মোংলায় মেগা প্রকল্প ঘিরে চোরাই সিন্ডিকেট তৎপর

0

মোংলা (বাগেরহাট) সংবাদদাতা॥ মোংলা শিল্পাঞ্চল ও সরকারি বিভিন্ন মেগা প্রকল্প ঘিরে শক্তিশালী চোরাই সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। সিন্ডিকেটের সদস্যরা লোপাট করছে উন্নয়নমুখী প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ ও মালামাল। দুই দফায় অভিযান চালিয়ে লোপাট হওয়া প্রায় কোটি টাকার মালামাল উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড। একই সঙ্গে কয়েক দফায় পাচার হয়েছে লাখ লাখ টাকার মালামাল। এতে আর্থিক ক্ষতিসহ উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যক্রম বিঘিœত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, বর্তমান সরকারের আমলে একসময়ের মৃতপ্রায় মোংলা সমুদ্রবন্দর প্রাণ ফিরে পায়। বৃদ্ধি পেতে থাকে পণ্য আমদানি-রফতানিসহ বিদেশি জাহাজের আগমন। বন্দরের গতি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গেই তৎপর হয়ে উঠে চোরাকারবারি সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেটের সদস্যরা বাণিজ্যিক জাহাজের পাশাপাশি বন্দর এলাকার শিল্পপ্রতিষ্ঠান, রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রসহ সরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে হানা দিচ্ছে। নিরাপত্তাকর্মীদের সহায়তায় লুট করছে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত ক্যাবল ও যন্ত্রাংশ। সম্প্রতি চক্রের সদস্যরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। চোরাই মালামাল চিলা, জয়মনি ও কানাইনগরসহ মোংলা পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় মজুত করে তারা। পরে ট্রাকযোগে খুলনা, যশোর, ঢাকা ও চট্টগ্রামে পাচার করা হয়। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে কোস্টগার্ডের দুই দফা অভিযানে প্রায় কোটি টাকার চোরাই মালামালসহ দুটি ট্রলার আটক হয়। কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের কর্মকর্তা লে. কমান্ডার হাসানুজ্জামান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে প্রথম দফায় কানাইনগর পশুর নদী এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৩৫০ কেজি ওজনের ২৩টি এসএস পাইপ উদ্ধার করা হয়। এ সময় নৌকাসহ রবিউল শেখ (২৫) নামের এক চোরাকারবারিকে গ্রেফতার করা হয়। একই এলাকায় দ্বিতীয় দফায় পরিত্যক্ত অবস্থায় চোরাইকৃত ৩৫০ কেজি ওজনের নয়টি এসএস পাইপ ও ৬০ কেজি ওজনের ৩৯টি এসএস পাইপ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত মালামালের মূল্য প্রায় ৬৮ লাখ টাকা। পরে উদ্ধারকৃত মালামালসহ চোরাই সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যকে মোংলা থানায় সোপর্দ করা হয়। খবর পেয়ে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্মরত ভারত হেভি ইলেক্ট্রিক্যালস লিমিটেডের প্রকৌশলী রফিকুল ইসলামসহ চার সদস্যের প্রতিনিধি দল থানায় উপস্থিত হন। এসব মালামাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে পাচার হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন তারা। প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পের কাজের জন্য ওসব মালামাল ভারত থেকে আনা হয়েছিল। বিভিন্ন সময় আরও লাখ লাখ টাকার মালামাল লোপাট হয়েছে। এ ঘটনায় রামপাল থানায় একাধিক অভিযোগ ও মামলা রয়েছে। তবে প্রকল্পের নিরাপত্তাবেষ্টনীর মধ্যে কীভাবে চোরাই সিন্ডিকেটের সদস্যরা ঢুকছে এমন প্রশ্নের জবাব দেননি তিনি। মোংলা থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, অভিযানে উদ্ধার মালামাল ও এক চোরাকারবারি গ্রেফতারের ঘটনায় মোংলা থানায় মামলা হয়েছে। এ মামলার সূত্র ধরে পুলিশ তদন্ত করছে। গ্রেফতার ব্যক্তির রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। সিন্ডিকেট চক্রকে দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।