সিনহা হত্যা: বিচারক তামান্না ফারাহকে টানা ৭ ঘণ্টা জেরা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ পুলিশের গুলিতে নিহত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার সপ্তম দফায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১৫, ১৬ ও ১৭ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত। বিচারকার্যের ষষ্ঠ দফার শেষ দিনে দুজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের একজনের সাক্ষ্য ও জেরা সম্পন্ন হলেও অন্যজনের জেরা বাকি রেখেই পরবর্তী দিন ধার্য করে আদালত মুলতবি ঘোষণা করা হয়েছে। অন্যদিকে আসামিদের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া বিচারক তামান্না ফারাহকে টানা সাত ঘণ্টা জেরা করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। বুধবার (২৭ অক্টোবর) সকাল সোয়া ১০টার দিকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলে আদালতের কার্যক্রম। সোয়া ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত টানা সাত ঘণ্টা কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহকে জেরা করেন আসামি ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতের আইনজীবীরা। আলোচিত এ হত্যা মামলার আসামি রাজিব হোসেনসহ কয়েকজন আসামির ১৬৪ ধারার জবানবন্দি রেকর্ড করেছিলেন তামান্না ফারাহ।
বিচারকার্যের ষষ্ঠ দফার শেষ দিন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন অন্য সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. দেলোয়ার হোসেন। তবে এ বিচারককে জেরাকালীন সন্ধ্যা ৭টায় আদালত মুলতবি ঘোষণা করেন জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল। পরবর্তী বিচারকার্যের প্রথম দিন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দেলোয়ার হোসেনের বাকি জেরা দিয়ে কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছেন জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ফরিদুল আলম।
ম্যাজিস্ট্রেট মো. দেলোয়ার হোসেন সিনহা হত্যার অন্যতম আসামি আবদুল্লাহ আল মামুন, উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহজাহান আলী এবং ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলীর ১৬৪ ধারার জবানবন্দি রেকর্ড করেছিলেন। পিপি ফরিদুল আলম বলেন, সাক্ষ্যগ্রহণের ষষ্ঠ দফার শেষ দিনে দুজন বিচারকসহ ছয়জন সাক্ষীর হাজিরা দেওয়া হয়েছিল। তাদের মধ্যে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহর সাক্ষ্য ও জেরা শেষ হয়েছে। অন্য সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. দেলোয়ার হোসেন সাক্ষ্য দিলেও জেরা মুলতবি রয়েছে। এসময় এ দুই বিচারক আসামিদের ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদালতে উপস্থাপন করেন। আদালত আগামী মাসের ১৫, ১৬ ও ১৭ তারিখ পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন বলে জানান পিপি। চাঞ্চল্যকর এ মামলায় মোট ৮৩ জন সাক্ষীর মাঝে ষষ্ঠ দফার শেষ দিন পর্যন্ত ৫৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে গত বছরের ৩১ জুলাই রাতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর সিনহা। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি (টেকনাফে দুটি, রামুতে একটি) মামলা করে। ঘটনার গত ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে প্রদীপ কুমার দাশ, লিয়াকত আলীসহ নয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন মেজর সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। আলোচিত এ মামলায় গত বছর ১৩ ডিসেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা ও র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের তৎকালীন দায়িত্বরত সহকারী পুলিশ সুপার খাইরুল ইসলাম ওসি প্রদীপসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। চলতি বছরের ২৭ জুন আদালত ১৫ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এতে ৮৩ জনকে সাক্ষী করা হয়।