ধর্মতলায় রঙমিস্ত্রি হত্যার ঘটনায় মামলা, আটক দম্পতি কারাগারে

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর শহরের ধর্মতলা রেললাইন এলাকায় রঙমিস্ত্রি আবুল কালামকে (৪০) পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ৭ জনের বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে নিহতের স্ত্রী সায়েরা বেগম মামলাটি করেছেন। পুলিশ এই মামলার এজাহারভুক্ত এক দম্পতিকে আটক করে। শুক্রবার আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। আবুল কালাম মামলার আসামিরা হলেন-ধর্মতলা রেললাইন এলাকার জিন্দার শেখের ছেলে দিপু শেখ (৩৩), তার স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার পলি (৩০), খোলাডাঙ্গা কদমতলা হ্যাচারিপাড়ার কলমিস্ত্রি শাহ আলমের ছেলে নাজমুল ওরফে নাজু (২৮), ধর্মতলা হঠাৎপাড়ার আব্দুল মালেকের ছেলে আশিকুজ্জামান ওরফে ভাগ্নে সুমন (৩০), আরবপুর মৎস্য ভবনের সামনের অরুন ঋষির ছেলে সাগর ঋষি (২৪), মধু সুইপারের ছেলে দীপন ওরফে ডাবল (২৫) ও ধর্মতলা রেলক্রসিং হিন্দুপাড়ার পাশের রমজান আলীর ছেলে রাজিব হোসেন (৩২)। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো ৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।
নিহত আবুল কালামের স্ত্রী সায়েরা বেগমের অভিযোগ, তার স্বামী রঙমিস্ত্রি ছিলেন। মাস চারেক আগে জমির সীমানা প্রাচীর নিয়ে আসামি দিপু ও পলির সাথে তার স্বামী আবুল কালামের কথা কাটাকাটি হয়। এরই জের ধরে উল্লিখিত আসামিরা তার স্বামীকে খুন জখমের হুমকি দিয়ে আসছিলেন। গত ২৮ অক্টোবর রাত আড়াইটার দিকে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আসামিরা তার স্বামীকে ঘর থেকে উঠিয়ে নিয়ে যান। তাকে বাড়ির সামনে নিয়ে আসামি দিপু ও পলির হুকুমে অন্য আসামিরা লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। পরে তার স্বামী আবুল কালামের চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন সেখানে ছুটে গেলে আসামিরা তাকে প্রায় অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে পালিয়ে যান। এ ঘটনার পর তার স্বামীকে উদ্ধার করে স্থানীয় চিকিৎসক দিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। কিন্তু গত ৩০ অক্টোবর তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর ৩ নভেম্বর তাকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে আসা হয়। পরদিন ৪ নভেম্বর সকাল ১০টার দিকে শারীরিক অবস্থা আরো খারাপ হলে ফের তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পুলিশ জানায়, আবুল কালামকে হত্যার অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার রাতে নিহতের স্ত্রী সায়েরা বেগম ৭ জনকে আসামি করে কোতয়ালি থানায় মামলা করেন। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই কামাল হোসেন এজাহারভুক্ত আসামি দিপু ও পলিকে তাদের বাড়ি থেকে আটক করেন। শুক্রবার আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এদিকে দিপু শেখ জানান, তারা সকলেই সরকারি জায়গায় থাকেন। এ কারণে জমি নিয়ে কালামের সাথে তার কোনো বিরোধের সুযোগ নেই। মূলত কালাম একজন চোর এবং মাদকাসক্ত। তার সাথে কালাম এক সময় রঙমিস্ত্রির কাজ করতেন। কিন্তু তার বাড়িতে চুরি করার কারণে তিনি তাকে আর কাজে নিতেন না। কালামের সাথে কথাও বলতেন না। দিপু শেখ আরো বলেন, কালামকে লোকজন মারধর করেছে এটা সত্য। কিন্তু এ ঘটনার সাথে তিনি বা তার স্ত্রী জড়িত নন। তাদেরকে উদ্দেশ্যমূলক মামলায় আসামি করা হয়েছে।