যশোরের ৩ উপজেলায় নৌকা ও বিদ্রোহীদের হামলা-পাল্টা হামলায় ৩০ জন আহত

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গতকাল যশোরের তিন উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে হামলা-পাল্টা হামলায় অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের ভেতর গুরুতর অবস্থায় ১৭ জনকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের সূত্রে জানা গেছে, সকাল ১০টার দিকে যশোরে বাঘারপাড়া উপজেলার ২ নং নারকেলবাড়ীয়া ইউনিয়নের দৌলতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ভোট কাটাকাটি হয়েছে। এ কাটাকাটিকে কেন্দ্র করে হামলা-পাল্টা হামলায় ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের ভেতর ৫ জনকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হচ্ছেন- দৌলতপুর গ্রামের নওয়াব আলী বিশ্বাসের দু’পুত্র আব্দুর রউফ মিন্টু (৪৫), বাবলুর রহমান (৪৫), আবু বক্কার বিশ্বাসের পুত্র খায়রুল ইসলাম (৪৫), মোহাম্মদ আলীর পুত্র তোফাজ্জেল হোসেন (৪০) ও জালাল বিশ্বাসের পুত্র তুষার হোসেন। আহতরা জানিয়েছেন, সকালে নির্বাচন শুরু হওয়ার পর নারকেলবাড়ীয়া ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান আবুল হোসেন সিকদারের আনারস প্রতীকের সমর্থকরা জোরপূর্বক ভোট কেটে নিচ্ছেন। এ সময় বাবলু সাহার নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা বাধা দিলে গোলযোগ বাধে। গোলযোগের এক পর্যায়ে একাটি পক্ষ হামলা চালালে অপরপক্ষ পাল্টা হামলা চালায়। এতে উভয় পক্ষের অন্ততপক্ষে ১০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে গুরুতর ৫ জনকে ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। স্থানীয় দু’জন মেম্বার পদপ্রার্থী শামসুর রহমান (তালা) ও টিউবওয়েল প্রতীকের আশরাফুল ইসলামের লোকজন এ হামলায় অংশ নেয়। তারা একেকজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থক। জহুরপুর ইউনিয়নের হুলিহট্ট ভোট কেন্দ্রে দক্ষিণ সলুয়া গ্রামের মোসলেম ভূঁইয়া (৫০) নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে বাড়িতে বসেছিলেন। ঘটনা জানতে পেরে বিদ্রোহী প্রার্থীর লোকজন তার বাড়ি হামলা চালায় এবং মারপিট করলে মোসলেম ভূঁইয়া গুরুতর আহত হন। একই সময় পদ্মবিলা গ্রামের আব্দুল হালিমের পুত্র সাকিব হোসেন (২০) ‘আনারস’ প্রতীকে ভোট দিতে যাচ্ছিলেন। তখন নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা সাকিব হোসেনের ওপর হামলা চালায় এবং বেদম প্রহার করলে তিনি মারাত্মক আহত হন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শার্শা উপজেলার বাড়আঁচড়া ইউনিয়নের বসতপুর ২ নং কলোনীতে নির্বাচনী হামলা হয়েছে। নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে রবিউল ইসলাম (৬০) ও তার পুত্র সুজন (৩২), বাড়িতে বসেছিলেন। এ সময় বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থীর আনারস প্রতীকের লোকজন তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে মারপিট করে। এতে ৮ জন আহত হন। আহতদের ভেতর গুরুতর অবস্থায় পিতা ও পুত্রকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দু’জনকে শার্শা উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্যরা মার খেয়ে নিজ বাড়িতে রয়েছেন বলে আহতরা জানিয়েছেন। আহত রবিউল ইসলাম জানিয়েছেন, তাদের ওপর দু’দফা হামলা হয়েছে। প্রথমে বাড়িতে হামলা হয়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসার পথে হামলা চালায়। সকালে শার্শার ডিহি ইউনিয়নের শালকোনা গ্রামে ভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে মেম্বার প্রার্থী মোরগ প্রতীকের শহিদুল ইসলাম ও তালা প্রতীকের তরিকুল ইসলাম তোতার ভেতর গোলযোগ বাধে। এ সময় তালা প্রতীকের লোকজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে ৪ জনকে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে। এদের ভেতর রয়েছেন মিজানুর রহমান (৪৫), সুমন আহমেদ (২২), ফারুক আহমেদ (২৫) ও তৌহিদুল ইসলাম রাসেল (২০)। আহতদের যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভোট দেয়া নিয়ে প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে গোলযোগের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে। এছাড়া নির্বাচনের আগে শনিবার সন্ধ্যায় টেংরালী সরকারি প্রাইমারী স্কুলের ভোট কেন্দ্রে হামলা হয়। এ হামলায় নৌকা সমর্থক ৬ জন আহত হয়েছেন। বিদ্রোহী প্রার্থী আনারস প্রতীকের সমর্থকরা হামলা চালালে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন আহতরা। হামলায় আহতরা হচ্ছেন- কওসার আলী (৫০), হযরত আলী (২৪), রাব্বী হাসান (২১) ও আমিরুল ইসলাম (২৬)। আহতদের বাড়ি টেংরালী গ্রামে। তাদের যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।