নথি গায়েব সিন্ডিকেটের সন্ধানে সিআইডি

0

মরিয়ম চম্পা॥ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ক্রয় ও সংগ্রহ শাখা থেকে ১৭টি গুরুত্বপূর্ণ নথি গায়েবের এক সপ্তাহ পার হলেও হারানো নথির সন্ধান মেলেনি। এদিকে হারানো নথি উদ্ধারে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কর্মকর্তারা। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মন্ত্রণালয়ের ৯ জন কর্মচারী এবং একজন ঠিকাদারকে পৃথকভাবে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের ৯ কর্মকর্তা-কর্মচারী গতকাল এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সিআইডি কার্যালয়েই ছিলেন। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নথি গায়েবের বিষয়টি অত্যন্ত জটিল। রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে। এই নথি গায়েবের সঙ্গে বড় কোনো সিন্ডিকেট কাজ করছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নথির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত সোমবার রাতে রাজশাহী মেডিকেলের সরঞ্জামাদি সরবরাহের ঠিকাদার নাসিমুল গনি টোটনকে সিআইডি কার্যালয়ে আনা হয়। প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মঙ্গলবার বিকালে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। প্রাথমিকভাবে তাকে ছেড়ে দেয়া হলেও তদন্তের স্বার্থে টোটন নজরদারিতে থাকবেন। সিআইডি কার্যালয়ে ঠিকাদার টোটনকে একে একে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট ৯ কর্মচারীর মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মন্ত্রণালয়ের এই কর্মচারীদের তিনি কোনোভাবে চেনেন কিনা? এ সময় টোটন জানান, সম্প্রতি তিনি কোভিড আক্রান্ত হলে দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। গত দুই থেকে আড়াই মাসের মধ্যে তিনি মন্ত্রণালয়ে যাননি। এ ছাড়া মন্ত্রণালয়ের এই কর্মচারীদের তিনি কোনোভাবে চেনেন না। টোটনের সঙ্গে অন্য কোনো ঠিকাদার বা ঊর্ধ্বতন কারও সঙ্গে কোনো শত্রুতা আছে কিনা এটাও জানতে চাওয়া হয়। এ সময় টোটন তাদের জানান, সংশ্লিষ্ট অন্য ঠিকাদারদের সঙ্গে তার অনেক ভালো সম্পর্ক। জানামতে তার কোনো শত্রু নেই।
এদিকে সিআইডি’র জিজ্ঞাসাবাদে একেক সময় একেক রকম তথ্য দিচ্ছেন তাদের হেফাজতে থাকা কর্মচারীরা। সংস্থাটির তদন্ত কর্মকর্তারা এখন পর্যন্ত ফাইলের কোনো হদিস পাননি। গত রোববার স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগ থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহের পাশাপাশি সন্দেহভাজন হিসেবে ৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিআইডি মালিবাগ কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। গত সোমবার স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের আরও ৩ কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিআইডি কার্যালয়ে আনা হয়। তদন্ত সূত্র জানায়, এ ঘটনায় সিআইডি’র নজরদারিতে সন্দেহভাজনদের তালিকায় আরও কয়েকজনের নাম যুক্ত হয়েছে। সহসাই তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিআইডি কার্যালয়ে আনা হতে পারে। তবে কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদে থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো মামলা না হলেও খুব শিগগিরই মামলা হবে বলে জানায় সূত্র। এ বিষয়ে অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান বলেন, নথি চুরির ঘটনায় সিআইডি’র একাধিক টিম কাজ করছে। চুরি হওয়া নথি উদ্ধার করা এখন মুখ্য বিষয়। নথি উদ্‌ঘাটনে এবং তদন্তের স্বার্থে অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।