চৌগাছায় বোরোর বীজের দাম ৪ গুণ বিপাকে কৃষক

0

এম এ রহিম চৌগাছা (যশোর)॥ যশোরের চৌগাছায় বোরো বীজ ধানের দাম দুদিনে ব্যাবধানে চার গুণ বেড়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন কৃষকেরা। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে টানা তিন দিন অতিবৃষ্টিতে এলাকার বেশির ভাগ কৃষকের বোরো বীজতলা পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে নতুন করে বীজতলা তৈরীর জন্য বীজ কিনতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। আর এরই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দাম ৪/৫ গুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছেন বীজ ব্যবসায়ীরা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে টানা তিন দিনের অতিবৃষ্টিতে উপজেলায় আবাদকৃত ৫০ হেক্টর বোরো বীজতলার মধ্যে আক্রান্ত হয় ৩০ হেক্টর, সম্পূর্ন নষ্ট হয়েছে ৫ হেক্টর, আংশিক নষ্ট ২৫ হেক্টর যা মোট বীজলার শতকরা ২৫ %। সম্পূর্ন নষ্টের পরিমান ১১,২৫ হেক্টর। বুধবার উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে চাষিরা ধানের বীজ কিনতে চৌগাছা শহরে বীজ বাজারে দোকানে দোকানে ভিড় করতে থাকেন। চাহিদা বেশি দেখে ব্যবসায়ীরা কিছুক্ষণ পর পর বীজের দাম বাড়িয়ে দিতে থাকেন। উপজেলার আন্দারকোটা গ্রামের আশরাফুল ইসলাম বলেন, প্রথম দিকে বিভিন্ন জাতের শুভলতা ও স্বর্ণ ধানের বীজের দাম ছিল প্রতিকেজি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। সেই বীজ আজ (বুধবার) কিনতে হচ্ছে ১৬০ টাকা কেজি। চুটারহুদা গ্রামের আমিনুর রহমান বলেন, ২৫ কেজি চিকন জাতের ধানের পাতো (বীজতলা) করেছিলাম। বীজতলা অতিবৃষ্টিতে ডুবে গেছে। ওগুলো বাড়ির বীজ ছিল। তখন বাজারে এক কেজি বীজ ৬০/৬৫ টাকা ছিল। ফের বীজতলা তৈরীর জন্য আজ বাজার থেকে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে। বাঘারদাড়ী গ্রামের নুর ইসলাম বলেন, বীজ ব্যবসায়ীরা রাতারাতি বোরো বীজ ধানের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। শহরের বীজ হাটে বীজ কিনতে গিয়ে বীজের দাম শুনে মাথা ঘুরে গেছে। আমি বাজারে গিয়ে দেখি ১২০ টাকা কেজি বিক্রি করছিলেন। ক্রেতারা দোকানে ভিড় করায় কিছুক্ষণ পরে সেই ধান বীজের দাম চাইলেন ১৬০ টাকা কেজি। উপজেলার দেবালয় গ্রামের আনার হোসেন বলেন, আমি বাসমতি ধানের বীজ এক কেজির প্যাকেট কিনেছিলাম ১৯০ টাকা করে। গতকালও বাজারে এই দামই ছিল। আজ সে বীজের দাম ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা চাচ্ছেন ব্যাবসায়ীরা। চৌগাছা কামিল মাদ্রাসা মার্কেট বীজ হাটের ব্যবসায়ীরা দাম বেশির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, হঠাৎ করে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় অন্যদের মতো আমরাও বেশি দামে বিক্রি করছি। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমরেন বিশ্বাস বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে বোরোর বীজতলা ডুবে যাওয়ায় কৃষকদের নতুন করে বীজধান কিনতে হচ্ছে। বর্তমানে বিএডিসি বা বীজ ফার্মেও ধান বীজের মজুত নেই। বীজতলা নষ্টের সুযোগ কাজে লাগিয়ে অসাধু ব্যসায়ীরা হয়তো বীজ ধানের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। এ বিষয়ে কৃষদের কাছ থেকে কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হবে। এটা মুলত দেখার দায়িত্ব জেলা বাজার নিয়ন্ত্র কর্মকর্তার।