১৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যশোরে মামলা : ভুয়া প্রতিষ্ঠান এসপিসি ওয়ার্ল্ডে যুবক প্রতারিত,আটক ১

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেস লিমিটেড নামে অনলাইনভিত্তিক একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠানের এজেন্ট দাবিদার রাসেল হোসেনকে গত মঙ্গলবার আটক করেছেন র‌্যাব সদস্যরা। যশোরের ইমামুল ইসলাম নামে এক যুবককে ওই প্রতিষ্ঠানে টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারণার মাধ্যমে তা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে তাকে আটক করা হয়। আটক রাসেল হোসেন যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে। অপরদিকে ভুক্তভোগী ইমামুল ইসলাম যশোর সদর উপজেলার করিচিয়া গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে। তিনি প্রতারণার অভিযোগ এনে আটক রাসেল হোসেনসহ এসপিসি ওয়ার্ল্ডের ১৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গত মঙ্গলবার কোতয়ালি থানায় মামলা করেছেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন, কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও চাঁদপুরের দক্ষিণ মতলব উপজেলার আঁচলচিলা গ্রামের আল আমিন প্রধান (৩০), তার স্ত্রী কোম্পানির ডাইরেক্টর শারমিন আক্তার (২৭), ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর নোয়াখালী সদর উপজেলার পূর্ব শোলকিয়া উত্তর ওয়াপদা পাড়ার মোহাম্মদ ইসহাক (৩১), ডাইরেক্টর লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চরবংশী গ্রামের মোজাম্মেল আদনান (২৭), মার্কেটিং ডিরেক্টর অর্জুন চ্যাটার্জী (৪০), ম্যানেজার অ্যাডমিন চাঁদপুরের দক্ষিণ মতলব উপজেলার নন্দলালপুর গ্রামের হেলাল মিয়া (২৭), এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ওমর ফারুক (৩৯), এক্সিকিউটিভ অফিসার মোহাম্মদ হানিফ (৩৬), এক্সিকিউটিভ অফিসার মোহম্মদ জসীম (৩৩), অ্যাকাউন্টস ম্যানেজার চাঁদপুরের দক্ষিণ মতলব উপজেলার আঁচলচিলা গ্রামের মানিক মিয়া (৩৫), প্রোডাক্ট ম্যানেজার ঢাকার খিলগাঁও থানার দক্ষিণ বনশ্রী গোড়ান প্রোজেক্ট এলাকার ওবায়দুল রহমানের বাড়ির ভাড়াটিয়া তানভীর আহম্মেদ (৩৬), সহকারী প্রোডাক্ট ম্যানেজার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মিজমিজি মধ্যপাড়ার লিয়াকত উকিলের বাড়ির ভাড়াটিয়া পাভল সরকার (২৯), অফিস সহকারী ঢাকার তেজগাঁও থানার দক্ষিণ কুনিপাড়ার নাদিম মোহাম্মদ ইয়াছিন উল্লাহ (২৯)। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২০/২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় ইমামুল উল্লেখ করেছেন, চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি সদর উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়নের বাগেরহাট বাজারের একটি চায়ের দোকানে বসে ফেসবুক দেখার সময় এসপিসি ওয়ার্ল্ড নামে একটি ভেরিফাইড পেজ দেখতে পান। তিনি তার পরিচিত আসামি রাসেলের সাথে এই বিষয়ে যোগাযোগ করেন। রাসেল তাকে জানান, তিনি এসপিসি ওয়ার্ল্ডের একজন এজেন্ট। অ্যাপসের মাধ্যমে এই পেজটি ইনস্টল করে তাতে বিনিয়োগ করা যায়। এই পেজের একটি বিজ্ঞাপন দেখলে প্রতিটিতে ১০ টাকা করে মাসে ৩শ টাকা পাওয়া যাবে। তার আগে প্রতিটি আইডির জন্য ১২শ টাকা করে দিতে হবে। রসেলের কথায় বিশ্বাস করে ইমামুল তাকে ৩৬ হাজার ২৫০ টাকা দিয়ে ৫১টি আইডি কেনেন। কিন্তু টাকা ক্যাশআউটের জন্য একজন এজেন্টের দরকার হয়। ফলে ইমামুল তার আইডির টাকা এজেন্ট রাসেলের মাধ্যমে ক্যাশআউটের জন্য কথাবার্তা ফাইনাল করেন। ইমামুলের দেখাদেখি ওই এলাকার আরও ৭জন রাসেলের মাধ্যমে টাকা বিনিয়োগ করেন এবং অ্যাপসে লগইন করে বিজ্ঞাপন দেখতে থাকেন। ৬ মাস বিজ্ঞাপন দেখে অ্যাপসের ওয়ালেটে ৫৪ হাজার টাকা জমা হয় ইমামুলের। ওই টাকা ক্যাশআউটের জন্য রাসেলের সাথে তিনি যোগাযোগ করেন। কিন্তু রাসেল মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি। পরে তিনিসহ বন্ধুরা যোগাযোগ করে জানতে পারেন, এটি একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠান। রাসেলসহ ২০/২৫ জন এর সাথে জড়িত আছেন। সূত্র জানায়, গত ২৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে রাসেল যশোর সদরের বাগেরহাট বাজারের একটি চায়ের দোকানে আসেন। এ সময় ইমামুলসহ অন্যরা তাকে ধরে র‌্যাবের হাতে তুলে দেন। পরে কোতয়ালি থানায় মামলা করেন ইমামুল।