রশিদ-মুজিবে ৬০ রানেই শেষ স্কটিশরা, আফগানদের উড়ন্ত সূচনা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ হাতের কব্জির মোচড়, তাতেই বল ঘোরে লাটিমের মত। একজন অফ স্পিনার, আরেকজন লেগ স্পিনার। প্রথমজন মুজিব-উর রহমান এবং পরেরজন রশিদ খান। দু’জনের আলাদা পরিচয় দেয়ার দরকার নেই। টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে সবচেয়ে বিধ্বংসী বোলিং জুটি। যাদের বলের মায়াবী ঘূর্ণি কতটা ভয়ঙ্কর আজ তা হাড়ে হাড়ে টের পেলো স্কটল্যান্ড। রশিদ-মুজিবের ঘূর্ণি তোপে পড়ে মাত্র ৬০ রানেই অলআউট হয়ে গেছে স্কটল্যান্ড। ফলে ১৩০ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় দিয়ে এবারের বিশ্বকাপ শুরু করলো আফগানিস্তান। আফগানিস্তানের ছুঁড়ে দেয়া ১৯১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে স্কটল্যান্ড খেলতে পেরেছে কেবল ১০.২ ওভার। পুরো ৯.৪ ওভার বাকি রয়ে গেছে। এর মধ্যেই শুরু থেকে মুজিব-উর রহমানের মায়াবী ঘূর্ণির ফাঁদে পড়ে একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে স্কটিশরা। মাঝপথে এসে উইকেট শিকারে যোগ দিলেন রশিদ খান। তার করা মাত্র ২.২ ওভারেই ৪টি উইকেটের পতন। ১১তম ওভারের প্রথম দুই বলেই পরপর দুই উইকেটের পতন ঘটলো রশিদের বলে। পরের ম্যাচের নিজের করা প্রথম ওভারের প্রথম বলেই উইকেট পেলে হ্যাটট্রিক হয়ে যাবে রশিদের।
বিশ্বকাপে খেলতে আসার আগেই বেশ অনিশ্চয়তায় ছিল আফগানরা। কারণ, তাদের দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি। তালিবানের ক্ষমতা দখলের পর অনেকেই শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, হয়তো এবার আর আফগানিস্তান বিশ্বকাপে অংশ নিতে পারবে না। এরপর বিশ্বকাপের দল যখন ঘোষণা করা হলো, তখন দলটির অধিনায়ক রশিদ খান পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তিনি দলে থাকবেন কিন্তু নেতৃত্ব দেবেন না। পরিবর্তে দায়িত্ব দেয়া হয় বুড়ো মোহাম্মদ নবির ঘাড়ে। এরপর সব বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে আফগানরা এলো খেলতে এবং প্রথম ম্যাচেই বিশাল বাজিমাত করে দেখালো। সে সঙ্গে নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে, টি-টোয়েন্টি সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়ের রেকর্ডও গড়লো তারা। এর আগে তাদের সবচেয়ে বড় জয় ছিল ১০৬ রানের।
টস জিতে ব্যাট করতে নামার পর হযরতুল্লাহ জাজাই, রহমানুল্লাহ গুরবাজ এবং নজিবুল্লাহ জাদরানদের তাণ্ডবে একের পর এক বল আছড়ে পড়তে থাকে গ্যালারিতে। শেষ পর্যন্ত এবারের বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ স্কোর গড়েন আফগান ব্যাটাররা। ৪ উইকেট হারিয়ে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৯০ রান। ১৯১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে জর্জ মানসে এবং কাইল কোয়েৎজার মিলে শুরুটা একটু ভালোই করেছিলেন। ৩.২ ওভারে ২৮ রানের জুটি গড়েন দু’জন। এরপরই শুরু হয় মুজিব-উর রহমানের মায়াবী জাদু। তার বলে একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে স্কটিশরা। ওই এক ওভারেই তিন উইকেট হারায় আফগানিস্তান। কাইল কোয়েৎজার, কালাম ম্যাকলেয়ড এবং রিচি বেরিংটন ফিরে যান মুজিবের বলে। নাভিন উল হকের বলে উইকেট দিয়ে ফিরে যান ম্যাথ্যু ক্রস। নিজের পরের ওভারেই মুজিব তুলে নিলেন ওপেনার জর্জ মানসের উইকেট। যিনি সর্বোচ্চ ২৫ রান করেন। এরপর দৃশ্যপটে চলে আসেন রশিদ খান। বল করতে এসেই তুলে নিলেন মাইকেল লিস্কের উইকেট। ক্রিস গ্রিভসকেও সাজঘরে ফেরত পাঠান রশিদ। মুজিব-উর রহমান নিজের শেষ ওভারে বল করতে এসে তুলে নিলেন ফাইফার। অর্থ্যাৎ, তার পঞ্চম শিকার মার্ক ওয়াট। ১১তম ওভাররে প্রথম দুই বলে জস ডেভি এবং ব্রাড হুইলের উইকেট রশিদ খান তুলে নিতেই শেষ হয়ে যায় স্কটল্যান্ডের ইনিংস। ৪ ওভারে ২০ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন মুজিব-উর রহমান। ২.২ ওভার বল করে ৯ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন রশিদ খান এবং বাকি উইকেটটি নেন নাভিন উল হক।