খুলনার ফুটপাথের মালিকানা দখলদারদের

0

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা॥ মহানগরী খুলনার ব্যস্ততম এলাকাগুলোতে ফুটপাথের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া দায়। প্রতিদিন হাজারো পথচারী পায়ে হেঁটে পার হন, এমন ফুটপাথগুলো চলে গেছে দখলদারদের কবলে। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে দূর্ঘটনা। উচ্ছেদ অভিযানের খবর পেলে ফাঁকা হয়ে যায় ফুটপাথ। অভিযান শেষ হতেই পুরানো চেহারায়।
গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অফিস আদালত, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক বীমা থাকার কারণে নগরীর কয়েকটি এলাকায় সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছাড়া বাকি দিনগুলোতে জনবহুল ও কর্মব্যস্ত থাকে। বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের পাশ্পাাশি বিপুল সংখ্যক মানুষ পায়ে হেটে এখানে চলাচল করেন। মানুষের নির্বিঘেœ চলার জন্য নগরীর অধিকাংশ এলাকার ফুটপাথ নতুন করে নির্মাণসহ টাইলস আবৃত করা হয়েছে। সদ্যনির্মিত এই সব ফুটপাথের ব্যস্ততম স্থানগুলো ইতিমধ্যেই দখল হয়ে গেছে। সেই সাথে পুরানো দখলদাররাও জাকিয়ে বসেছেন। জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসের এক সেমিনারে খুলনার মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ফুটপাথ দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারী উচ্চারণ করেছেন। সড়ক দূর্ঘটনার জন্য এইসব দখলদারদেরও দায়ি করেন তিনি।


সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর শহীদ হাদিস পার্ক থেকে পিকচার প্যালেস মোড়, স্যার ইকবাল রোড, কে ডি ঘোষ রোড, হেলাতলা, বড় বাজার, খানজাহান আলী রোড ও ফেরীঘাট মোড়, স্টেশন রোড, শিববাড়ি মোড় থেকে সোনাডাঙ্গা বাসটার্মিনাল, বয়রা বাজার, দৌলতপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে মহসিন মোড় পর্যন্ত সমস্ত ফুটপাথ ব্যবসায়ীদের দখলে। কোথাও রাস্তার পাশের দোকানদার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালামাল এনে রেখেছেন ফুটপাথে। বাই সাইকেল, প্লাস্টিকের আসবাবপত্র, রড, সিমেন্ট, পাইপ, ইট বালু, কাপড় চোপড়, ইত্যাদি সামগ্রী রয়েছে। অনেকেই ফুটপাথে কাঠের স্থায়ী কাঠামো বানিয়ে সেখানে বসে ফলমুল বিক্রি করছেন। বিক্রি হচ্ছে সিজনাল কাপড় চোপড় সহ অন্যান্য সামগ্রী। পান সিগারেটের দোকান। ক্যাপ, জুতা-স্যান্ডেল, চশমার তাক ঝোলানো রয়েছে। দখলদারদের কারণে সংকুচিত হয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে ফুটপাথ। ফলে পথাচারীরা বাধ্য হচ্ছেন রাস্তায় নামতে। নগরীর ডাকবাংলা এলাকার একজন হকার নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এ রাস্তার অনেক দোকানদার টাকার বিনিময়ে তার দোকানের সামনে বসতে দেয়। পুলিশ বা খুলনা সিটি কর্পোরেশনের অভিযানের আগে তাদেরকে সংকেত দেওয়া হয়। সংকেত পেলে তারা ফুটপথ থেকে মালসামানা গুটিয়ে সরে পড়েন। অভিযান শেষ হতেই আবারও সব আগের মতো হয়ে যায়। রাজনৈতিক প্রভাবশালী একটি মহলকে নিয়মিত বখরা দিতে হয়। দৌলতপুর বেবীস্ট্যান্ডের হকার দেলোয়ার জানান, দীর্ঘ ১০ বছর সময় ধরে এখানে ব্যবসা করছেন। মৌসুমী ফলের ব্যবসা করেন তিনি। প্রতিদিন সিটি কর্পোরেশনের নাম করে এক ব্যক্তি ফুটপাথের সব ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১০ টাকা চাঁদা আদায় করেন। দৌলতপুরের ফুটপাথে প্রায় দেড়শ’র মতো দোকান রয়েছে বলে তিনি জানান। পান সিগারেটের বিক্রেতা রহিম শেখ জানান, স্থানীয় কিছু নেতাকে ম্যানেজ করে এখানে ব্যবসা করছেন। চলাচলের পথ বন্ধ করে ব্যবসা করছেন কেন জিজ্ঞাসা করলে বলেন, পাশ দিয়ে পথচারীরা চলে যাচ্ছে, কোন অসুবিধা হচ্ছেনা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন জানালেন, ফুটপাথ দিয়ে চলার কোন সুযোগ নেই। এখানে বিএল কলেজ, ডে-নাইট কলেজ, মহসিন স্কুল, বিনাপানি স্কুলসহ অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ অফিস প্রতিষ্ঠান আছে। হাজার হাজার মানুষের যাতায়াত। কিন্ত রাস্তা দিয়ে চলতে হয় আমাদের। সংকীর্ণ রাস্তায় বিভিন্ন ধরনের অসংখ্য যানবাহন চলে। প্রতিদিন কোন না কোন দূর্ঘটনা ঘটে। কিন্ত দখল উচ্ছেদে কোন পদক্ষেপ নেই। নামিদামি হোটেল রেস্টুরেন্ট হয়েছে। ফুটপাথের ওপর তাদের চুলায় দিনভর রান্না হচ্ছে। যে কোন সময় বড় দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। খুলনা সিটি কর্পোরেশনের এস্টেট অফিসার মো: নুরুজ্জামান তালুকদার জানান, অবৈধভাবে দলদারদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হয়। কিন্ত অভিযান শেষ হলেই আবার তারা দখল করে সেখানে ব্যবসা করতে বসে। ফুটপাথ দখল করে যারা ব্যবসা করছেন তাদের তালিকা প্রস্তত করা হয়েছে। এবার তালিকা ধরে অভিযান চালানো হবে। কেসিসির নামে ফুটপাথের দোকানদারদের কাছ থেকে কারা চাঁদা নেয় তিনি জানেন না। #
খুলনায় শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসের প্রস্তাবিত স্থান পরিদর্শন
স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা দেশের পঞ্চম মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করছে শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়। যার সম্ভাব্যতা যাচাই, সিন্ডিকেট সদস্য মনোনয়ন এবং বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন কর্তৃক প্রাথমিক বাজেট বরাদ্দ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এখন এটি মাঠ পর্যায়ে পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়নের রোডম্যাপ নিয়ে কাজ চলছে।
খুলনায় শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসের প্রস্তাবিত স্থান পরিদর্শন উপলক্ষ্যে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়। সোমবার দুপুরে নগরীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত ব্রিফিংয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য ডাঃ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খসড়া লোগো, প্রস্তাবিত স্থানের সাইট ম্যাপ ও স্থাপনা নির্মাণ বিষয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে আমাদের একটি প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। জমি অধিগ্রহণের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করে বিশ^বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালু করার আহবান জানান সিটি মেয়র। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মোঃ আলী নূর বলেন, সরকার দ্রুততার সাথে শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় আইন পাশ করেছে এবং এর উপাচার্য নিয়োগ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। চিকিৎসাক্ষেত্রে উন্নতমান, গবেষণার সুযোগ ও উন্নত প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (চিকিৎসা শিক্ষা অনুবিভাগ) মোঃ শাখাওয়াত হোসেন, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ এএইচএম এনায়েত হোসেন, খুলনার জেলা প্রশাসক মোঃ মনিরুজ্জামান তালুুকদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পরে অতিথিরা শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসের প্রস্তাবিত স্থান পরিদর্শন করেন।