মানবপাচার হচ্ছে যেসব রুটে

0

রিয়াদ তালুকদার॥ দেশে আটটি রুটে সক্রিয় আছে মানবপাচারকারীরা। বেশ কয়েকটি সিন্ডিকেট আছে এদের। পাচারকারী চক্রের কয়েকজনকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য পেয়েছে র‌্যাব। এ ছাড়া রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে রয়েছে সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্যরা। তাদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে বলেও জানিয়েছে র‌্যাব। র‌্যাব বলছে, রাজধানী থেকে ৮টি রুট ব্যবহার করে সীমান্তবর্তী এলাকায় বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষদের পাচার করা হচ্ছে। একটি চক্র ঢাকা থেকে মানিকগঞ্জ-ফরিদপুর-মাগুরা হয়ে ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা- জীবননগর-মহেশপুর-নেপা দিয়ে মানবপাচার করছে। আরেকটি চক্র ঢাকা-মানিকগঞ্জ-ফরিদপুর-মাগুরা হয়ে যশোর-সাতক্ষীরা-দেবহাটা সীমান্ত দিয়ে পাচারে সক্রিয়। ঢাকা-মানিকগঞ্জ-ফরিদপুর-মাগুরা হয়ে আরেকটি চক্র যশোর বেনাপোল সীমান্তে তৎপর।
ঢাকা-টাঙ্গাইল-সিরাজগঞ্জ-বগুড়া হয়ে একটি চক্র রংপুর-লালমনিরহাট-পাটগ্রাম ও দহগ্রাম দিয়ে পাচার করছে। ঢাকা-টাঙ্গাইল-সিরাজগঞ্জ-বগুড়া হয়ে জয়পুরহাট-বস্তাকর সীমান্ত দিয়েও পাচার করছে একটি সিন্ডিকেট। ঢাকা-নরসিংদী-ব্রাহ্মণবাড়িয়া হয়ে একটি চক্র মৌলভীবাজার-পশ্চিম শিলুয়া সীমান্তে সক্রিয়। আরেকটি চক্র ঢাকা-কুমিল্লা-চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার-টেকনাফ জালিয়াপাড়া সীমান্তে পাচার করছে। এ ছাড়া ঢাকা-কুমিল্লা গোলাবাড়ি সীমান্ত দিয়ে পাচারে তৎপর আরেকটি দল। র‌্যাব বলছে, বাংলাদেশের মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যদের সঙ্গে ভারতীয় দালালচক্রের সখ্যতার কারণে পাচার বেড়েছে। এরইমধ্যে ভারতীয় বেশ কয়েকজন দালাল সম্পর্কে তথ্য পেয়েছে র‌্যাব। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এদের তালিকা ভারতে পাঠানো হবে।
অভিযানে পাচারকারীদের কেউ গ্রেফতার হলে কিছুদিন পাচার বন্ধ রাখে সিন্ডিকেট। এরপর ফের সক্রিয় হয় ওরা। যারা পাচারের শিকার হতে চলেছেন, তারা বা তাদের পরিবারের সদস্যরা যদি কোনোভাবে বিষয়টি আঁচ করতে পারেন, তবে তাৎক্ষণিক নিকটস্থ র‌্যাব কার্যালয়ে যেন অবহিত করেন, এমন অনুরোধ জানিয়েছেন র‌্যাব কর্মকর্তারা। র‌্যাব আরও জানায়, বিদেশে চাকরির প্রলোভন কিংবা বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের প্রলোভন দেখিয়েও আজকাল মানুষকে প্রলুব্ধ করছে পাচারকারীরা। প্রশিক্ষণের কথা বলেও অনেককে ফাঁদে ফেলা হচ্ছে। বিশ্বাস অর্জনের জন্য তারা ভিকটিমকে রাজধানীতে এনে তাদের নিজস্ব সেইফ হাউসেও রাখছে। সেখানে কাউকে এক-দুই মাস বা পাঁচ মাসও আটকে রাখা হচ্ছে। কেউ প্রতিবাদ করলে বা বেরিয়ে যেতে চাইলে চালানো হয় নির্যাতন। র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, মানবপাচারকারী চক্রের বিষয়ে যখনই আমরা তথ্য পাচ্ছি অভিযান চালাচ্ছি। র‌্যাবের সব ব্যাটালিয়ন তৎপর। সীমান্তের দায়িত্বে থাকা বিজিবি ও পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে তথ্য আদান প্রদানের মাধ্যমে আমরা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, গত শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর মিরপুর, উত্তরা, তেজগাঁও ও চুয়াডাঙ্গা থেকে ২৩ ভিকটিমকে উদ্ধার করেছি। যারা পাচার হতে যাচ্ছিল। পাচারে জড়িত ১১ জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি।