লাভে ছুটছে বিআরটিসি

0

সালাহ উদ্দিন জসিম॥ লাভের মুখ দেখছে রাষ্ট্রায়ত্ত পরিবহন সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি)। দীর্ঘদিন ব্যয় আর লোকসানে ধুঁকতে থাকা বিআরটিসি ঘুরে দাঁড়িয়ে এখন লাভে রেকর্ড করেছে। এ বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে সংস্থাটি তার আয় থেকে পরিচালন ব্যয় মিটিয়ে লাভ করেছে ২৩ কোটি ৬৫ লাখ ১৫ হাজার টাকা। এটি বিআরটিসির ইতিহাসে রেকর্ড বলে জানাচ্ছেন করপোরেশনের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র মতে, এ বছরের প্রথম নয় মাসে বিআরটিসির পরিচালন ব্যয়ের চেয়ে আয় বেশি। আলোচ্য সময়ের আয়, ব্যয় ও লাভের পরিসংখ্যান থেকে দেখা গেছে, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে বাস চলাচল করায় বেশি লাভ করেছে বিআরটিসি। জুলাই বাদ দিয়ে পরের পাঁচ মাস তথা এপ্রিল, মে, জুন, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরেও তুলনামূলক লাভেই ছিল সংস্থাটি। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে কেবল জুলাই মাসে আগের মতো লোকসান গুনতে হয়েছে বিআরটিসিকে। বিআরটিসির ইতিহাসে এটা মনে হয় রেকর্ড। ২০১৮ সালের দিকে যখন নতুন ১১শ’ গাড়ি এসেছে, তখনো এত আয় হয়নি। অথচ তখন গাড়িগুলো একেবারেই নতুন। এখন তো সেই গাড়ি মেরামত করা লাগে, তারপরও আমরা রেকর্ড পরিমাণ আয় করেছি।
হিসাব অনুসারে, জানুয়ারিতে ৩৩.৪১ কোটি টাকা, ফেব্রুয়ারিতে ৩২.৯৯ কোটি, মার্চে ৩৬.৮০ কোটি, এপ্রিলে ১৩.৫১ কোটি, মে মাসে ১৪.৪৭ কোটি, জুনে ২৪.২১ কোটি টাকা আয় করেছে বিআরটিসি। জুলাইতেও তাদের আয় ছিল ১৯.৯৩ কোটি টাকা। আর আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে এ অংক ছিল যথাক্রমে ৩০.৫৯ কোটি ও ৩৪ কোটি টাকা। এসময়ে তাদের ব্যয় হয়েছে জানুয়ারিতে ৩০.৫১ কোটি, ফেব্রুয়ারিতে ২৯.৫৮ কোটি, মার্চে ৩২.৪৪ কোটি, এপ্রিলে ১১.০১ কোটি, মে মাসে ১২.৭২ কোটি, জুনে ২১.৮০ কোটি টাকা, জুলাইয়ে ২৩.২৮ কোটি, আগস্টে ২৭.৯৩ কোটি এবং সেপ্টেম্বরে ৩০.৩৪ কোটি টাকা। আয় থেকে ব্যয় বিয়োগ করে দেখা যাচ্ছে, বিএআরটিসির জানুয়ারিতে লাভ হয়েছে ২.৯০ কোটি, ফেব্রুয়ারিতে ৩.৪১ কোটি, মার্চে ৪.৩৬ কোটি, এপ্রিলে ২.৫০ কোটি, মে মাসে ১.৭৫ কোটি এবং জুনে ২.৪১ কোটি টাকা। তবে জুলাই মাসে ৩.৩৪ কোটি টাকা লোকসান করে প্রতিষ্ঠানটি। পরে আবার আগস্টে ২.৬৬ কোটি ও সেপ্টেম্বরে ৩.৬৫ কোটি টাকা লাভ করেছে বিআরটিসি। বিআরটিসির এই ধারা অব্যাহত থাকলে জনগণের প্রতি সরকারের প্রতিশ্রুতি পূরণ হবে। সরকার ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতি জনগণের আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে। বিআরটিসির চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) মো. তাজুল ইসলাম বলেন, বিআরটিসির ইতিহাসে এটা মনে হয় রেকর্ড। ২০১৮ সালের দিকে যখন নতুন ১১শ’ গাড়ি এসেছে, তখনো এত আয় হয়নি। অথচ তখন গাড়িগুলো একেবারেই নতুন। এখন তো সেই গাড়ি মেরামত করা লাগে, তারপরও আমরা রেকর্ড পরিমাণ আয় করেছি। সংস্থাটির জেনারেল ম্যানেজার (হিসাব) ও সরকারের উপ-সচিব আমজাদ হোসেন বলেন, বিআরটিসির এই ধারা অব্যাহত থাকলে জনগণের প্রতি সরকারের প্রতিশ্রুতি পূরণ হবে। সরকার ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতি জনগণের আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে।