সুন্দরভাবে ক্ষমতা ছাড়লে জন-অসন্তোষ নাও থাকতে পারে: গয়েশ্বর রায়

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, সরকার যদি সুন্দরভাবে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ায়, তবে তাদের প্রতি মানুষের যে অসন্তোষমূলক মনোভাব, সেটা নাও থাকতে পারে। সরকারের আচরণে আমাদের যে দুষ্টু মনোভাব তৈরি হয়েছে, পরবর্তীতে এর প্রতিফলন নাও ঘটাতে পারি। শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে নির্বাচনের দাবিতে জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম দলের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, “সরকারের উদ্দেশ্যে একটা কথাই বলতে চাই, জোর করে ক্ষমতায় থাকা যায়। কিন্তু ক্ষমতা ছাড়ার পদ্ধতিটা যদি সুন্দর না হয়, তবে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, অনেক কিছু করেছেন। কিন্তু আপনি যদি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে গণতন্ত্রের পথে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের আহ্বান করেন, তাহলে আপনার বিরুদ্ধে ক্ষেপে থাকা মানুষগুলো কিছু সময়ের জন্য হলেও শান্ত হবে। কারণ বাংলাদেশের মানুষ ক্ষমা করতে পারে। বাংলাদেশের মানুষ সহজেই তুষ্ট হয়, আবার দুষ্টও হয়। যার জন্য আমরা লড়াই করছি, সে কাজটা যদি আপনি এগিয়ে দেন, তাহলে আপনার প্রতি আমাদের দুষ্টু মনোভাবটা আর থাকবে না। আমাদের দুষ্টু মনোভাবটা পরবর্তী পর্যায়ে প্রতিফলিত নাও হতে পারে।
বিএনপির এ সিনিয়র নেতা বলেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি নিয়ে কোনো আলোচনা সভার দরকার নাই। যে যেই ব্যানারেই করেন না কেন, আলোচনা একটাই হতে পারে, সেটা হলো- বর্তমান সরকারের পতনের দাবি। কারণ, সকল সমস্যার মূলহোতা বর্তমান সরকারের প্রধান শেখ হাসিনা। এত সমস্যা নিয়ে কথা না বলে, একটা সমস্যা সমাধান যদি আমরা করতে পারি, যদি বর্তমান সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে পারি, তাহলে বাকি সব সমস্যার সমাধান জনগণই করবে। সে কারণেই বলবো, ‘নির্বাচন’ নামক শব্দ নিয়ে আমার মনে হয় কোনো আলোচনার প্রয়োজন নেই। নির্বাচনে যাবো কি যাবো না, এ শব্দগুলোই উচ্চারণের প্রয়োজন নাই। সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, গণতন্ত্রের পূজারি হতে হবে। মানুষকে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। আর মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেয়া হলে পরিণাম অনেক ভয়াবহ হবে। সে ভয়ানক পরিস্থিতির দিকে দেশটাকে ঠেলে না দেওয়া ভালো। প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফর নিয়ে গয়েশ্বর বলেন, দেশ এখনো করোনামুক্ত হয়নি। এমন সময়ে তিনি ১৮৬ জন মানুষ নিয়ে বিদেশ ভ্রমণে গেছেন। কতজন নিয়ে গেছেন সেটা বড় কথা নয়, কত টাকা খরচ করে গেছেন সেটাও বড় কথা নয়। কারণ, সেটার হিসাব পাওয়া যাবে৷ আমার প্রশ্ন হলো- ১৮৬ জন কতো টাকা বিদেশে রাখতে গেছেন, সেটা জানা দরকার। কারণ, স্পেশাল ফ্লাইট। প্রধানমন্ত্রী যেখানে যান, তাদের জন্য ঢাকা এয়ারপোর্টের দরজা খোলা। কেউ কাউকে কিছু জিজ্ঞেস করে না। বিদেশে মুদ্রাপাচারের এটাই তো বড় সুযোগ।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমার জানামতে এরকম অর্ধশত সংগঠন আছে, যারা কোনো না কোনোভাবে বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদলের সঙ্গে জড়িত। তাহলে আমরা খণ্ড খণ্ড দ্বীপ করে ফেললাম কেন। এসব দ্বীপকে একটা দ্বীপপুঞ্জ করতে হবে। অর্থাৎ খণ্ড খণ্ড দল যারা করছেন, যে চিন্তায় করছেন, তাদের চিন্তাটাকে একভাবে প্রবাহিত করার জন্য একসঙ্গে একটু বসতে হবে। এরকম ৫০টা সংগঠন থাকলে এসব সংগঠনের নেতাকর্মীদের একসঙ্গে বসার আহ্বান জানান গয়েশ্বর।