স্বপন, সাইদ সোহরাব, ওবায়দুল হক নাসির, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী, জাকির হোসেন নান্নু, হাসানুজ্জামিল শাহীন, অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল, বেনজীর আহমেদ টিটু ও অ্যাডভোকেট আলী ইমাম তপন প্রমুখ।