মানুষের দোয়া-ভালোবাসা কবুল করো

0

আজ চার নভেম্বর। আজ দৈনিক লোকসমাজের প্রতিষ্ঠাতা তরিকুল ইসলামের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৮ সালের এই দিনে মহান আল্লাহ তাঁর এই প্রিয় বান্দাকে ফিরিয়ে নিয়েছিলেন চিরতরে। দিনটি লোকসমাজ পরিবারের জন্য অবশ্যই পিতৃহারা শোকের দিন। গত তিনবছর আমরা এদিনে তাঁকে স্মরণ করি। স্মরণ করি তাঁর সাথে আমাদের স্মৃতিময় ক্ষণগুলো। আবেগ আপ্লুত হই। ঝরে বেদনায় অশ্রু। দোয়া করি, কামনা করি, জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব হোক। এবারও তাঁর ব্যতিক্রম নয়। আমরা জানি তাঁর পরিবার ও দল একই রকম কর্মসূচীর সাথে মানবকল্যাণে বেশ কিছু কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের মাঝে পোশাক বিতরণ, পঙ্গু অসহায়দের জন্য হুইল চেয়ার প্রদান, এতিমখানায় শিশুদের মাঝে উন্নতমানের খাদ্যবিতরণ রয়েছে কর্মসূচিতে। তাঁর প্রাণপ্রিয় দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবারও যশোর ও ঢাকাতে আয়োজন করেছে স্মরণসভার। আমরা অতীতের মতো সম্পৃক্ত থাকবো আমাদের দায়িত্বে। অতীত অভিজ্ঞতায় বলতে পারি এবারও শহর ও গ্রামের অনেক বাড়িতে দোয়া মাহফিল, তবারক বিতরণ হবে। এসব আয়োজকরা মূলত তাঁর ভক্ত। দূর শহরেও অনেক ভক্ত এমন আয়োজন এবারও করবে। আসলে এমন ভক্ত পাওয়া রীতিমত ভাগ্যেও ব্যাপার। তবে, আমাদের প্রশ্ন ভাগ্যটা আসলে তরিকুল ইসলামের নাকি ভক্তের? আমাদের বিশ্বাস ভাগ্যটা ভক্তের। তাদের সৌভাগ্য যে তারা তরিকুল ইসলামকে নেতা হিসেবে পেয়েছিল।
আমরা জানি এবং ভুরি ভুরি প্রমাণও আছে যে, একটু মিষ্টি ব্যবহার আর কিছু নগদ অর্থ ব্যয় করলে অনেক ভক্তের ভক্তি পাওয়া যায়। অনেক রাজনীতিক তা করেনও। কিন্তু তরিকুল ইসলাম এর ব্যতিক্রম। খুব সুদর্শন বা মিষ্টি ব্যবহারের জন্য তিনি ভক্তি বা ভক্ত পাননি। দেশজুড়ে তিনি যে লাখ লাখ ভক্ত রেখে গেছেন, তা তিনি নিজ কর্মগুণেই অর্জন করেছিলেন। কী কী কাজ করে তিনি দেশব্যাপী এমন বিশাল ভক্তকুল সৃষ্টি করেছিলেন তা লিখতে গেলে এক ইতিহাস হয়ে যাবে। তার চেয়ে নিজ কর্মগুণে তিনি মানুষের কাছ থেকে কী কী উপাধিতে ভূষিত হয়েছিলেন, তার সামান্য অংশ তুলে ধরলেই তরিকুল ইসলামকে নিশ্চয় চেনা যাবে। ছাত্রজীবন থেকে মৃত্যু পর্যন্ত অর্ধশতাধিক বছরের রাজনৈতিক জীবনে দফায় দফায় জেল, জুলুম, নির্যাতন আর লোভ উপেক্ষা করে দেশ ও জনগণের কল্যাণে তিনি যা করেছেন তার জন্য দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় যশোর ঈদগাহের জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে তাঁকে ‘মজলুম জনতার নেতা’ বলে সম্বোধন করেছিলেন। যশোর থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে তিনি আজও ‘উন্নয়নের কারিগর’ পরিচয়ে পরিচিত। জনকল্যাণে কতটা উন্নয়নমূলক কর্ম করলে মানুষ এমন নাম দেয় তা সহজেই অনুমেয়। ‘জননেতা’ পরিচিতি তিনি সেই পৌর নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েই পেয়েছিলেন। নামের আগে পরে পাঁচবার ‘মন্ত্রী’ পরিচিতি দিয়েছিল সরকার তথা রাষ্ট্র। ‘অসাম্প্রদায়িক, মানবতাবাদী বিপদের বন্ধু’ এসব উপাধি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় আর সামাজিক সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষই দিয়েছে বারবার। এমনি আরও অনেক কিছু দিয়েছে জনতা শুধু তাঁকে ভালোবেসে। সে ভালোবাসাকে ইতিহাসে লিপিবদ্ধ করেছিল তারা ৫ নভেম্বর শেষ বিদায়ে। জানাজায় অশ্রুসিক্ত লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতি আর শবমিছিলের ইতিহাস আমরা আজও শ্রদ্ধায় স্মরণ করি। করবো চিরদিন। বলবো আল্লাহ্ তুমি মানুষের ভালোবাসা ও দোয়া কবুল করো। তাঁকে নসিব করো জান্নাতুল ফেরদৌস।