জোর করে স্বীকারোক্তি: তদন্ত কর্মকর্তাকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বদলি

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বগুড়ায় ছোট ভাইকে হত্যার ঘটনায় ১২ বছর বয়সী শিশু ও আপন বড় ভাইয়ের কাছ থেকে ‘জোর করে’ স্বীকারোক্তি নেওয়ার ঘটনায় সারিয়াকান্দি থানার সাবেক উপ-পরিদর্শক নয়ন কুমারকে (পরিদর্শক সিআইডি, নাটোর) কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বদলি করা হয়েছে। একইসঙ্গে, তাকে কোনো মামলার তদন্তকাজ (দায়িত্ব) দেওয়া হবে না বলেও জানানো হয়েছে হাইকোর্টকে। এর আগে তাকে বাংলাদেশ পুলিশের (আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন) এপিবিএন শাখায় বদলি করা হয়েছিল।
এদিকে সাবেক তদন্ত কর্মকর্তার পক্ষে আইনি লড়াইয়ের জন্য অ্যাডভোকেট মো. মনিরুজ্জামানকে নতুন করে আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছে। এ অবস্থায় আদালতের কাছে সময় চাওয়ার প্রেক্ষিতে মামলার শুনানির জন্য আগামী ২১ নভেম্বর পরবর্তী দিন ঠিক করেছেন হাইকোর্ট। সোমবার (২৫ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আজ আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী। বিষয়টি জাগো নিউজেকে নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী। এর আগে বগুড়ায় ছোট ভাইকে হত্যায় ১২ বছর বয়সী বড় ভাইয়ের কাছ থেকে ‘জোর করে’ স্বীকারোক্তি নেওয়ার বিষয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিয়ে হাইকোর্টে ক্ষমা চান সারিয়াকান্দি থানার সাবেক উপ-পরিদর্শক নয়ন কুমার। তিনি মামলার সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে গত ৬ সেপ্টেম্বর নির্ধারিত দিনে হাইকোর্টে নয়ন কুমারকে সশরীরে উপস্থিত ছিলেন। একইসঙ্গে অপর তদন্ত কর্মকর্তাকে ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকতে বলেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় বিষয়টি শুনানির জন্যে আসে। এর আগে গত ২৯ জুন এ বিষয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে সারিয়াকান্দি থানার সাবেক উপ-পরিদর্শক নয়ন কুমারকে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। অপর তদন্ত কর্মকর্তাকেও তলব করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় ২২ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টায় নয়ন কুমার আদালতে হাজির হন। লিখিত ব্যাখ্যায় তিনি ক্ষমাপ্রার্থনা করেন। জোর করে ১২ বছর বয়সী শিশুর স্বীকারোক্তি নেওয়ার বিষয়ে গত ১১ জুন একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এটি যুক্ত করে বগুড়ার আদালতে থাকা ওই হত্যা মামলার যথার্থতা ও আইনি দিক পর্যালোচনায় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ আইনজীবী ২০ জুন ওই আবেদন করেন, যা ২১ জুন শুনানি হয়। সেদিন আদালত ২৯ জুন শুনানির জন্য রাখেন। ওইদিন ওই দুই তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করে আদেশ দেন হাইকোর্ট। পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সাল থেকে ছোট ভাইকে হত্যার দায় নিয়ে ঘুরতে হচ্ছে ১২ বছর বয়সী বড় ভাইকে। সে বছর ২৫ আগস্ট বগুড়ার কাটাখালি গ্রামের একটি পাটক্ষেত থেকে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে পুলিশ বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় তার বড় ভাইকে। জোর করে হত্যার স্বীকারোক্তিও নেওয়া হয়। এ মামলায় এখন বাড়িছাড়া পুরো পরিবার। এদিকে সন্তান হত্যা এবং আরেক সন্তানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার অভিযোগ থেকে রক্ষা পেতে কোথাও সহায়তা না পেয়ে দিশাহারা পরিবারটি।