আজ শ্রীশ্রী শ্যামা পূজা

0

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আজ বৃহস্পতিবার সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শ্রীশ্রী শ্যামা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। কার্তিক মাসের অমবস্যা তিথিতে শ্যামা পূজা বা কালী পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। হিন্দু পূরাণ মতে দেবী দুর্গারই একটি শক্তি কালী। কালী পূজা হচ্ছে শক্তির পূজা। জগতের সব অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে শুভশক্তির বিজয়ের মধ্যেই রয়েছে কালীপূজার মাহাত্ম। কালী দেবী তার ভক্তদের কাছে শ্যামা, আদ্য মা, তারা মা, চামুণ্ডি, ভদ্রকালী, দেবী মহামায়াসহ বিভিন্ন নামে পরিচিত। কালী পূজার দিন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের বাড়িতে ও শ্মশানে সন্ধ্যা থেকেই প্রদীপ জ্বালানো হয়। এর মধ্য দিয়ে তারা স্বর্গীয় পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনদেরও স্মরণ করেন। এই আনুষ্ঠানিকতাকে বলা হয় দীপাবলী। সম্প্রতি শারদীয় দুর্গাপূজায় দেশব্যাপী তাণ্ডবের প্রতিবাদে এবার অনাড়ম্বর শ্যামা পূজা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। দুর্গাপূজার মতো কালীপূজাতেও প্রতি বছর বাড়িতে বা মণ্ডপে মৃন্ময়ী প্রতিমা নির্মাণ করে পূজা করা হয। মন্দিরে বা গৃহে প্রতিষ্ঠিত প্রস্তরময়ী বা ধাতুপ্রতিমাতেও কালীপূজা করা হয়। তান্ত্রিক পদ্ধতিতে মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে পূজা অনুষ্ঠিত হয়। দেবীকে ছিন্নমস্তকসহ বলির পশুর রক্ত, মিষ্টান্ন, অন্ন বা লুচি, মাছ ও মাংস উৎসর্গ করা হয়। তবে গৃহস্থ বাড়িতে সাধারণত অতান্ত্রিক ব্রাহ্মণ্যমতে আদ্যাশক্তি কালীর রূপে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়। লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, কালী শ্মশানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। এই কারণে বিভিন্ন অঞ্চলে শ্মশানে মহাধুমধাম করে শ্মশানকালী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। দেশের হিন্দু সম্প্রদায় উৎসাহ-উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে শ্যামা পূজা উদযাপন করে থাকে। কিন্তু এবার সকল প্রকার আড়ম্বর বর্জন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ। মণ্ডপে মণ্ডপে পূজার আনুষ্ঠানিকতাই শুধু সম্পন্ন হবে। আরতি, ধর্মীয় সংগীত, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোকসজ্জাসহ লোকাচারের সব কর্মসূচিও বর্জন করা হয়েছে। শুধু সন্ধ্যায় মন্দির, মণ্ডপ ও হিন্দুদের ঘরে ঘরে দীপাবলীর প্রদীপ প্রজ্বলন করা হবে। আলোক সজ্জার বদলে শুধু সাদা আলো জ্বলবে বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছে কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন পরিষদ। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ যশোর জেলা শাখার সভাপতি অসীম কুন্ডু লোকসমাজকে জানান, দুর্গা পুজোয় দেশজুড়ে যে তাণ্ডব চলেছে তারই প্রতিবাদে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মোতাবেক এবার অনাড়ম্বর আয়োজনের মাধ্যমেই আমরা দীপাবলীর আরাধনা করবো।