নিষিদ্ধ সংগঠনের কাছে ইমরান সরকারের ‘হার’, অনুমতি নির্বাচনের

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ সহিংসতা বন্ধে নিষিদ্ধ সংগঠন তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তানের (টিএলপি) সঙ্গে গোপন চুক্তি করে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে ইমরান খানের সরকার। চুক্তি অনুসারে, সংগঠনটির কয়েক হাজার কর্মীকে জেলে থেকে মুক্তি দিচ্ছে পাকিস্তান সরকার। এরই মধ্যে পাঞ্জাব ও ইসলামাবাদের কারাগার থেকে ছাড়া পেয়েছে টিএলপির কয়েকশ কর্মী। একে অনেকটা বিজয় হিসেবেই দেখছে ধর্মভিত্তিক সংগঠনটি। খবর গালফ নিউজের। ফ্রান্সে মহানবী (স)-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনের প্রতিবাদে গত বছর পাকিস্তানজুড়ে বিক্ষোভ শুরু করেছিল টিএলপি। চলতি বছরের শুরুর দিকে বিক্ষোভ সহিংস হয়ে উঠলে সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন ইমরান খান এবং টিএলপির প্রধান সাদ রিজভিকে গ্রেফতার করা হয়। রিজভির মুক্তি দাবিতে গত ২২ অক্টোবর লাহোর থেকে ইসলামাবাদ অভিমুখে লং মার্চ শুরু করে টিএলপির হাজার হাজার কর্মী-সমর্থক। এসময় বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয় তাদের। এতে পুলিশসহ অন্তত ১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। গ্রেফতার করা হয়েছে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীকে। এরপরও যেকোনো মূল্যে লং মার্চ সমাপ্ত করার ঘোষণা দেন টিএলপি নেতারা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গত ৩১ অক্টোবর নিষিদ্ধ সংগঠনটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পাকিস্তান সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এসময় তাদের মধ্যে একটি চুক্তি হয়। এখন পর্যন্ত চুক্তির বিস্তারিত প্রকাশ করেনি কোনো পক্ষই। তবে চুক্তির পর থেকেই গ্রেফতার টিএলপি কর্মীদের মুক্তি ও তাদের নামে মামলা প্রত্যাহার শুরু করেছে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ। গত বুধবারও (৩ নভেম্বর) আটজনকে মুক্তি দিয়েছে পাঞ্জাব সরকার। এর আগের দিন প্রদেশটির বিভিন্ন শহর থেকে মুক্তি পেয়েছেন এক হাজারের বেশি টিএলপি কর্মী। পাঞ্জাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, আগামী দিনগুলোতে আমরা আরও টিএলপি কর্মীকে মুক্তি দেবো। তবে যাদের বিরুদ্ধে হত্যা, বেসামরিক লোকদের ওপর আক্রমণ বা সম্পদহানির মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য হবে না।
টিএলপির সঙ্গে পাকিস্তান সরকারের সমঝোতায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী আলী মোহাম্মদ খান। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে জানিয়েছেন, সরকার-টিএলপি চুক্তি বাস্তবায়ন দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে এবং এর প্রথম ধাপে সরকারি হেফাজতে থাকা টিএলপি কর্মীদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। এদিকে, গত ১ নভেম্বর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, টিএলপির সঙ্গে পাকিস্তান সরকারে চুক্তি অনুসারে দুই হাজারের বেশি কর্মীকে মুক্তি দেওয়া হবে। পাশাপাশি, নির্বাচনে অংশগ্রহণেরও অনুমতি পাচ্ছে সংগঠনটি। বিনিময়ে ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে পাকিস্তান থেকে বহিষ্কারের দীর্ঘদিনের দাবি থেকে সরে দাঁড়াবে টিএলপি। তবে সংগঠনের প্রধান সাদ রিজভি ছাড়া পাচ্ছেন কিনা, তা নিশ্চিত নয়।