অভাবে কিডনি বিক্রি করতে এসে পুলিশের হাতে ধরা এক যুবক

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অভাবে পড়ে কিডনি বিক্রি করতে ঝিনাইদহ থেকে যশোরে এসেছিলো রানা ওরফে বাপ্পী (২০) নামে এক যুবক। কিন্তু সে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর পুলিশ তাকে আটক করেছে। রানা ওরফে বাপ্পী ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পাগলাকানাই নারকেলবাড়িয়া গ্রামের মনিরুল মোল্যার পুত্র। রানা ওরফে বাপ্পী জানিয়েছেন, ৪ মাস আগে মাগুরা সদর উপজেলার বারাশি গ্রামে ফরিদ হোসেনের কন্যা সুমাইয়া খাতুনকে তিনি বিয়ে করেছেন। বিয়ের পর অর্থ উপার্জনের জন্য তার মাতা ‘গ্রামবাংলা’ নামে একটি গাড়ি কিনে দেন। কেনার সময় শর্ত ছিল ভাড়া থেকে যা আয় হবে তার একটি অংশ মাকে দিয়ে গাড়ি কেনার টাকা পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু তা হয়নি। গাড়িতে যা আয় হয়, তা দিয়ে তার সংসার চলে না। কয়েকদিন টাকা দিতে না পারায় পিতা ফরিদ হোসেন রেগে যান এবং চারদিন আগে রানার কাছ থেকে গাড়িটি কেড়ে নেন পিতা। কেড়ে নেয়ার কারণে রানার উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে যায়। তখন সংসারে দেখা দেয় প্রচন্ড অভাব। রানা জানিয়েছেন, প্রচন্ড অভাবের মধ্যে তার স্ত্রী সুমাইয়া খাতুন স্বামীর সংসার ফেলে পিত্রালয়ে চলে যায়। যাবার সময় রানাকে শর্ত দিয়ে যায়, তুমি যদি গাড়ি কিনতে পারো, তাহলে তোমার বাড়ি আসবো। নইলে আমার পথ আমি দেখবো। রানা জানান, স্ত্রীর কথা শুনে তিনি কিভাবে টাকা জোগাড় করবেন সে চিন্তায় ভুগছিলেন। এক পর্যায়ে নিজের কিডনি বিক্রি করে গাড়ি কেনার জন্যে মন স্থির করেন। এরপর ঝিনাইদহের কোন জায়গায় কিডনি বিক্রি করতে না পেরে গতকাল বিকেলে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে আসেন রানা ওরফে বাপ্পী। জরুরি বিভাগের সামনে এসে তিনি জিজ্ঞাসা করেন, এখানে কোন কিডনি বিক্রি করা যাবে কী না । এ খবর জানতে পেরে সেখানে উপস্থিত লোকজন হাসপাতালের কর্তব্যরত পুলিশকে জানান। তখন পুলিশসদস্যরা রানা ওরফে বাপ্পীকে হেফাজতে নেন এবং কোতয়ালি থানায় খবর দেন। পরে এসআই রেজাউল ইসলাম এসে রানা ওরফে বাপ্পীকে থানায় নিয়ে যান। রাতে এ রিপোর্ট লেখার সময় রানা থানা হাজতে ছিল। এসআই রেজাউল ইসলাম জানিয়েছেন, আর্থিক সংকটের কারণে সে কিডনি বিক্রি করতে এসেছিল। অভিভাবকরা আসলে তাদের হাতে তুলে দেয়া হবে। যশোর সিভিল সার্জন অফিসে যোগাযোগ করা হলে এমওসিএস ডা. রেহেনেওয়াজ বলেন, ডিডনি বিক্রি করার কোন অনুমতি নেই। তারপরও যদি কারোর কিডনির দরকার হয়। তাহলে সিভিল সার্জনের মাধ্যমে অনুমতি নিয়ে সেটা করতে হবে। তবে কিডনি ট্রান্সফার করার মতো কোন ব্যবস্থা যশোরে নেই।