ইংল্যান্ডের শক্তি ও দুর্বলতা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ এই বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এক নম্বর র‌্যাংকিংয়ের আসনে বসেই অংশ নিয়েছে ইংল্যান্ড। ব্যাটিং-বোলিং দিয়ে দোর্দণ্ড প্রতাপ দেখিয়ে তারা উঠেছে সেমিফাইনালে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সুপার টুয়েলভ শেষ করার ম্যাচে হারলেও প্রথম চার ম্যাচে ছড়ি ঘুরিয়েছে তারাই। বুধবার (১০ নভেম্বর) আবু ধাবিতে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলবে তারা ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে। এই ম্যাচের আগে তারা হারিয়েছে ওপেনার জেসন রয়কে, যিনি গত আসরের সেমিফাইনালের ম্যাচসেরা। কাফ ইনজুরিতে বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেছে এই আসরে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৬১ রান করা এই ব্যাটসম্যান। তার জায়গায় দলে ঢুকেছেন জেমস ভিন্স, যিনি গত জুলাইয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ইংল্যান্ডের জার্সিতে সবশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন, পেয়েছেন অভিষেক আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরিও। এখন পর্যন্ত তিনি ছাড়াও দলে অব্যবহৃত ক্রিকেটার আছেন টম কারান, ডেভিড উিইলিয়া, রিচি টপলি ও স্যাম বিলিংস। কে একাদশে ঢুকছেন তা এখনো আলোচনার মধ্যে সীমাবদ্ধ। তবে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন জস বাটলারের সঙ্গে ওপেনিংয়ে কে? জনি বেয়ারস্টো ও ডেভিড মালান গত জুনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একসঙ্গে ওপেনিং করেছেন। মঈন আলী ও লিভিংস্টোনেরও এই জায়গায় খেলার অভিজ্ঞতা আছে। তবে বাটলারের সঙ্গে জনি বেয়ারস্টোই ওপেনিং করার লড়াইয়ে এগিয়ে।

জেসনের অভাববোধ ইংল্যান্ড করবেই। তারপরও তাদের মূল শক্তি ব্যাটিং অর্ডার। টপ থেকে মিডল অর্ডারে ভালো পারফরম্যান্স দেখা গেছে সুপার টুয়েলভে। বিশেষ করে বাটলার অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঝড়ো ইনিংস খেলে ইংল্যান্ডের আশার প্রতীক হয়ে উঠেছেন। অজিদের বিপক্ষে ৩২ বলে ৭১ ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৬৭ রানে ১০১ রান, দুটোতেই ছিলেন অপরাজিত। আইপিএলে ব্যাটিং প্রশ্নবিদ্ধ থাকলেও অধিনায়ক এউইন মর্গ্যান আসল সময়ে জ্বলে উঠেছেন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩৬ বলে ৪০ রানের ইনিংসে ছিল ৩ ছয় ও এক চার। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জেসন চোট নিয়ে মাঠের বাইরে যাওয়ার পর তিনে নামতে হয় মিডল অর্ডারে এই আসরে ব্যাট করা মঈন আলী। বাউন্ডারি ওভার বাউন্ডারিতে দলকে জয়ের আভাস দিয়েছিলেন তিনি, ২৭ বলে ৩ চার ও ২ ছয় ছিল তার ৩৭ রানের ইনিংসে। এছাড়া মালান ও লিভিংস্টোন সুযোগ পেয়ে তাত কাজে লাগান যথাক্রমে ৩৩ ও ২৮ রান করে। বোলিংয়ে মূল শক্তি দেখিয়েছে ইংল্যান্ড। ক্রিস ওকস, ক্রিস জর্ডানের পেসের সঙ্গে মঈন ও আদিল রশিদের স্পিনে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানরা ভুগেছে। তবে তাদের জন্য বড় ধাক্কা টাইমাল মিলসের ছিটকে যাওয়া। চার ম্যাচে ৭ উইকেট নেওয়া এই পেসার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ছিলেন না। প্রোটিয়াদের ১৮৯ রানের বিশাল সংগ্রহে তার শূন্যতা ভালোভাবে টের পেয়েছে ওয়ানডের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। বেন স্টোকস ও জোফরা আর্চারের অভাব খুব অনুভূত হয়নি ইংল্যান্ডের চলতি বিশ্বকাপ যাত্রায়। তবে চোখে পড়ার মতো দুর্বলতা ইংল্যান্ডের দেখা গেছে ওপেনিং জুটিতে। সর্বোচ্চ ৬১ রান এসেছে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জেসন ও বাটলারের জুটিতে। এটি ছাড়া ওপেনিংয়ে ভালো শুরু হয়নি একবারও। বাটলার নতুন সঙ্গীকে নিয়ে এই দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারেন কি না সেটাই দেখার। আরেকটি ব্যাপার ভোগাতে পারে ইংল্যান্ডকে। বোলারদের কল্যাণে প্রতিপক্ষকে সীমিত রানের মধ্যে আটকে দেওয়ায় রান তাড়া করতে নেমে মিডল অর্ডারকে খুব একটা পরীক্ষা দিতে হয়নি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি ব্যাটসম্যানকে খেলতে হয়েছে। পাঁচ ম্যাচের মধ্যে প্রথমবার ১১ ব্যাটসম্যান ক্রিজে নেমেছেন, কিন্তু আশার আলো দেখাতে পারেননি অনেকেই। সেক্ষেত্রে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে আগে ব্যাট করতে নামলে ‘অস্বাভাবিক’ কিছু ঘটতেও পারে। আর পরে ব্যাট করলে ব্যাটসম্যানদের কঠিন পরীক্ষা বাঁচাতে ভূমিকা রাখতে হবে ওকস-রশিদদের।