চিকিৎসকরা পেলেও প্রণোদনা পাননি নার্সরা

0

দুলাল আবদুল্লাহ॥ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ডেডিকেটেড ইউনিটে দায়িত্ব পালনকারী নার্সদের প্রণোদনা দেওয়ার জন্য দুই ধাপে তালিকা পাঠানো হয়েছিল। নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতরে দুবার তালিকা পাঠানোর পরও এখন পর্যন্ত সরকার ঘোষিত প্রণোদনা পাননি নার্সরা। দীর্ঘদিনেও প্রণোদনা না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা। তবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের আওতাধীন প্রথম ধাপে পাঠানো তালিকাভুক্ত চিকিৎসকরা প্রণোদনা পেয়েছেন। এর মধ্যে বাদ পড়েছেন করোনা ডেডিকেটেড ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালনকারী স্টাফরা। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ডেডিকেটেড করোনা ইউনিটে দায়িত্ব পালনকারী নার্সের সংখ্যা ৮৬৫ জন। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ২০২০ সালে ৫৬৫ জনের তালিকা পাঠানো হয়েছিল নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতরে। ২০২১ সালে আরও ৩০০ জন করোনা ডেডিকেটেড ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালনকারী নার্সের তালিকা পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্তম কেউ প্রণোদনা পাননি। অথচ করোনা ডেডিকেটেড ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালনকারী নার্সদের দুই মাসের বেতনের (বেসিক) সমপরিমাণ প্রণোদনা দেওয়ার কথা।
শুধু প্রণোদনা নয়, করোনা ডেডিকেটেড ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালনকারী নার্সদের তিন শর্তে দৈনিক যে ভাতা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল, তাও দেওয়া হয়নি। তবে প্রথম ধাপে ২০২০ সালে পাঠানো তালিকার ২৮০ চিকিৎসক প্রণোদনা পেয়েছেন। দ্বিতীয় ধাপে পাঠানো ৬৯ চিকিৎসক এখনও প্রণোদনা পাননি। হাসপাতালের ডেপুটি নার্সিং সুপারিনটেনডেন্ট সুফিয়া খাতুন বলেন, নার্সরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা ডেডিকেটেড ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন করেছেন। করোনাকালে সরকার ঘোষিত প্রণোদনার জন্য এক হাজার ২০০ নার্সের মধ্যে ডেডিকেটেড ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালনকারী ৫৬৫ জনের তালিকা দুই ধাপে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ প্রণোদনা পাননি। অনেকে আমাকে বারবার জিজ্ঞাসা করছেন, প্রণোদনার অর্থ কবে পাবেন। বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহাদাতুন নূর লাকি বলেন, করোনাকালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নার্সরা সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করেছেন। অনেকে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এখনও অনেকে অসুস্থতা কাটিয়ে উঠতে পারেননি। এসব নার্সের জন্য প্রণোদনা ঘোষণা করেছিল সরকার। কিন্তু অনেক আগে তালিকা পাঠানো হলেও এখন পর্যন্ত রাজশাহী মেডিক্যালের নার্সরা প্রণোদনা পাননি। নার্সরা আমাদের কাছে বারবার জানতে চাচ্ছেন, কবে তাদের প্রণোদনা দেওয়া হবে। অথচ এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে আমাদের কিছুই জানানো হয়নি। রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, নার্সদের প্রণোদনার অর্থের বিষয়ে যোগাযোগ করেছি। চিকিৎসকদের প্রথম ধাপে পাঠানো তালিকার সবাই প্রণোদনা পেয়েছেন। কিন্তু নার্সদের আসেনি। আসলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীনে যারা আছেন, তারাই পেয়েছেন প্রণোদনা। কিন্তু নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতরের অধীনে থাকা নার্সরা পাননি। আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রণোদনা পাবেন নার্সরা। জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার বলেন, আমি আগে যেখানে ছিলাম, সেখানকার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক-নার্সদের প্রণোদনার জন্য তালিকা পাঠিয়েছিলাম। একইভাবে রাজশাহী থেকেও আগের সিভিল সার্জন চিকিৎসক-নার্সদের তালিকা পাঠিয়ে ছিলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক-নার্সরা প্রণোদনা পাননি। আমার জানামতে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক-নার্স এই প্রণোদনা হয়তো পাবেন না। তবে তারাও করোনার চিকিৎসা দিয়েছেন। এই বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যে সিদ্ধান্ত দেবে, সেটাই আমাদের মানতে হবে। তবে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সরা প্রণোদনা পাবেন।